সোশ্যাল মিডিয়া মুখ ঢেকেছে অন্তঃসত্ত্বা হস্তিনী খুনের লজ্জায়!

0
683

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বারুদ-ঠাসা আনারস খেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হস্তিনীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সারা দেশ বিক্ষুব্ধ। প্রতিবাদের ঝড় বইছে সব মহলে। কেরলের মলপ্পুরমের এই ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে, হাতিটি খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ঢুকে পড়লে খুন করা হয় তাকে। বারুদ ভরা আনারসটি খাওয়ানো হয়, যেটি তার মুখের মধ্যেই ফেটে যায় এবং তীব্র যন্ত্রণায় বেশ কয়েক দিন ধরে গ্রামেই ঘুরে বেড়ায় সে। শেষে একটি নদীতে ডুবে দাঁড়িয়ে থাকে ঠায়। শেষমেশ মারা যায় গর্ভবতী হাতিটি।

সোশ্যাল মিডিয়া নিন্দায় সরব হয়েছে, দাবি করেছে শাস্তির। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এর মধ্যে ঘোষণাও করেছেন, অপরাধীদের কড়া শাস্তি হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সরব পশুপ্রেমী সংগঠনগুলো। সাধারণ মানুষও সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের মতো করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন একটানা। কেউ দু’লাইন লিখেছেন, কেউ ছবি এঁকে শেয়ার করেছেন।

পশুহত্যা এ দেশে নতুন নয়। নতুন নয় নৃশংসতাও। কিন্তু এই হাতিটির কষ্ট পেয়ে মারা যাওয়া যেন সবাইকে নাড়িয়ে দিয়ে গেছে। নাড়িয়ে দিয়ে গেছে ময়নাতদন্তের পরে বেরিয়ে আসা তার জন্ম না নেওয়া সন্তানের দেহের ছবিটি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত বনকর্তা মোহনের মর্মভেদী বাক্যগুলি মানুষকে স্পর্শ করেছে। চরম কষ্ট পেয়েও কোনও ক্ষতি না করে হাতিটির নিঃশব্দে মৃত্যুবরণ কোথাও মানুষকে অপরাধী করে তুলেছে। তাই হয়তো কেউ মনুষ্য প্রজাতির প্রতিনিধি হওয়ার কারণেই ক্ষমা চেয়েছেন টুইটারে।

কাউকে আবার ধাক্কা দিয়েছে এই মর্মন্তুদ ঘটনাটির ঘটনাস্থল। ‘ঈশ্বরের আপন দেশ’ বলে পরিচিত কেরলে প্রকৃতি আর মানুষ অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর এই রাজ্যটি অনেকেরই ভালবাসার জায়গা। এ রাজ্যের শিক্ষাও বাকি দেশের কাছে দৃষ্টান্ত। তাই কেউ বা দাবি করেছেন, কেরলে সাক্ষরতার হার বেশি মানেই যে সেখানে শিক্ষার প্রতিফলন ঘটবে, তা নয়।

কেউ আবার এ যন্ত্রণা থেকেই মনে মনে ভেবেছেন এক অন্য দুনিয়া। যেখানে এখনও সুস্থ আছে ছোট্ট হাতিটি, জন্ম নিয়েছে নিরাপদে। মায়ের কাছে আদর খাচ্ছে সে। গল্প করছে জীবনের। যেমনটা হওয়ার কথা ছিল। সেই নেটিজেনের বিশ্বাস, এমনটাই ঘটছে, তবে তা ‘ঈশ্বরের আপন দেশ’-এ নয়।

এই ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই দায়ের হয়েছে এফআইআর। কেউ যদিও ধরা পড়েনি এখনও। ঠিক কতদিন আগে ওই ঘাতক আনারস খেয়েছিল হাতিটি, কোথায় কোথায় ঘুরে বেরিয়েছিল– বিস্তারিত জানা যায়নি এখনও। তবে এতদিন খেতে না পেরে যন্ত্রণা নিয়ে তাকে ছটফট করতে দেখেও কেন কেউ বনদফতরে খবর দেয়নি, সে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। কিন্তু প্রশ্ন বা বিশ্লেষণের চেয়েও সোশ্যাল মিডিয়া উপচে পড়েছে যন্ত্রণায়। কাতর হয়েছে আসন্ন সন্তান-সহ মারা যাওয়া প্রাণীটির কষ্টে।

Previous articleবিদ্যুৎ, কেব্‌ল,মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারীদের সর্তক করলেন মুখ্যমন্ত্রী
Next articleYour Shot : 📸 Halo around the sun over pender

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here