দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ এতদিন বিশ্ব জুড়ে কোভিড ১৯ অতি মহামারীর জন্য চিনকে দোষ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি করোনাভাইরাসকে ‘চাইনিজ ভাইরাস’ বা ‘উহান ভাইরাস’ বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি। কিন্তু শুক্রবার আচমকাই সুর বদলে টুইট করলেন ট্রাম্প। তিনি লিখেছেন, এইমাত্র চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে ফোনে কথা বললাম।
চিনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে করোনাভাইরাস অতিমহামারী নিয়েই কথা বলেছেন ট্রাম্প। তিনি টুইটারে লিখেছেন, শি-র সঙ্গে ভালই আলোচনা হল। করোনাভাইরাস এখন আমাদের গ্রহের এক বিরাট অংশে দাপট দেখাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বললাম। চিন ওই ভাইরাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানে। আমারা এখন একসঙ্গে কাজ করছি।
করোনাভাইরাস রোধে আমেরিকা যে চিনের সাহায্য নিতে চায়, পরোক্ষে সেকথাই বলতে চেয়েছেন ট্রাম্প।
Just finished a very good conversation with President Xi of China. Discussed in great detail the CoronaVirus that is ravaging large parts of our Planet. China has been through much & has developed a strong understanding of the Virus. We are working closely together. Much respect!
— Donald J. Trump (@realDonaldTrump) March 27, 2020
এর মধ্যে করোনা সংক্রমণে চিন-ইতালিকেও ছাপিয়ে গিয়েছে আমেরিকা! শুক্রবার সকালে জানা যায়, আমেরিকায় করোনায় আক্রান্ত ৮৫,৫৯৪ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন কমপক্ষে ১৩০০ জন। বৃহস্পতিবারই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭৮,১৩৯। এই সংখ্যা দেখেই বোঝা যাচ্ছে, ঠিক কতটা দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে মার্কিন মুলুকে!
এভাবে চলতে থাকলে মৃত্যুমিছিলও যে খুব শীঘ্র চিনকে ছুঁয়ে ফেলবে তাও আশঙ্কা করছেন অনেকে। ইতিমধ্যেই চিনে যত সংখ্যক মানুষ করোনায় মারা গেছেন, তার দ্বিগুণেরও বেশি সংখ্যক মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ইতালিতে। মাত্র ৬ কোটি জনসংখ্যার দেশে এই মৃতের এই সংখ্যা অনেকটাই বেশি, ৮২১৫। মৃত্যুর সংখ্যায় চিনকে ছাড়িয়ে গেছে স্পেনও। ৪৩৬৫ জন মারা গেছেন সে দেশে। তার পরেই রয়েছে ইরান, যেখানে আক্রান্ত ২৯,৪০৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২২৩৪ জনের।
অন্যদিকে বেজিংয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী চিনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর ব্যাপারটা প্রায় থমকে গিয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় মাত্র ৫৫ জনের শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের।
এখন সবচেয়ে ভয় বাড়াচ্ছে আমেরিকা। জানা গেছে, পাঁচ ঘণ্টারও কম সময়ে ওই দেশে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি বেড়েছে। শুধুমাত্র নিউইয়র্কেই নতুন করে অসংখ্য রোগীর সন্ধান মিলেছে। সব মিলিয়ে শুধু ওই শহরে করোনা আক্রান্ত ৩৭,৮০২ জন। নিউইয়র্কই এখন আমেরিকায় করোনাভাইরাস ছড়ানোর কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে।
সেন্টার ফর সিস্টেমস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং’য়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী করোনা ভাইরাসের আক্রমণে বেকাবু হয়ে পড়েছে আমেরিকার আরও অন্য দুই ব্যস্ততম শহর নিউ জার্সি এবং ক্যালিফোর্নিয়াও। ওই দুই শহরে যথাক্রমে ৬,৮৭৬ এবং ৩,৮০২ জন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে।
সেই সঙ্গে ইতালি তো রয়েইছে। এই দুই দেশের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও তার অভিঘাত এখন অভিশাপের মতোই যেন নেমে এসেছে। ইতালিতে গত চব্বিশ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ৭১২ জনের। গোটা বিশ্বে এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ৫ লক্ষ ২৬ হাজার ৪৪ জন, যাঁর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৩,৭০৯ জনের। মোট সেরে ওঠা রোগীর সংখ্যা ১,২৪,৩৩১ জন।