দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ চলতি আর্থিক বছরে সরকার ১২ লক্ষ কোটি টাকা ধার নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। এমনিতেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে বন্ড জমা রেখে সরকার টাকা ধার নেয়। ঠিক ছিল, বাজেটে স্থির ছিল চলতি আর্থিক বছরে সরকারের ঋণ নেওয়ার বহর দাঁড়াবে ৭ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা।
কিন্তু শুক্রবার কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক পৃথক বিবৃতিতে দিয়ে জানিয়ে দিল, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলা করার জন্য সরকারকে এ বার আরও বেশি ঋণ নিতে হবে। তা বেড়ে দাঁড়াবে ১২ লক্ষ কোটি টাকা।
বাজেটে যে হিসাব করা হয়েছিল, তাতে সপ্তাহে ১৯ হাজার থেকে ২১ হাজার কোটি টাকা ধার নেওয়ার কথা ছিল সরকারের। কিন্তু বন্ড জমা রেখে সরকার এখন সপ্তাহে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা ধার নেবে।
সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে এই যে বন্ড জমা রাখে তা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বাজারে নিলাম করে, কিংবা বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে তা দেয়।
আইসিআরএ-র মুখ্য অর্থনীতিক অদিতি নায়ারের মতে, এই সম্ভাবনা অনিবার্যই ছিল। কারণ, লকডাউনের ফলে সরকারের রাজস্ব আদায় তলানিতে ঠেকেছে। ফলে সরকার নিত্য কাজকর্ম চালাবে কী দিয়ে। তাই চলতি আর্থিক বছরে ঋণের বহর বাড়ানো ছাড়া উপায়ন্তর নেই।
দেশে আট সপ্তাহ ধরে লকডাউন চলবে। এর ফলে প্রভূত অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন হচ্ছে। এমনকি রেটিং সংস্থা মুডিজ জানিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি হবে ০ শতাংশ হারে। মানে কোনও বৃদ্ধিই হবে না। এই পূর্বাভাস আসলে ভয়ঙ্কর আগামীর ইঙ্গিতবাহী। কেননা এর অর্থ, কর্মসংস্থানের সুযোগ কমবে, বিপুল ছাঁটাই হতে পারে, উৎপাদন ক্ষেত্র থেকে শুরু করে কোথাও কোনও অগ্রগতি হবে না।
প্রসঙ্গত রাজস্ব আদায়ের ছবি ইতিমধ্যেই খুবই করুণ। মার্চ মাসে জিএসটি আদায় ৭৪ শতাংশ কমে হয়েছে মাত্র ২৮ হাজার কোটি টাকা। এপ্রিল মাসে তা আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রাজ্যগুলির রাজস্ব আদায়ের অবস্থা তথৈ বচ। কেন্দ্র সরকার সামগ্রিক এই পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেয় এখন সেটাই দেখার।