দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনা ত্রাসে কাবু গোটা বিশ্ব। এই মারণ ভাইরাসকে ঠেকাতে আন্তর্জাতিক মহল কী প্রয়োজনীয় ভূমিকা নিচ্ছে সেই ব্যাপারে মাইক্রোসফট কর্তা বিল গেটসের সঙ্গে জরুরি আলোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভিডিও কনফারেন্সে দু’জনের আলোচনায় উঠে এল একাধিক বিষয়। প্রধানমন্ত্রী জানতে চাইলেন, কোভিড ভ্যাকসিনের গবেষণা ঠিক কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সঙ্কট থেকে মুক্তির উপায়ই বা কী হতে পারে। করোনা ঠেকাতে যে কোনও লড়াই লড়তে ভারত যে প্রস্তুত সেটাও আলোচনায় স্পষ্ট করে দেন মোদী।
কোভিড ভ্যাকসিন তৈরির কাজে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। বিভিন্ন বায়োটেক ও সায়েন্স রিসার্চ ফার্মকে আর্থিক অনুদান দিয়ে সাহায্য করছে বিল গেটসের ফাউন্ডেশন। পেনসিলভানিয়ার বায়োটেক ফার্ম ইনোভিও ফার্মাসিউটিক্যালসকে ইতিমধ্যেই কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গবেষণার জন্য বিরাট অঙ্কের টাকা অনুদান দিয়েছে বিল এবং মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনস।
কোভিড মোকাবিলায় বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টুইট করে তিনি বলেছেন, “বিল গেটসের সঙ্গে কোভিড মোকাবিলা নিয়ে বিস্তারিত ও প্রয়োজনীয় আলোচনা হল। কোভিড রুখতে ভারত কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে সেটাও উঠে আসে আলোচনায়। কোভিড ভ্যাকসিন তৈরির বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে বিল গেটস ফাউন্ডেশনের ভূমিকা প্রশংসনীয়।”
Had an extensive interaction with @BillGates. We discussed issues ranging from India’s efforts to fight Coronavirus, work of the @gatesfoundation in battling COVID-19, role of technology, innovation and producing a vaccine to cure the pandemic. https://t.co/UlxEq72i3L
— Narendra Modi (@narendramodi) May 14, 2020
ভিডিও কনফারেন্সে বিল গেটসকে মোদী জানান, লকডাউন ও সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং খুব ভালভাবেই মেনে চলা সম্ভব হয়েছে। দেশের নানা জায়গায় খুব দ্রুততার সঙ্গে হয়েছে র্যাপিড টেস্টিং। করোনা আক্রান্তদের শনাক্ত করে চিকিৎসার ব্যবস্থাও হয়েছে। কোভিড মোকাবিলায় দেশের বেশ কিছু রাজ্যের ভূমিকা সত্যিই প্রশংসনীয়। উত্তর-পূর্বের কয়েকটি রাজ্যে সংক্রমণ প্রায় নেই বললেই চলে। কিছু রাজ্যকে করোনা-মুক্ত বলে ঘোষণা করে দেওয়াও হয়েছে।
সংক্রমণ রুখতে দেশের চিকিৎসা পদ্ধতি ও ভ্যাকসিনের কথাও উঠে আসে আলোচনায়। মাইক্রোসফট কর্তাকে মোদী জানান, সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের ছয় সংস্থাকে ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিন তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছে। করোনা প্রতিরোধী ড্রাগ নিয়েও উচ্চমানের গবেষণা ও ক্নিনিকাল ট্রায়াল চলছে। দেশের সনাতন আয়ুর্বেদ নিযেও পরীক্ষানিরীক্ষা হচ্ছে। তাছাড়া পরিচ্ছন্নতা, মাস্ক ও পিপিই-র ব্যবহার, করোনা মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা নেওয়া ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরন্তর প্রচেষ্টার কথাও তুলে ধরেন তিনি। করোনা মোকাবিলায় ভারত আর কী কী পদক্ষেপ নিতে পারে সে ব্যাপারে গেটসের পরামর্শও চেয়েছেন মোদী।?
করোনার মোকাবিলায় কেন্দ্র সরকার ‘আরোগ্য সেতু’ অ্যাপ চালু করেছে। করোনা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য মিলছে সেই অ্যাপে। এই ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে ভারতের প্রশংসা করে মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন বিল গেটস। কোভিড নিয়ন্ত্রণে ভারতের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা শোনা গিয়েছিল তাঁর মুখে। সম্প্রতি দু’পক্ষের আলোচনাতেও ফের প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন গেটস। দেশ জুড়ে লকডাউন, আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা এবং কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা, আইসোলেশন, কোয়ারেন্টাইন-সহ গোটা স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে মজবুত করা ও সরকারি একাধিক পদক্ষেপের প্রশংসাও করেন বিল গেটস।