দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ১ জুন, সোমবার থেকে পশ্চিমবঙ্গে সমস্ত মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদ্বারা খোলার অনুমতি দিল রাজ্য সরকার। শুক্রবার বিকেলে নবান্নে প্রেস কনফারেন্স করে তা ঘোষণা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তবে মুখ্যমন্ত্রী এও স্পষ্ট করে দেন, এক সঙ্গে ১০ জনের বেশি কোনও ধর্মস্থানে প্রবেশ করতে পারবেন না। সেই সঙ্গে ধর্মস্থানে কোনও জমায়েতও করা যাবে না।
হটস্পট এলাকা থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবহণের ক্ষেত্রে খুবই অনিয়ম হচ্ছে বলে এদিনও অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সূত্রে তিনি বলেন, ট্রেনে গাদাগাদি করে যদি এতো লোক আসতে পারে, তা হলে মন্দির, মসজিদ খুলতে কী অসুবিধা। বরং এই সংকট থেকে মুক্তি পেতে মানুষ একটু প্রার্থনা করার সুযোগ পাবে। তাই কাল থেকেই মন্দির, মসজিদ খুলে যাবে।
পরক্ষণেই তিনি আবার বলেন, না থাক কাল থেকে খোলার দরকার নেই। অনেক দিন ধরে মন্দির, মসজিগ, গুরুদ্বারাগুলো বন্ধ রয়েছে। কোথাও সাপ ব্যাঙ ঢুকে বসে আছে। কোথাও ইঁদুর-বাদুড় ঢুকে আছে। পরিষ্কার করতে অন্তত ৭২ ঘন্টা সময় লাগবে। তাই সোমবার ১ জুন থেকে বরং খোলা যেতে পারে সব ধর্মস্থান।
এর আগে কর্নাটক সরকার কেন্দ্রকে জানিয়েছিল, তাদের রাজ্যে ধর্মস্থানগুলি খোলার অনুমতি দেওয়া হোক।
প্রসঙ্গত, চতুর্থ দফার লকডাউনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে রবিবার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, ওই দিনই লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর ব্যাপারে ঘোষণা করা হতে পারে। পঞ্চম দফার লকডাউনে অবশ্য অনেক কিছু নিয়ম শিথিল করা হতে পারে। এমনকি কেন্দ্রও ভাবছে ধর্মস্থান নিয়ন্ত্রিত ভাবে খোলার জন্য পঞ্চম দফায় অনুমতি দেওয়া হতে পারে। অনেকের মতে, কেন্দ্রের সম্ভাব্য সেই পদক্ষেপের ইঙ্গিত পেয়ে আগেই এ ব্যাপারে ছাড়পত্র ঘোষণা করল রাজ্য।
তৃতীয় দফার লকডাউনের সময় থেকেই সরকারি ও বেসরকারি অফিসে ৩৩ শতাংশ কর্মচারী নিয়ে কাজ শুরু করার অনুমতি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার৷মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার জানিয়ে দিলেন, ৮ জুন থেকে রাজ্যে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি অফিসে ১০০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করা যাবে।
প্রসঙ্গত, চতুর্থ দফার লকডাউনের মেয়াদ রবিবার ৩১ মে শেষ হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত যা ইঙ্গিত তাতে লকডাউনের মেয়াদ ফের বাড়াতে পারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তবে অর্থনৈতিক কাজকর্মে আগের তুলনায় নিয়ন্ত্রণ শিথিল করা হবে। গত কাল এ ব্যাপারে সব রাজ্যের মুখ্য সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা। সূত্রের খবর, পঞ্চম দফায় সরকারি ও বেসরকারি অফিসে কাজে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্র যে আরও ছাড় দিতে চলেছে তার ইঙ্গিত গতকালই দিয়ে দেন গৌবা।তার পরই এদিন নবান্নে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছে, ১ জুন সোমবার থেকে পাট ও চা শিল্পেও ১০০ শতাংশ কর্মী যোগ দিতে পারবেন।
এখন প্রশ্ন হল, অফিস তো খোলা হচ্ছে। কিন্তু ট্রেন বা মেট্রো চলবে কী? তা হলে কর্মীরা কীভাবে অফিসে যাবেন!
রেল-মেট্রো – রেলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার রাজ্যের নেই। তা কেন্দ্র নেবে। তবে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেছেন, সরকারি ও বেসরকারি বাসের পরিষেবা চালু রাখতে পারলে সমস্যা বিশেষ হওয়ার কথা নয়। তিনি অবশ্য পই পই করে বলেছেন, বাসের মধ্যে যথাসম্ভব পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। সব আসনে যাত্রীরা বসতে পারবেন, কিন্তু প্রত্যেককেই মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরতে হবে। তা ছাড়া যাত্রী তোলার জন্য কন্ডাক্টরকে বাধ্য করা যাবে না।