ইডেনে বিধ্বংসী মুকেশ,রঞ্জির ফাইনালে বাংলা

0
848

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পেসারদের দাপটে স্বপ্ন সফল। ১৩ বছর রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে উঠল বাংলা। মুকেশ কুমার, ঈশান পোড়েলদের দাপটে সেমিফাইনালে ১৭৪ রানে কর্ণাটককে হারাল অরুণলালের দল। মুকেশ একাই নিলেন ছ’টি উইকেট। দুটি করে উইকেট পেয়েছেন চন্দননগরের ভূমিপুত্র ঈশান পোড়েল ও আকাশদীপ।


শেষবার রনজি ট্রফি জিতেছিল ৩০ বছর আগে। সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করার দুর্দান্ত সুযোগ চলে এল অনুষ্টুপ মজুমদার, ঈশান পোড়েল, মুকেশ কুমারদের সামনে।
কোচ অরুণলালের এই বাংলা যে অন্যরকম তা বোঝা গিয়েছিল গ্রুপ পর্বেই। ঈশান পোড়েল, অভিমন্যু ঈশ্বরণদের পাশাপাশি অভিজ্ঞ মনোজ তিওয়ারি, অনুষ্টুপ মজুমদাররাও দুর্দান্ত খেলছিলেন। তবে, সেমিফাইনালের প্রতিপক্ষ ছিল টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা দল। যে দলে লোকেশ রাহুল, করুণ নায়ার, মণীশ পাণ্ডে, প্রসিধ কৃষ্ণা, অভিমন্যু মিঠুনদের মতো তারকারা রয়েছে। সেই কর্ণাটককে ফুৎকারে উড়িয়ে দিলেন ঈশান পোড়েলরা।দ্বিতীয় ইনিংসে মুকেশ কুমার নিয়েছেন ৬ উইকেট। ঈশান পোড়েল ও আকাশদীপ ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।

আর এই জয়ের নায়ক মূলত চারজন। অনুষ্টুপ মজুমদার না থাকলে বাংলার ইডেন সেমিফাইনালে জেতা হত না।

এদিন মুকেশ কুমারের দাপটে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল কর্ণাটকের ব্যাটিং লাইনআপ। চতুর্থ ইনিংসে ৩৫২ রান তাড়া করতে হত কর্ণাটককে। রবিবার তৃতীয় দিনের শেষে ৩ উইকেটে ৯৮ তুলেছিল দক্ষিনের এই রাজ্যটি। দরকার ছিল আরও ২৫৪ রানের। বাংলা শিবির চেয়েছিল মঙ্গলবার সকালেই সপাটে ধাক্কা দিতে। সকালের দিকে শিশিরকে কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন অরুণলাল। আর সেটাই হল।


এদিন সকালে প্রথমেই মণীশ পান্ডে (১২)–কে ফেরান মুকেশ। মণীশের ক্যাচ নেন শ্রীবৎস গোস্বামী। মুকেশ এর পর নেন সিদ্ধার্থ (০)–র উইকেট। তার পরের বলেই ফেরান শরথ (০)–কে। ১০৩ রানে ৬ উইকেট পড়ে যায় কর্ণাটকের।
এরপর মুকেশের শিকার হন দেবদূত (৬২)।

দেবদূতই টানছিলেন কর্ণাটককে। তিনি ফেরায় বাংলার জয় নিয়ে আর কোনও সংশয় ছিল না। এরপরে ঈশান পোড়েল নেন গৌতম (২২)–এর উইকেট। তারপর ফের আঘাত হানেন মুকেশ। ফেরান রণিত মোরে (৪)–কে। শেষ উইকেটে ৩০ রান যোগ করেন অভিমন্যু মিঠুন (৩৮) ও প্রসিধ কৃষ্ণা ।

প্রসিধ অপরাজিত থাকেন ২ রানে। অভিমন্যু মিঠুনকে ফিরিয়ে কর্ণাটকের ইনিংস ১৭৭ রানে শেষ করে দেন আকাশদীপ।

টস জিতে বাংলাকে প্রথম ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল কর্ণাটক। প্রথম ইনিংসে বাংলা তোলে ৩১২ রান। অনুষ্টুপ মজুমদার ১৪৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। জবাবে প্রথম ইনিংসে ১২২ রানে অল আউট হয়ে যায় কর্ণাটক। ঈশান পোড়েল ৫টি উইকেট নেন।

বাংলা প্রথম ইনিংসে ১৯০ রানে এগিয়েছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলা ১৬১ রানে অল আউট হয়ে যায়। অনুষ্টুপ করেন ৪১। সুদীপ চ্যাটার্জি করেন ৪৫। জিততে হলে কর্ণাটককে করতে হত ৩৫২ রান। কিন্তু কর্ণাটক দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭৭ রানে গুটিয়ে যায়।

দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলার ব্যাটিং ব্যর্থ হয়। কিন্তু তারপরেও সেমিফাইনাল জিতে এক যুগ পরে রঞ্জির ফাইনালে ওঠার আশা জিইয়ে থাকে। সৌজন্যে প্রথম ইনিংসের বিশাল লিড। কর্ণাটকের দ্বিতীয় ইনিংসে দলকে টেনেছেন দেবদত্ত পাল্লিকাল। সঙ্গে রয়েছেন মনীশ পাণ্ডে। কিন্তু পাল্লা ভারী থাকে বাংলার দিকেই। দরকার ছিল মাত্র ৭টা উইকেট।

দ্বিতীয় দিনের শেষে ৪ উইকেট পড়েছিল বাংলার। ক্রিজে ছিলেন সুদীপ চট্টোপাধ্যায় ও অনুষ্টুপ মজুমদার। তৃতীয় দিনের শুরুতেই ৪৫ রানের মাথায় সুদীপের উইকেট হারায় বাংলা। দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাটে রান আসে অনুষ্টুপের। ৪১ করেন তিনি। কিন্তু তাঁকে বিশেষ কেউ সঙ্গ দিতে পারেননি। শ্রীবৎস শূন্য রানে আউট হন। শাহবাজ আহমেদ করেন ৩১। শেষ পর্যন্ত ১৬১ রানে অলআউট হয় বাংলা। কর্ণাটকের অভিজ্ঞ পেসার মিথুন ৪ উইকেট নেন।

কর্ণাটকের জয়ের জন্য টার্গেট দাঁড়ায় ৩৫২। কিন্তু প্রথম ওভারেই ধাক্কা দেন সেই ঈশান পোড়েল। লোকেশ রাহুলকে শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে পাঠান তিনি। অন্য ওপেনার সমর্থ করেন ২৭। অধিনায়ক করুণ নায়ার ৬ করে আউট হন। কিন্তু এর মধ্যেই দলকে টানতে থাকেন তরুণ দেবদত্ত পাল্লিকাল। হাফসেঞ্চুরি করেন তিনি। তৃতীয় দিনের খেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত কর্ণাটকের রান ৩ উইকেটে ৯৮ ছিল। দেবদত্ত ৫০ ও মনীশ পাণ্ডে ১১ রানে ক্রিজে ছিলেন। কিন্তু এদিন সকালেই ভেলকি দেখান মুকেশ।

Previous articleYour Shot 🔘Indian scops owl
Next articleগ্রেফতার শাহরুখ,দিল্লির পুলিশের দিকে পিস্তল তাক করা সেই যুবক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here