দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনা মোকাবিলায় যে ভাবে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছেন তা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বলে দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের আশা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ১৬ কোটি বাড়িতে গিয়ে দরজা ঠকঠক করে রিপোর্ট তুলে নিয়ে এসেছেন।
১০ কোটি জনসংখ্যার বাংলায় ১৬ কোটি বাড়িতে সমীক্ষা?
নবান্নের অলিন্দে যখন সাংবাদিকদের মনে এই প্রশ্ন ঘুরছে তখন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বিষয়টি পরিষ্কার করেন। এদিন মমতা বলেন, রাজ্যে কমবেশি তিন কোটি পরিবার আছে। এবার আপানাদের মনে হতে পারে ১৬ কোটি বাড়ি হল কী করে। তাহলে বুঝুন, এক একটা বাড়িতে কতবার করে আমার আশার মেয়েরা, স্বাস্থ্যকর্মীরা গিয়েছেন।
তার ফলে যে তথ্য সরকারের কাছে এসেছে তাও এদিন তুলে ধরেন মমতা। তিনি জানান, এই হাউস টু হাউস সার্ভে হওয়ার ফলে অনেকের জ্বর, সর্দি, কাশির তথ্য উঠে আসে। তিনি জানান, বাড়ি বাড়ি সার্ভে করেই প্রায় সাড়ে চার হাজার সারি কেস (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম, তথা তীব্র শ্বাসকষ্টের উপসর্গ) চিহ্নিত করা গিয়েছে। তারপর তাঁদের আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই কাজটা যে ভাবে বাংলা করেছে তা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।
মনে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করোনা মোকাবিলার জন্য গ্লোবাল অ্যাডভাইজারি কমিটি তৈরি করেছিলেন? সেই কমিটির প্রধান তথা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় চৈত্র মাসের তৃতীয় সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে পরামর্শ দিয়েছিলেন, রিপোর্টিং কাঠামোকে ঢেলে সাজতে হবে। অর্থাৎ পাড়া গাঁয়ে কারও একটু হাঁচি কাশি হলেই যেন তাঁর তথ্য স্বাস্থ্যকর্মীরা সংগ্রহ করে সরকারকে দেন। তাতে চিহ্নিত করার কাজ করতে সুবিধা হবে। তারপর রাজ্য সরকার একটি মোবাইল অ্যাপও তৈরি করেছিল। এদিন মুখ্যমন্ত্রী সে কথাই তুলে ধরেন।
তবে বিজেপি এ নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, “আমাদের রাজ্য সভাপতি দিলীপদা তো কবেই বলেছেন, সরকারটা ভূতে চালাচ্ছে। সেরকম ভূত গিয়েই হয়তো সমীক্ষা করেছে। একাধিকবার তো ছেড়ে দিন। সাধারণ মানুষের বাড়ির কথাও নয় বাদ দিলাম। তৃণমূলের নেতারাই বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন না তাঁদের বাড়িতে স্বাস্থ্যকর্মীরা একবারের জন্য সমীক্ষা করতে এসেছিলেন। এই সরকার সব কিছু নিয়ে মিথ্যাচার করে। এটাও তেমনই একটা ডাহা মিথ্যা।”