গোটা দেশে এনআরসি,সিএএ ও এনপিআর নিয়ে মানুষের মধ্যে এক চরম অনিশ্চতা তৈরি হয়েছে।দেশের সংখ্যা লঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে এক আতঙ্ক তৈরি হয়েছে যে বিজেপি সরকার তাদের এ দেশ থেকে বিতাড়িত করার এক প্রয়াস করছে।সেই আতঙ্ক থেকেই শাহিনবাগ ধর্ণা।সেই আতঙ্ক থেকেই এ রাজ্যেও পার্ক সার্কাস সহ একাধিক জায়গায় মুসলিম মহিলারা পথে নেমে আসছেন,প্রতিবাদ অবস্থান করছেন।এ রাজ্যের বিজেপি নেতারা যে ভাষা ও ভঙ্গিতে পার্কসার্কাসে এক মহিলা সামিদা খাতুনের ধর্ণা মঞ্চে প্রতিদান অবস্থান করার মধ্যেই মৃত্যু হওয়ার পর তাঁকে বাংলাদেশি কিনা বলে কটাক্ষ করেছেন তা কোন সংবেদনশীল,মানবিকতা বোধ সম্পন্ন নেতারা করতে পারেন কিনা তা ভেবে দেখার যথেষ্ট অবকাশ আছে বলেই আমরা মনে করি।
বিজেপি নেতাদের সমস্যা তারা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতাকে আত্মস্থ করতে পারেন নি।ধর্মীয় বিভাজন দিয়েই তারা রাজনীতি করতে চান।আর এটা করতে গিয়ে তারা যে গোটা দেশেই মানুষের বিশ্বাস ও ভরসা হারাতে বসেছেন তা তারা এখনও মানতে চাইছেন না।ভাবছেন এ ভাবে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের দ্বারা নির্বাচনে সমর্থন পেেয়ে বার বার দেশের ক্ষমতায় ফিরে আসবে।
কোন সন্দেহ নেই এ দেশে হিন্দু ভোটাররাই সংখ্যা গরিষ্ঠ।তবে তার মানে কোন ভাবেই এই নয় যে হিন্দুরা সবাই হিন্দু ভোটার হিসেবে বিজেপিকে সমর্থন করবে।ভোটাররা ভোট দেন নাগরিক হিসেবে,ধর্মীয় পরিচয়ের সূত্রে তারা ভোট দেন না।যদি দেখা যায় বিজেপি দেশের অর্থনীতির হাল ক্রমশ খারাপ করেই চলে।যদি দেশে চাকরি ও শিক্ষার মান বাড়ানো না যায় তাহলে নাগরিক সেই সরকারকে ক্ষমতায় বেশীদিন রাখবে না।এ দেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাস বার বার তার প্রমাণ দিয়েছে।বিজেপি যে ভাবে গোটা দেশে ধর্মীয় জিগির তোলার চেষ্টা করছে,যেভাবে সংখ্যা লঘু মুসলিম মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও অবিশ্বাস তৈরি করছে তাতে তাদের বিপদ ঘনিয়ে আসছে বলেই মনে করা যায়।বিজেপি যে জাতীয়তাবাদ ও দেশপ্রেমের কথা বলছে তা যে স্রেফ রাজনীতির স্বার্থে তা মানুষ এখন বুঝতে শুরু করেছে।
মুসলিম মাত্রই দেশদ্রোহী ভাবার যে কোন কারণ নেই এদেশের মানুষ দীর্ঘদিন তা পাশাপাশি থেকে প্রমাণ করে দিয়েছে।এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস বলে হিন্দু মুসলমান হাত ধরাধরি করে সংগ্রাম করেছে।পাকিশ্তান মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পরেও যে সমস্ত মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ এ দেশে দেথে গেছেন তারা এ দেশকে ভালবেসেই থেকেছেন।
সাম্প্রদায়িকতার বিষ ঢেলে সেই ভালবাসাকে নষ্ট করার চেষ্টা করা শুধু অন্যায় নয় দেশের জন্য এক ভয়াবহ বিপদেরও ইঙ্গিতবাহী।সেই বিপদের আশঙ্কাতেই শাহিনবাগ-পার্কসার্কাসের মানুষ প্রতিবাদে রাত জাগছেন।
শুধু মুসলিমরা নন,এই প্রতিবাদে হিন্দুরাও আছেন তাই বিজেপি নেতৃত্বের সাবধান হওয়ার সময় এসে গেছে।সব শ্রেণীর মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা ফেরাতে হবে দেশের শাসক দলকে।
কেন তাকে সবসময় এরকম ফুলবাবু সেজে থাকতে হয়?দেশের মানুষের করের টাকায় এই ফুটানি কেন?দেশ প্রেমিক প্রধানমন্ত্রীকে কেন ৬০০ কোটি টাকার নিরাপত্তা বলয় নিয়ে ঘুরতে হবে?এই প্রধানমত্রী কী জানেন কেন গান্ধীজি আর্থ নগ্ন ফরির হয়ে জীবনের শেষ দিন কাটিযেছেন?জানেন না বা জানলেও মানেন না কারণ এরা সত্যিই দেশের গরীব মানুষকে ভালবাসেন না,ভালবাসলে দেশের গরীব মানুষের দারিদ্র অভাব অসহায়তাকে অনুভব করতেন,এই লাটসাহেবি জীবন যাপন করতে লজ্জা পেতেন।একদিকে দেশপ্রেমের মেকি আওয়াজ ্তুলছে অন্যদিকে দেশের সম্পত্তি রেল,বিএসএনএল,এলআইসি সব বেঁচে দিচ্ছে।
এই সব ভন্ডামি থেকে মানুষের চোখ ঘোরাতে হিন্দু মুসলমান তাস খেলছে বিজেপি।মানুষের বিশ্বাস যদি এরা ফেরাতে না পারে মানুষই এদের পথ দেখিয়ে দেবে তা নিশ্চিত করেই বলা য়ায়।