দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ এক তরুণীর দগ্ধ দেহ ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হল ইংরেজবাজারের কোতোয়ালিতে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন জেলার এসপি অলোক রাজোরিয়া- ডিএসপি প্রশান্ত দেবনাথ সহ পদস্থ পুলিশকর্তারা। ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারা হয়েছে বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
বৃহস্পতিবার ভোরে কোতোয়ালি গ্রাম পঞ্চায়েতের টিপাজনি এলাকায় চাকলা মোড়ে ওই তরুণীর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন এলাকার মানুষ। খবর রটতেই তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয় গোটা এলাকায়। হায়দরাবাদ কাণ্ডের স্মৃতি এখনও টাটকা। সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি হয়েছে বলে দাবি করতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রমাণ লোপাটের জন্য ধর্ষণের পরে ওই তরুণীকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
পুলিশেরও প্রাথমিক অনুমান, ধর্ষণ করে খুন করার পর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ওই তরুণীর দেহ। মৃতের নাম ও পরিচয় এখনও জানতে পারেননি তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা। পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “মৃতদেহের কাছ থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, যা ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। পাশাপাশি মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষণ হয়েছে কি না, বা কী অবস্থায় ওই যুবতীর মৃত্যু হয়েছে তা জানার জন্য সম্পূর্ণভাবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এই রিপোর্ট হাতে আসার পরেই মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”
প্রাথমিক তদন্তের পর ডিএসপি প্রশান্ত দেবনাথ বলেন, “২০ থেকে ২২ বছর বয়সী ওই যুবতীর দেহের ওপর থেকে নীচ পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্নও মিলেছে। আমরা পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ওই তরুণী অবিবাহিত বলেই মনে করা হচ্ছে। মৃতদেহের পাশ থেকে এক জোড়া জুতো উদ্ধার হয়েছে। সেটি কোনও পুরুষের বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি কিছু দেশলাই কাঠি উদ্ধার হয়েছে। আমবাগানের মধ্যে দেহটি পড়েছিল। কেরোসিন তেল ঢেলে দেহ পোড়ানো হয়েছে বলে অনুমান। মৃত ওই যুবতীর যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন দেখে মনে করা হচ্ছে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়ে থাকতে পারে ওই যুবতীকে। তারপরে প্রমাণ লোপাটের জন্য আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় রীতিমতো স্তম্ভিত কোতোয়ালি এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা ভাবতেও পারছেন না যে এরকম ঘটনা তাঁদের এলাকায় ঘটতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দারা, জানিয়েছেন সকালে জমিতে কাজ করতে যাওয়ার সময় আগুনে পোড়া ওই অর্ধনগ্ন যুবতীর দেহ দেখতে পান তাঁরা। এরপরই গ্রামজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। খবর দেওয়া হয় ইংরেজবাজার থানার পুলিশকে।
গৌড় বাংলা হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ার্নেস সেন্টারের সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় দাস বলেন, “এই ধরনের ঘটনা কখনওই বরদাস্ত করা যায় না। অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং নিন্দাজনক ঘটনা। অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন। দোষীদের গ্রেফতার এবং কঠোর শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে নামার কথা জানিয়েছেন মৃত্যুঞ্জয়বাবু।