দেশেরসময়ওয়েবডেস্কঃ উত্তরপ্রদেশের ঘূর্ণাবর্তে ভিজবে দক্ষিণবঙ্গ। এই খবরেই দুশ্চিন্তা বাড়ছে পুজো আয়োজকদের। চিন্তায় প্রতিমাশিল্পীরাও। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, এরকম পরিস্থিতি চলবে অন্তত রবিবার পর্যন্ত। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। পশ্চিমের জেলাগুলিতে একটু বেশি বৃষ্টি হবে।
মালদা ও দুই দিনাজপুরের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত ভারী বৃষ্টি হতে পারে। উত্তরবঙ্গের বাকি জেলাগুলির মধ্যে দার্জিলিং ও জলপাইগুড়িতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
শুক্রবার পূর্বাভাষে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, পুজোর মুখে ‘ভিলেন’ হয়ে উঠেছে উত্তরপ্রদেশের একটি ঘূর্ণাবর্ত। সেটি জোলো হাওয়া শুষে শক্তি বাড়াতে চাইছে। তাই বঙ্গোপসাগর থেকে দক্ষিণবঙ্গের ওপর দিয়ে ভেসে চলেছে জলভরা মেঘ। যাওয়ার পথে সেই মেঘ এরাজ্যে বৃষ্টি ঝরিয়ে চলেছে।
আজ, শনিবার মহালয়া। এদিন থেকে শুরু হয়ে গেছে কিছু পুজোর উদ্বোধন। তৃতীয়া থেকেই কলকাতার বহু মানুষ মণ্ডপমুখী হতে শুরু করেন। অথচ, টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি আর মেঘের কারণে অধিকাংশ মন্ডপেরই বাইরের কাজ শেষ হয়নি। ভেজা কাঠামোয় উঠে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। পুজো কর্তারা আশা করেছিলেন, মহালয়ায় হয়ত আকাশ পরিস্কার হবে। রোদ উঠে স্বস্তি দেবে। কিন্ত সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে বৃষ্টি।
মাঝেমধ্যে মেঘ সরে গিয়ে হালকা রোদ উঠলেও তা স্থায়ী হচ্ছে না। ফের বৃষ্টি নামছে। খুব জোরে বৃষ্টি না হলেও যেটুকু হচ্ছে, তা পুজো প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটার জন্য যথেষ্ট। তারপরও এদিন সকালের দিকে আবহাওয়া একটু শুকনো থাকায় জোরকদমে মণ্ডপ তৈরির কাজ চালানো হয়।
একই পরিস্থিতি কলকাতা কুমোরটুলি এবং জেলার পটুয়াপাড়াগুলোতে। এদিন সকালে বনগাঁয় তেমন বেশি বৃষ্টি না হওয়ায় প্রতিমা শিল্পীরা আগুনে ভিজে মাটি শুকিয়ে,দ্রুত রঙের কাজ শেষ করার দিকে নজর দেন। গত কয়েকদিন স্যাতস্যাতে পরিবেশে এই কাজ অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছিল বলে জানান শিমুলতলার প্রতিমা শিল্পী স্বপন ভট্টাচার্য্য। শিল্পী সিন্টু ভট্টাচার্য্য তার সহ কর্মীদেরকে নিয়ে,বিদ্যুৎ গতিতে বার্নার জ্বালিয়ে প্রতিমা শোকানোর কাজ শুরু করেছেন।
সকালে ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় পুজো কমিটি কুমোরটুলি ও পটুয়া পাড়া থেকে প্রতিমা নিয়ে যেতে শুরু করেছে৷ বৃষ্টির আশঙ্কায় সেগুলি ছিল পলিথিনের চাদরে মোড়া। কুমোরটুলিতেও যেসব প্রতিমার কাজ চলছে কিম্বা কাজ শেষ হয়ে গেছে, সেগুলি পলিথিনে ঢেকে রাখা হয়েছে।
অনেক পুজো আয়োজকরা আবার প্রতিমা মণ্ডপে নিয়ে চলে গেলেন শেষ পর্বের কাজ সেখানেই সারার জন্য।
এদিকে, মৌসম ভবন জানিয়েছে শনিবার উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত দাঁনা বাঁধতে পারে। সেটাই কিছুটা দুচিন্তায় রাখছে পুজো আয়োজকদের। আর সব বাঙালির মুখে এখন দুগগা দুগগা ..তার ভরসায় দিন কাটছে সকলের৷ ছবি তুলেছেন- পার্থ সারথি নন্দী ও কুন্তল চক্রবর্তী।