দেশের সময় , পেট্রাপোল : ভাইয়েদের রক্তে রাঙা হয়েছিল ২১। তার প্রতিদানে ভারত – বাংলাদেশ সীমান্তে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন৷
ভাষা শহীদদেরকে শ্রদ্ধা জানাতে বনগাঁ পেট্রাপোল সীমান্তে পালিত হল শহীদ দিবস ৷ শূন্য পয়েন্টে শহীদ বেদীতে ফুলের মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দু’দেশের মানুষ৷ এরপর দু’দেশের প্রতিনিধিরা একে অপরকে মিষ্টিমুখ করেন৷ প্রতিবারই শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর পর দু’দেশের উদ্যোগে চলে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান৷
কিন্তু এবার করোনা বিধি ও প্রশাসনের নির্দেশে দু’বাংলার মানুষ একসঙ্গে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে না পারলেও পৃথক দু’ই অনুষ্ঠানে ভাষা শহীদদেরকে শ্রদ্ধা জানানো হয়৷
এদিন বনগাঁ শহরে স্বপ্নভূমি নাট্যমঞ্চ গ্রুপের পরিচালনায় বিএসএফ ক্যাম্প মোড় এলাকায় শহীদ বেদীর সামনে আয়োজিত হয়েছে পথ নাটক এবং সঙ্গীতের আসর৷ সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে চিলেকোঠার সদস্য সদস্যারাও৷ কবিতা – গান নাটকে শহীদদেরকে স্মরণ করেন স্থানীয় বহু মানুষ৷ দেখুন ভিডিও
একই সঙ্গে বনগাঁর বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিএড কলেজ প্রাঙ্গণে মাতৃভাষা দিবস পালন করেন কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা৷ তাঁদের সঙ্গে শহীদদেরকে শ্রদ্ধা জানান কলেজের অধ্যাপক সহ সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকারা৷
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার অধিকার চেয়ে লড়াই করে শহিদ হয়েছিলেন বাংলাদেশের বরকত, আবদুল, রফিক, জব্বার-সহ বহু তরুণ প্রাণ। এই লড়াইয়ের জেরেই পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশ রক্ষা পায় উর্দু আগ্রাসনের হাত থেকে। বাংলা ভাষার অধিকার পায় তারা।
এই আন্দোলনকে স্মরণ করে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর, প্যারিসে ইউনেসকোর ৩০ তম অধিবেশনে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। স্বীকৃতি পায় বাংলা ভাষার জন্য এই অনন্য লড়াই। সেইসঙ্গে পৃথিবীর সমস্ত ভাষাভাষির মানুষ পেলেন নিজেদের মাতৃভাষা নিয়ে গর্ব করার দিন। এর ঠিক পরের বছর, ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্বের ১৮৮টি দেশে এ দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন শুরু হয়।
সোমবার সকালে পেট্রাপোল সীমান্তে থেকে শুরু করে বনগাঁ শহরের অসংখ্য মানুষ বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ঐতিহাসিক মাতৃভাষা পালন করলেন শ্রদ্ধাজ্ঞাপন, শহীদবেদীতে পুষ্পস্তবক প্রদান, বিশিষ্ট সমাজসেবীদের সংবর্ধনার মধ্যে দিয়ে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসের উন্মাদনা উপভোহ করেন সকলে।