দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: দেশের প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে। তারই মধ্যে শুক্রবার রাতে সরকার গেজেটে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাল, এদিন থেকে সারা দেশে কার্যকরী হচ্ছে ওই আইন। পর্যবেক্ষকদের মতে, হাজার বিরোধিতার মাঝেও সরকার যে পিছু হটতে রাজি নয়, তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দেওয়া হল।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সংসদে পাশ হয় গত ১১ ডিসেম্বর। এদিন বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সাব সেকশন (২) এবং সেকশন ১ অনুযায়ী সরকার ঘোষণা করছে, ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে ওই আইন কার্যকরী হল।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে ছ’টি সম্প্রদায়ের মানুষ ধর্মীয় কারণে নিপীড়িত হয়ে ভারতে চলে এলে তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এই ছ’টি সম্প্রদায় হল হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি ও খ্রিস্টান। বিরোধীদের বক্তব্য ধর্মের ভিত্তিতে কাউকে নাগরিকত্ব দেওয়া সংবিধানবিরোধী।
এই আইনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সর্বোচ্চ আদালতে ৬০টিরও বেশি আবেদন জমা পড়েছে। আন্দোলনকারী, ছাত্র ও সংবাদমাধ্যম এনিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইনকে ‘সাংবিধানিক’ ঘোষণার দাবিতে সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেছেন আইনজীবী বিনীত ধান্ডা।
এই আবেদনের জবাবে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে বলেন, “সংসদ যে আইন পাশ করছে তাকে আমরা কী ভাবে সাংবিধানিক বলতে পারি? সাংবিধানিক ভাবে গ্রাহ্য কিনা তা নিয়ে বারবারই প্রশ্ন ওঠে। আপনি যদি কখনও আইনের ছাত্র হয়ে থাকেন তা হলে একথা আপনার জানা উচিত।” প্রধান বিচারপতির এই বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি বিআর গাভাই ও বিচারপতি সূর্য কান্ত।
বেঞ্চ বলে, “আদালতের কাজ হল কোনও আইন বৈধ কিনা তা নিশ্চিত করা, কোনও আইন সাংবিধানিক কিনা তা ঘোষণা করা নয়।”
প্রধান বিচারপতি বোবদে বলেন, “দেশ এখন কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই সময় শান্তি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা উচিত। এই ধরনের আবেদন করে কোনও লাভ নেই।” দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার ব্যাপারে ধর্মকে ভিত্তি করা নিয়ে এই প্রথম কোনও আইন হয়েছে এবং তার প্রতিবাদে দেশজোড়া বিক্ষোভের মাঝেই এই মন্তব্য করলেন প্রধান বিচারপতি।