পিয়ালী মুখার্জী,কলকাতা: করোনা আবহে রাজ্যে সমস্ত সরকারি, বেসরকারি স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আগামী ১৬ই নভেম্বর থেকে নতুন করে খোলার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার উত্তরবঙ্গে শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় এক বৈঠকে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী কে মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার নির্দেশ দেন।
প্রথমে ১৫ তারিখ বললেও পরে নিজেই জানান ১৬ তারিখ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে, কারণ ১৫ই নভেম্বর বিরসামুন্ডার জন্মদিন উপলক্ষে রাজ্যে ছুটি থাকবে। প্রায় ২০ মাস পরে খুলছে রাজ্যের স্কুল কলেজের দরজা। যদিও এর আগে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল করোনার প্রকোপ কম থাকায় নবম থেকে দ্বাদশ এর ক্লাস চলেছে। এখন প্রথম ধাপে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ক্লাস শুরু হলেও জানানো হয়েছে পরিস্থিত বুঝে ধাপে ধাপে খোলা হবে বাকি শ্রেণী গুলি। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এক গুচ্ছ নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে।
প্রস্তুতি: উত্তর ২৪পরগণার অশোকনগর বানীভবন বিদ্যাসাগর উচ্চবিদ্যালয়ে চলছে জীবাণুনাশের কাজ। মঙ্গলবার। ছবি তুলেছেন দেবানন্দ পাইন৷
উত্তর ২৪পরগণার অশোকনগর বানীভবন বিদ্যাসাগর উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনোজ কুমার ঘোষ জানান এমনিতেই এখন স্কুল নিয়মিত পরিষ্কার ও সানিটাইজেশন করা হয়। যেহেতু স্কুলের অফিস খোলা তাই শিক্ষক থেকে কর্মী সকলেই আসেন। মিড ডে মিলের জন্য ছাত্র ছাত্রী বা তাদের অভিভাবকরা নানান প্রয়োজনে স্কুলে আসেন, তাই সকলের নিরাপত্তার দিকে নজর রাখা হয়৷
কেউ মাস্ক ছাড়া স্কুলে আসলে তাদের মাস্ক দেওয়া হয়। নিয়মিত স্কুল বিন্ডিং সহ টেবিল চেয়ার বেঞ্চ মেঝে পরিষ্কার ও জিবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে নিয়মিত৷ সুরক্ষামূলক ব্যাবস্থা হিসাবে স্কুলে ঢোকার মুখে স্যনিটাইজেশন গেট বসেছে শিক্ষক,কর্মী, ছাত্র স্কুলে ঢোকার সময়েই যাতে জীবাণু মুক্ত হয়। স্কুলে আগেই তৈরি হয়েছে মাস্ক ও সোপ ব্যাংক। যাতে প্রয়োজনে সকলে মাস্ক ও সাবান ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়াও প্রতিটি ক্লাসের ক্লাস মনিটরের কাছে কিছু সংখ্যক মাস্ক রাখা থাকবে সেই ক্লাসের ক্লাস টিচারের তত্ত্বাবধানে, প্রয়োজনে যেন সাথে সাথে সে সব মাস্ক পেতে পারেন সকলে৷ স্কুলে ঢুকে এক মুহূর্ত যেন অসুরক্ষিত না থাকতে হয়।
স্কুল খুলে গেলে দুদিন অন্তর স্কুল বিল্ডিং থেকে ক্লাস ঘর, টেবিল চেয়ার বেঞ্চ সব কিছু স্যানিটাইজ করা হবে। তিনি আরও জানান যেহেতু নবম থেকে দ্বাদশের ক্লাস শুরু হচ্ছে তাই দুরত্ববিধি মানায় কোনো সমস্যা হবে না। ছোট ছোট দলে ভাগ করে ছাত্রদের বসানো হবে। শিক্ষকদের নতুন করে রুটিন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে তাঁরা কি ভাবে কজন ছাত্রদের নিয়ে ক্লাস করবেন। এছাড়াও তাঁদের স্কুলের এক তলা ও দো তলায় বসছে সেন্সর স্যনিটাইজেশন, যাতে কোনো জীবাণুর সংস্পর্শে ছাত্র ছাত্রী রা এলে টা তৎক্ষণাৎ ধরা পরে ও জীবাণুমুক্ত করা যায়।
শিক্ষক মনোজ ঘোষের কাছে জানতে চাওয়া হয় এই ভাবে অল্প সংখ্যক ছাত্র ছাত্রী নিয়ে ক্লাস করতে তাঁদের শিক্ষকদের দায়িত্ব ও পরিশ্রম কিছুটা অবশ্যই কিছুটা বাড়ল। তার উত্তরে তিনি জানান এই বাড়তি পরিশ্রম টা তাঁরা আরো বেশি করে করতে চান। এত দিন স্কুল চত্বরে যে শুন্যতা তা ঘুচতে চলেছে আবার কোলাহলে ভোরে উঠবে ক্লাস ঘর তাঁরা সকলে তার অপেক্ষায়। যেমন বাবা মা অমানুষিক পরিশ্রমে সন্তান কে বড় করে তোলেন তেমনই ছাত্র ছাত্রীরা তাঁদের কাছে সন্তানসম। তারা এই পরিশ্রম অত্যন্ত আনন্দ সহকারে করতে চান।