দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পৌনে তিন লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।ভারতেও অনেক পরিবার স্বজন হারিয়েছেন। সবার প্রতি সহানুভূতি জানাচ্ছি।একটি ভাইরাস গোটা দুনিয়াকে তছনছ করে দিয়েছে। গোটা বিশ্ব জীবন বাঁচাতে এক প্রকার যুদ্ধ করছে। আমরা এমন সংকট না দেখেছি, না শুনেছি।
মানবজাতির কাছে এই সংকট অকল্পনীয়, অভূতপূর্ণ। কিন্তু হারলে চলবে না। আমাদের বাঁচতেও হবে, সামনের দিকে এগোতেও হবে।
আমাদের সঙ্কল্প দৃঢ় করতে হবে। তা যেন সংকটের থেকেও দৃঢ় হয়।
আমরা বহুদিন ধরে শুনেছি একবিংশ শতক ভারতবর্ষের শতক হবে।
বিশ্বের আজকের পরিস্থিতি আমাদের বার্তা দিচ্ছে, মন্ত্র এখন একটাই আত্মনির্ভর ভারত। আমাদের শাস্ত্রেও বলেছে, একবি পন্থা!
এত বড় বিপদ ভারতের জন্য একটা বার্তা, সুযোগ নিয়ে এসেছে।
একটা উদাহরণ দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছে। যখন করোনা সংকট শুরু হল, ভারতে একটাও পিপিই-র উৎপাদন হত না। এন-৯৫ মাস্ক নামমাত্র উৎপাদন হত। কিন্তু ভারতে এখন দিনে ২ লাখ পিপিই, ২ লক্ষ এন-৯৫ মাস্ক তৈরি হচ্ছে।
কারণ, ভারত এই বিপদকে সুযোগে পরিণত করেছে। এটাই তো আত্ম নির্ভরতা।
আজ বিশ্বে আত্মনির্ভরতার মানে পুরো বদলে গেছে।
ভারত যখন আত্মনির্ভরতার কথা বলে, তখন আত্মকেন্দ্রিকতার কথা কিন্তু বলে না। গোটা সংসারের গোটা পৃথিবীর সুখ শান্তির কথা বলে। যে সংস্কৃতি জগতের কল্যাণ চায়, সবার সুস্থতা কামনা করে। গোটা দুনিয়াকে একটা পরিবার মনে করে।
এমন ভারতভূমি যখন আত্মনির্ভর হবে তখন গোটা পৃথিবী সুখী ও সমৃদ্ধশালী হবে। ভারতের কাজের প্রভাব বিশ্ব কল্যাণের উপর পড়ে।
আন্তর্জাতিক যোগা দিবস, মানুষকে স্ট্রেস থেকে মুক্তির জন্য ভারতের উপহার।
ভারত যখন সমৃদ্ধ ছিল, তখন সোনার পাখি বলা হত। সময় বদলেছে। দেশ গোলামির শৃঙ্খলে বাঁধা পড়ে। আমরা উন্নয়নের জন্য তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়ি।
আমরা বেস্ট প্রোডাক্ট বানাব, সাপ্লাই চেইনকে আরও মজবুত বানাব।
আমি নিজের চোখে কচ্ছের ভূকম্পের সেই ভয়ানক দিন দেখেছি। চারদিকে শুধু ধ্বংসস্তুপ। মনে হবে, গোটা কচ্ছ মৃত্যুর চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে।
কিন্তু দেখতে দেখতে সেই কচ্ছ নিজের রূপান্তর করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। তাই বলছি, আমরা সঙ্কল্প করলে কেউ আটকাতে পারবে না।
আত্মনির্ভর ভারতের এই অট্টালিকা পাঁচটি স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে থাকবে-
আত্মনির্ভর ভারতের এই অট্টালিকা পাঁচটি স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে থাকবে-
এক) অর্থনীতি– যা লাফিয়ে বাড়বে
দুই) পরিকাঠামো– যা আধুনিক ভারতের পরিচয় হয়ে উঠবে
তিন) সিস্টেম-পুরনো ধ্যানধারণা ছেড়ে প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে ওঠা
চার) আমাদের জনসংখ্যা
পাঁচ) চাহিদা। আমাদের অর্থ ব্যবস্থায় চাহিদা রয়েছে তা পূরণ করতে সাপ্লাই চেইন আরও মজবুত করতে হবে
বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে চলেছি- যা আত্মনির্ভরতার সহায়ক হবে।
করোনা সংকটের মোকাবিলায় যে আর্থিক প্যাকেজ সরকার এর আগে ঘোষণা করেছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে ঘোষণা করেছে আর আজকের প্যাকেজ জুড়ে দিয়ে তার বহর হবে ২০ লক্ষ কোটি টাকা।
যা দেশের গড় জাতীয় উৎপাদনের ১০ শতাংশ
এই প্যাকেজে জমি, শ্রমিক, অর্থের যোগান ও আইন- সবকিছুর উপর জোর দেওয়া হয়েছে। আমাদের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগের জন্যও। যা কয়েক কোটি মানুষের জীবিকা নির্বাহের আধার।
এই আর্থিক প্যাকেজ দেশের সেই শ্রমিক ও কৃষকদের জন্য, যারা যে কোনও পরিস্থিতিতে দেশবাসীর জন্য দিনরাত পরিশ্রম করছে। এই আর্থিক প্যাকেজ মধ্যবিত্তদের জন্যও যারা দেশের উন্নয়নে সাহায্য করছে।
আজ থেকে প্রতিটি ভারতবাসীকে ‘লোকাল’ নিয়ে ‘ভোকাল’ হতে হবে। শুধু স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত জিনিস কিনলে হবে না, স্থানীয় উৎপাদনও বাড়াতে হবে। তা যেন বিশ্বমানের হয়। তবেই সেই লোকাল একদিন গ্লোবাল হয়ে যাবে।
করোনা দীর্ঘ দিন ধরে আমাদের সঙ্গে থাকবে। কিন্তু আমরা এমন চলতে দিতে পারি না যে আমাদের জীবন করোনাকে ঘিরে আবর্তিত হয়। তাই আমরা মাস্ক পরব। পারস্পরিক ২ গজ দূরত্ব রেখে চলব। কিন্তু এগোবও।
তাই লকডাউনের চতুর্থ পর্যায় অন্য রকম হবে। অন রঙ ও রূপের হবে। তা ১৮ তারিখের আগে ঘোষণা করা হবে।