দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ অরুণাচল সীমান্তে নিখোঁজ হওয়া পাঁচ যুবককে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য লাগাতার পিপলস লিবারেশন আর্মিকে (পিএলএ) চাপ দিয়েছে ভারতের সেনাবাহিনী। হটলাইনে চিন ও ভারতের সেনার মধ্যে দফায় দফায় কথা হয়েছে। গতকালই কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেণ রিজিজু টুইট করে জানিয়েছিলেন, পাঁচ ভারতীয়কে ফিরিয়ে দিতে রাজি হয়েছে চিন। আজ, শনিবার সাত সকালেই পাঁচজনকে সীমান্ত পার করিয়ে ভারতে পাঠিয়ে দিয়েছে পিএলএ, ভারতীয় সেনা সূত্রে এমন খবরই পাওয়া গেছে।
চিনের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা দিয়েই তাঁদের ভারতে পাঠানো হয়। সেনা সূত্র জানাচ্ছে, কিবিথু বর্ডার এলাকা দিয়ে ভারতের সীমায় ঢুকতে তাঁদের প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রিজিজু বলেছিলেন, গতকালই সীমান্তের কাছে পিএলএ-র বেসে হটলাইনে মেসেজ পাঠিয়েছিল ভারতীয় সেনা। পাঁচ যুবককে ফেরত দেওয়া নিয়ে দু’পক্ষের কথাবার্তা হয়। পিএলএ-র তরফে জানানো হয়েছিল, আজ কোনও সময়েই তারা পাঁচজনকে সীমান্তের ওপারে পৌঁছে দেবে।
#HarKaDeshKeNaam#WeCare #ArunachalPradesh
— PRO Defence Tezpur (Assam/Arunachal Pradesh) (@ProAssam) September 11, 2020
Good news #India…
By persistent efforts of #IndianArmy, 5 hunters of #UpperSubansiri, who crossed over #LAC on 2 Sept, will finally return on 12 Sept. #PLA will hand them over to #India in #Damai #China at 0930hrs morning. #LohitValley pic.twitter.com/FtyRaFLVXl
গত শনিবার ভোরে রাজ্যে আপার সুবনসিরির নাচো সেক্টর থেকে পাঁচ যুবকের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার খবর মেলে। অরুণাচল প্রদেশের কংগ্রেস বিধায়ক নিনং এরিং টুইট করে জানান, টাগিন জনজাতির পাঁচ যুবককে অপহরণ করেছে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। পরে অরুণাচল পুলিশের ডিজিও জানান, নাচো সেক্টরের সেরা-৭ এলাকার একটি জঙ্গলের ভেতর থেকে পাঁচ অরুণাচলি যুবককে তুলে নিয়ে গেছে চিনের সেনা। ওই এলাকা ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা ১০০ কিলোমিটার দূরে। পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চিন ও ভারতীয় বাহিনীর সংঘাতের আবহেই এই ঘটনা নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়।
পুলিশ জানায়, নিখোঁজ হওয়া যুবকরা জঙ্গলে গুম্বা নামে একপ্রকার গুল্ম সংগ্রহ করতে গিয়েছিল। এই গুল্ম জাতীয় ভেষজ উদ্ভিদ আন্তর্জাতিক বাজারে চড়া দামে বিক্রি হয়। তাছাড়া হরিণ শিকারের উদ্দেশ্যও ছিল তাদের। জঙ্গলে সীমান্ত নির্দিষ্ট না-থাকায় হয়তো তাঁরা চিনা বাহিনীর মুখোমুখি পড়ে গিয়েছিল। দলে তাঁরা সাতজন ছিল, যাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে তুলে নিয়ে যায় চিনের সেনা। যুবকদের নাম টোচ সিংকাম, প্রসাদ রিংলিং, ডোংটু এবিয়া, টানু বাকের ও গারু দিরি।
অপহৃতদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তার খবরাখবর নেওয়ার জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহায্য চায় অরুণাচলের পুলিশ। এরপরেই পিএলএ বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে ভারতের সেনা। যদিও এই অপহরণের অভিযোগ মানতে চায়নি পিপলস লিবারেশন আর্মি। অরুণাচলের সীমান্ত নিয়ে চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান দাবি করেন, অরুণাচল নাকি কোনওদিন ভারতের ছিল না। বরাবরই অরুণাচলকে দক্ষিণ তিব্বতের অংশ হিসেবেই মনে করেছে চিন। সীমান্ত থেকে পাঁচ ভারতীয়ের অপহরণের অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি।
পূর্ব লাদাখে সীমান্ত সমস্যা তুঙ্গে উঠেছে। মে মাস থেকেই দফায় দফায় দুই দেশের বাহিনী মুখোমুখি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে। এমন অবস্থায় অরুণাচল নিয়ে চিন নতুন ফন্দি আঁটতে পারে সেই শঙ্কা ছিলই ভারতের বাহিনীর। এর আগে মার্চ মাসে আপার সুবনসিরি জেলার আসাপিলা সেক্টর থেকে এক তরুণকে অপহরণ করেছিল চিনা সেনা। ভারতীয় সেনার হস্তক্ষেপে পরে তাঁকে মুক্ত করে পিএলএ।