“ট্রাভেলগ” (পর্ব-৫)লিখছেন~ দেবন্বিতা চক্রবর্তী,দুপুরের ঝলমলে আলোর মধ্যে ওল্ড মানালির পাহাড়ের উপরের চটিতে যখন পৌঁছালাম তখন চারিদিকের শোভা দেখে চোখ জুড়িয়ে দিচ্ছে ৷ সারি সারি পাহাড় গুলো ধাপে ধাপে উঠে গেছে আকাশের দিকে আর কেউ যেন তাদের গায়ে ঘন নীল রঙ ঢেলে দিয়েছে । আমরা এখন এসে গেছি মনু টেম্পলে ৷ব্রহ্মাপুত্র মনু পৃথিবীর সর্বপ্রথম মানুষ যিনি সশরীরে ব্রহ্মার বরে এই “মানালসু” বা মানালিতে এসে বাস শুরু করেন ,আর এই মন্দিরেই ছিলেন তিনি ।ধীরে ধীরে তার থেকে মানুষের জন্ম হয় ও বসতি গড়ে ওঠে ৷অসাধারন কাঠের কারুকার্যে মন্দিরের গড়ন অপূর্ব । মন্দিরের ভিতরের স্তব্ধতা ও স্তিমিত পরিবেশ মনকে জুড়িয়ে দেয় ৷ অনেকক্ষণ মনু টেম্পলে কাটিয়ে আমরা স্থানীয় দোকানে কেনাকাটার জন্য একটু উঁকিঝুঁকি মেরে আমরা আবার চললাম মানালিতে হোটেলের দিকে কারন হোটেল ছাড়ার সময় এসে গেছে , আঁকাবাকাঁ রাস্তা দিয়ে নামতে নামতে অপার্থিব সৌন্দর্যের মধ্যেও মনটা ভার হয়ে গেল ।আমাদের যাদের পায়ের তলায় সর্ষে তারা কোথাও গেলেই কয়েক দিনের মধ্যেই যেন সেই জায়গাটার প্রতি এক অদ্ভুত আত্মীয়তা তৈরী হয় তা ভেঙে বেরনো খুবই কঠিন । যেমন আমাদের হোটেলেন নীচেই চা ভাজির দোকানের কর্মচারি ও মালিকদের সাথে দারুন আড্ডা হতো আর প্রচুর গল্প হতো মিশ্র ভাষায় , আর তারাও যেন আমরা চলে যাব বুঝেই ছল ছল চোখে বিদায় দিলেন , হয়তোবা তাদের আনাবিল ব্যবহারের জন্যই মানালীর এই ছোট্ট হোটেলটা এত প্রিয় হয়ে গেছিল ৷যাই হোক দুপুরে পেট ভরে পাঞ্জাবী খাবার যথা কুলচা , বাটার চিকেন, উৎকৃষ্ট তড়কা ডাল পেট ভরে খেয়ে নিয়ে মানালিকে টা টা করে ভারাক্রান্ত মনে বেড়িয়ে পড়লাম নতুন পথের উদ্দেশ্যে ৷যেতে যেতে পথেই স্থানীয় বাসিন্দাদের বিয়ের কিছু রসম দেখার সৌভাগ্য হল । সত্যি ঘরের বাইরে বেড়লে কত কিই না জানা যায় তখন বাচ্চাদের আনন্দ আর ছোটদের আনন্দে কোনো তফাত থাকে না ৷বিকট রকমের বড় একটা পালকি নিয়ে মহানন্দে নাচ গান করতে করতে বর বাবাজীবন শশুর বাড়িতে যাচ্ছে বউ আনতে , পুরো ঘটনার বিবরণ দিল আমাদের পাঞ্জাবী ড্রাইভার ৷ছবি- লেখক,