‘ট্রাভেলগ’ (পর্ব-৪)
লিখছেন~ দেবন্বিতা চক্রবর্তী,
পাহাড়ের ধারে সিমলা কালী মন্দিরের পিছন দিকে রেলিং দিয়ে মুখ বাড়িয়ে দেখলাম যে গন্ডোগোল টা শুরু হয়েছিল তার উৎপত্তিস্থল বেশ মজাদার৷ কারন ভারতবর্ষের অতি প্রচীন সেনা বাহিনী সেই যুদ্ধে লিপ্ত। সিমলায় বানরের এত উৎপাত সেটা আগের থেকে জানা ছিল না। সিমলা মন্দির থেকে আমাদের চোখে পড়েছিল হনুমানজীর বিশাল এক মূর্তি যা জাখু পাহাড়ে অবস্থিত । অর্থাৎ বীণা বাক্যব্যায়ে পরবর্তী গন্তব্য জাখু টেমপেল৷
এখানে মনে রাখা দরকার যে কোথাও যদি আমরা পরিবার নিয়ে ঘুরতে যায় সেখানে ঘেরার মজা যেমন থাকে তেমন ই হঠাৎ মাটি ফুঁড়ে কিছু সমস্যা ও দেখা দেয়৷ কিন্তু ঘোরার আনন্দে সেগুলো মুছে যায় মন থেকে৷শুধু ভাল সময় বা দৃশ্য গুলো না তুলে ধরে মজার বা কষ্টে পাওয়া কেষ্ট গুলোও সুন্দর স্মৃতিজড়িত হয়৷ আমাদের টিমের ও একই পরিস্থিতি ,সবচেয়ে ছোট জন পপাত্ ধরনীতল হয়ে সিমলার ছোট গলি রাস্তায় পড়ে যাওয়ার পর স্থানীয় ট্যাক্সি নিয়ে জাখু টেমপেল এর দিকে রওনা দিলাম । রিজের পাশ দিয়ে রাস্তা যাচ্ছে সোজা জাখু হিলস্ , পথের পাশে নয়নাভিরাম দৃশ্য কিন্তু শেষ সূর্যের কিরন পর্যন্ত উপভোগ করা যায় । প্রবাদ অনুযায়ী হনুমান রাম রাবনের যুদ্ধের সময় আহত লক্ষ্মণের জন্য গন্ধমাদন নিয়ে যাওয়ার সময় ক্লান্ত শরীরে এই মন্দিরে বিশ্রাম নেন ।
তার পায়ের ছাপ ও সেই গল্পের সত্যতার স্বাক্ষর দিচ্ছে ৷
কিন্তু ওই যে বললাম সমস্যা কখনও খুব মজার হয় l ট্যাক্সি ড্রাইভার রা বারন করলেন যে সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠার সময় কোনো রকম জিনিসপত্র নিয়ে গেলে বানরের দল খুব ভদ্রভাবে সেগুলো নিজেদের বলে দাবী করে নিয়ে নিতে পারে । তাই গাড়িতে রাখাটা ই বুদ্ধিমানের কাজ।
এই কথার প্রমান পেলাম যখন সত্যিই একজনের চশমাাা খোয়া গেল !
তবে এত কিছুর পর ও মন্দিরের সৌন্দর্য অতুলনীয় ৷ জানা গেল উনিশ শতকের শ্যামলীর মূর্তিও পাওয়া গেছে এখানে যা এখন সিমলা কালীবাড়িতে প্রতিষ্ঠিত ৷ পথেই পড়ে রোথনি ক্যাসেল ৷পুজো দেওয়ার ব্যবস্থা আলাদা করে না থাকলেও মন্দিরে সারাক্ষণ ই পুজো চলছে । এবার ফেরার পালা । দুজন আমরা সন্ধ্যাল ম্যাল রোডে থাকলাম বাকিরা আহত সদস্য কে নিয়ে হোটেলে ফিরে গেল ৷(ক্রমশ)