দেশের সময় ,হাবড়া: অবৈধভাবে মজুদ করে রাখা কাঠের সন্ধানে উত্তর ২8 পরগনার হাবড়া শহরে বন দপ্তরের আধিকারিকেরা পরপর কয়েকদিন ধরে লাগাতার অভিযান চালিয়ে বেআইনিভাবে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের কাঠ মজুদ রাখার অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই চারটি কাঠের মিল বন্ধ করেদেয় বনদপ্তরের কর্তারা৷ দেখুন ভিডিও:
গত মঙ্গলবার দুপুর থেকে হাবড়া শহরের স মিল থেকে এই অভিযান শুরু করেন বন দপ্তরের আধিকারিকরা। এবং তাঁরা স মিল গুলি বন্ধ করে দিয়ে যান। দপ্তরের আধিকারিকরা হাবড়ার বিভিন্ন সমিলে অবৈধ গাছ মজুদ রাখার খোঁজে তল্লাশি চালিয়েছেন। সেই মতোই এই অভিযান বলে জানা গেছে।
এক সপ্তাহ আগে হাবড়ার চোংদা এলাকায় একটি স’ মিল থেকে অবৈধভাবে কয়েক লক্ষ টাকার কাঠ উদ্ধার করে বন দপ্তর। মিলটিকে বন্ধ করে দেন বনদপ্তরের আধিকারিকরা। এরপর হাবড়া থানার পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে বন দপ্তরের বারাসত ফরেস্ট রেঞ্জের আধিকারিকদের একটি দল হাবড়া থানার বিভিন্ন স মিলে অভিযান চালান।
তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনমন্ত্রী করেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। তাঁরই বিধানসভা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় বনদপ্তরের আধিকারিকেরা অবৈধভাবে মজুদ করা কাঠের সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছেন। বন দপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স মিলগুলোতেও অভিযান চালাচ্ছেন ফরেস্ট অফিসারেরা।
বন্ধ স মিল খোলার দাবিতে হাবড়া অশোকনগর কাঠ ব্যবসায়ী এবং কাঠের মিল সমিতির পক্ষ থেকে একজোট হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আগামী শুক্রবার এবং শনিবার দু’দিন হাবড়া এবং অশোকনগর বিধানসভা কেন্দ্রের সমস্ত কাঠের মিল এবং কাঠের দোকান সহ কাঠ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত কিছু বন্ধ থাকবে ৷
মিল মালিক সুব্রত দত্ত বলেন, ‘এখানে আমাদের কোনও গাছের গুড়ি নেই, আমরা শুধু চেরাই করি। মিল চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় সমস্তরকম কাগজপত্র রয়েছে। আধিকারিকরা দেখেছেন। যাদের মাল মজুদ রাখা রয়েছে, তারাও এসেছেন। তাঁরাও কাগজপত্র দেখাচ্ছেন। আধিকারিকদের কথা মতই আগামী দিনে কাজ করতে প্রস্তুত।
মিল মালিক বরুন নন্দী বলেন,গোটা রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন প্রান্তে একই ভাবে চলছে কাঠের ব্যাবসা তবে সেখানে হানা না দিয়ে কেন বারংবার হাবড়ায় হানা দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া হাবরায় কোন অবৈধ কাঠ বিক্রি হয়না। কিছু কাগজপত্র ত্রুটি থাকতে পারে কিন্তু সেটা ঠিক করবার জন্য সময় এর প্রয়োজন কিন্তু কোন কিছু না জানিয়ে বনদপ্তর আচমকাই হানা দিচ্ছে এবং বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে কাঠের মিল।যার ফলে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে হাবরা এলাকার কাঠের শিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার৷
সুমিত দত্ত বলেন , (কাঠব্যাবসায়ী) অশোকনগর এলাকাতেও একই ভাবে প্রায় কয়েক হাজার শ্রমিক জড়িত রয়েছে এই কাঠ ব্যাবসার সঙ্গে ,একেই করোনা পরিস্থিতি আর লকডাউনের জেরে অর্থনৈতিক ভাবে ভেঙে পড়েছে কাঠ ব্যাবসা তার উপরে বনদপ্তরের এই লাগাতার অভিযানে সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ হয়ে গেছে শ্রমিকদের কাজ কর্ম ,ফলে রুজিরুটি হারিয়ে পথে বসতে হবে বহু মানুষকে৷ অবিলম্বে যে সমস্ত মিল গুলোকে বন্ধ করা হয়েছে সেগুলো কে দ্রুত চালু করতে হবে।
সুমিত দত্ত, (কাঠ ব্যাবসায়ী) বলেন,হাবড়ার বিধায়ক তথা রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এর কাছে কাঠ ব্যাবসায়ীরা আবেদন জানিয়েছেন অবিলম্বে বন্ধ মিলগুলো খুলে দেওয়া এবং সুষ্ঠভাবে যাতে ব্যবসা করতে পারেন তাঁরা তার ব্যবস্থা করার জন্য। এই দাবি যদি না মানা হয় তাহলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামবেন ব্যবসায়ী সমিতি গুলো।
বনদপ্তর সূত্রে জানাগিয়েছে, মিলে থাকা সমস্ত কাঠের গুড়িগুলিকে নথিভূক্ত করা হয়েছে। সমস্ত কাঠের সঠিক কাগজপত্র দেখতে চাওয়া হয়। আধিকারিকেরা স মিল মালিকদের কে জানিয়ে দেন, এক মাসের মধ্যে সমস্ত কাগজপত্র অফিসে গিয়ে জমা দিতে হবে। নইলে অবৈধভাবে কাঠ মজুদ করার অপরাধে তার বিরুদ্ধে বন দপ্তরের নিজস্ব আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।