দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃকরোনা আবহের মধ্যে প্রথমে কিছুটা ধাক্কা খেলেও তারপর ব্যবসায়িক দিকে একের পর এক সাফল্য পেতে শুরু করেছেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের কর্ণধার মুকেশ আম্বানি। জেফ বেজসের অ্যামাজনকে কড়া টক্কর দিতে আরও একধাপ এগিয়ে গেলেন তিনি। কিশোর বিয়ানির ফিউচার গ্রুপের খুচরো বিপণন চেন কিনে নিল রিলায়েন্স। ২৪ হাজার ৭১৩ কোটি টাকায় এই অধিগ্রহণ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শনিবার এই মালিকানা বদল হয়েছে দুই সংস্থার মধ্যে।
এই অধিগ্রহণের ফলে এবার থেকে ফিউচার রিটেলের প্রায় ১৮০০ ও ফিউচার লাইফস্টাইলে ৩৫০-র বেশি বিপণি রিলায়েন্সের অধীনে এল। তার মধ্যে রয়েছে বিগ বাজার, এফবিবি, ইজি ডে, ডব্লুএইচ স্মিথ, হেরিটেজ ফ্রেশের মতো বিপণি। অবশ্য শুধুমাত্র ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল সংক্রান্ত বিপণির হস্তান্তর হয়েছে। ফিউচার গ্রুপের বিমা ও আর্থিক পরিষেবা সংক্রান্ত ব্যবসার হস্তান্তর হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের মধ্যে মার খেয়েছে ফিউচার গ্রুপের ব্যবসা। বাজারে ভালোই ধার হয়েছে কিশোর বিয়ানির। সেই সুযোগটাই কাজে লাগালেন মুকেশ আম্বানি। এই লগ্নির টাকায় বাজারে নিজেদের ধার মেটাতে পারবে ফিউচার গ্রুপ। অন্যদিকে ভারতে এবার রিটেল ব্যবসায় নিজের পা আরও মজবুত করলেন মুকেশ আম্বানি।
এই চুক্তির বিষয়ে রিলায়েন্স রিটেল ভেঞ্চার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান ঈশা আম্বানি বলেন, “একটা বড় চুক্তি করেছি আমরা। ভারতের রিটেল ব্যবসায় ফিউচার গ্রুপ খুবই সফল এক সংস্থা। সেই গ্রুপের সঙ্গে নিজেদের নাম যোগ করলাম আমরা। এই রকমের নামী ব্র্যান্ডকে রিলায়েন্সের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে পারলাম। ফিউচার গোষ্ঠী আগামী দিনে আরও সাফল্য পাবে। এই দুই সংস্থা একসঙ্গে ভারতের গ্রাহকদের কাছে নতুন বার্তা দেবে।”
সম্প্রতি অ্যামাজনের কর্ণধার জেফ বেজসের সঙ্গে ভারতে ব্যবসায় টক্কর দেওয়া শুরু করেছে রিলায়েন্স। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের একের পর এক কর্মকাণ্ড সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। আর সেই কারণেই একের পর এক রিটেল চেন কিনে নিচ্ছে রিলায়েন্স। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন ফিউচার গ্রুপ। বিগ বাজার এবার আম্বানিদের হাতে আশায় ফ্যাশন ও লাইফস্টাইলের ক্ষেত্রে ভারতের একটা বড় বাজার তারা ধরে ফেলবে বলেই মনে করছে বাণিজ্যিক মহল।
লকডাউনের ফলে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন শিল্পপতিদের ব্যবসা যেখানে মার খাচ্ছে, সেখানে তার উল্টো ছবিটা দেখা যাচ্ছে রিলায়েন্সের। বিশ্বের ধনীদের তালিকায় মে মাসে ১৭ তম স্থানে চলে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে গত তিন মাসে চার নম্বরে উঠে এসেছেন মুকেশ আম্বানি। তার একটা অন্যতম কারণ হল, লোকসানের পরেই নিজের সংস্থায় একের পর এক বিনিয়োগ আনতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। ফেসবুক, গুগল রিলায়েন্সের শেয়ার কিনেছে। তার ফলে একদিকে যেমন টাকা এসেছে, অন্যদিকে তেমনই রিলায়েন্সের শেয়ারের মূল্যও বেড়েছে। তারই ফলে পাচ্ছেন মুকেশ আম্বানি। একের পর এক বড় পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি।