দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ জল্পনার অবসান। প্রায় বছর দেড়েক বাদে রাজ্যে খুলতে চলেছে স্কুল কলেজ। ১৬ নভেম্বর থেকে রাজ্যের সমস্ত স্কুল-কলেজ খোলার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মুখ্যসচিবকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। শিলিগুড়ির প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যসচিবকে স্কুল খোলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। করোনা পরিস্থিতিতে গত বছরের মার্চ মাস থেকে বন্ধ রাজ্যের সমস্ত স্কুল-কলেজ।
আগেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যে, যদি করোনা পরিস্থিতি ঠিক থাকে বা তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা না থাকে তাহলে পুজোর ছুটির পর অর্থাৎ ভাইফোঁটার পর স্কুল-কলেজ খোলার ভাবনা আছে।
সেইমতই স্কুল-কলেজ খোলার কথা জানিয়ে দিলেন তিনি। তবে ভাইফোঁটার পরেই নয়, আরও দিন দশেক পর স্কুল-কলেজ খুলবে রাজ্যে। সোমবার উত্তরকন্যার প্রশাসনিক বৈঠকে এসে এমন কথাই জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্কুল-কলেজ খোলার ব্যাপারে যাবতীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিবকে। এদিন জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “১৫ নভেম্বর থেকে স্কুল-কলেজ খোলার ব্যবস্থা হবে। তার আগে স্কুল কলেজ পরিস্কার করার ব্যাপার আছে। সেদিকেও নজর রাখতে হবে।”
নবান্ন সূত্রের খবর, ১৫ তারিখ নয়, স্কুল কলেজের দরজা খুলবে ১৬ তারিখ থেকে। মুখ্যমন্ত্রী ১৫ তারিখের কথা বললেও সেদিন ছুটি থাকার কারণে ১৬ তারিখ থেকে স্কুল কলেজ খুলবে বলে খবর।
এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট যাবতীয় সিদ্ধান্ত মুখ্যসচিবকে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। যেহেতু করোনাকালে বহুদিন বন্ধ ছিল, তাই সেই বিষয়ে নজর দিয়েই করোনা পরিস্থিতি বিচার করেই স্কুল-কলেজ খোলার কথা ভাবা হচ্ছে।
অন্যদিকে, রাজ্যে পুজোর পর ঊর্ধ্বগামী করোনা গ্রাফ। তার প্রভাব স্কুল খোলায় পড়বে কিনা সেই নিয়ে আশঙ্কায় ছিলেন বিশেষজ্ঞরা। স্কুল খোলার পর কোভিড বিধিতে জোর দেওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। তবে স্কুল খোলায় রাজ্যের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তবে করোনা কারণে অতিসাবধনতা অবলম্বনের উপরেই জোর দিচ্ছে সকলে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘স্কুল খোলা হলে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মীদের বাধ্যতামূলকভাবে পরতে হবে মাস্ক।’
ইতিমধ্যেই বেশ কিছু রাজ্যে খুলে গিয়েছে স্কুল। সম্প্রতি দ্য ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ মেডিক্যাল রিসার্চে -এর বিশেষজ্ঞদের মতামত সম্বন্ধিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যেখানে স্কুল খোলার বিষয়েই জোর দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, অনলাইনে পড়াশোনা জারি রাখা হলেও স্কুল বন্ধ থাকার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বহু পড়ুয়া। স্কুল খোলার ব্যবস্থা অবিলম্বে করা উচিত। বিশেষজ্ঞরা এ প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন, ‘স্কুল খোলার আগে প্রতিটি রাজ্য তথা জেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে জানতে হবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সেই এলাকাগুলি কতটা প্রভাবিত হয়েছিল। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাকরণের হার সম্পর্কেও জানতে হবে যাতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের কথা মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট জেলা কতটা প্রস্তুত তা বোঝা যায়। এরই উপর ভিত্তি করে ধাপে ধাপে স্কুল খোলা উচিত।’