দেশের সময় প্রতিবেদন: জল্পনা শুরু হয়েছিল আগেই,মকুল রায় আচমকা বিধাননগরের মেয়রের বাড়ি গিয়েে লুচি আলুর দম যে এমনি এমনি খেয়ে আসেন নি তা অনেকেই অনুমান করেছিলেন।শুধু সময় নিয়ে ব্যপারটা গুছিয়ে নেবার জন্যই সভ্যসাচী দত্ত তাঁর দল তৃমমূলকে জানিয়েছিলেন মকুল রায় তাঁর সঙ্গে স্রেফ সৌজন্য করতে বাড়িতে এসেছিলেন।
আশঙ্কার মেঘ তৃণমূলের অন্দরে তখন থেকেই ছিল,তড়িঘড়ি সুজিত বসু ও ফিরহাদ হাকিম এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকরা অবস্থা সামাল দিতে সভ্যসাচীকে দিয়ে বলিয়ে নেন,তিনি তৃণমূলে আছেন,ছিলেন ও থাকবেন।তবে আজকের রাজনীতিকে যারা চেনেন তারা তো সবাই জানেন,আজকের রাজনীতিতে কথার কোন দাম নেই,ফায়দাটাই সব।
নেতারা সব তাই সকালে এক কথা বলেন,আর বিকেলে আর এক কথা।বিধাননগরের মেয়র সভ্যসাচী দত্ত তাই শেষ পর্যন্ত বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন কীনা তা তাঁর কথার উপর নির্ভর করছে না,নির্ভর করছে রাজনৈতিক অংকের উপর।আর সেই অংক বলছে সভ্যসাচী দত্তের বিজেপিতে যোগ দেওয়াটা এখন স্রেফ শুধু সময়ের অপেক্ষা।মকুল রায় ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন,সভ্যসাচী বিজেপির সঙ্গেই গতআছেন,অন্যদিকে তৃণমূলের উত্তর চব্বিশ পরগণার জেলা সম্পাদক ও রাজ্যের খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুবাবুর দাবি সভ্যসাচী তৃণমূলেই থাকবেন।
এই চাপানউতোরের পাশাপাশি সূত্রের খবর সভ্যসাচী তাঁর পরবর্তী রাজনৈতিক অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন।তিনি এখন বিজেপিতে তাঁর ওজন বাড়াতে একাধিক তৃণমূল বিধায়ককে বিজেপিতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাতে ব্যস্ত।শোনা যাচ্ছে উত্তর চব্বিশ পরগণার বেশ কিছু বিধায়ক ও বিধাননগরের একাধিক কাউন্সিলার দল বদলে বিজেপিতে যেতে রাজি,তবে তারা একটু দেখে নিতে চায়,লোকসভার ফল কী হতে যাচ্ছে।দিল্লির সরকারে বিজেপি ফিরে আসলে অনেকেই বিজেপিতে যাবার জন্য তৈরি বলে জানা যাচ্ছে।
সেক্ষেত্রে সভ্যসাচী একেবারে সদলবলে বিজেপিতে যাবে বলে খবর।দোলের দিন সভ্যসাচী দত্ত যে ভাবে ভারত মাতার জয় বলে স্লোগান দিয়েছেন,যে ভঙ্গিতে বলেছেন যে তিনি বিধায়ক থাকুন বা না থাকুন দেশকে রক্ষা করতে হবে তা থেকে একটা বার্তা পরিষ্কার তিনি মানসিক ভাবে দল বদলের জন্য তৈরি হয়ে গেছেন।বাকিটা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের উপর নির্ভর করছে।
সম্প্রতি অর্জুন সিং ও সভ্যসাচী দত্তকে নিয়েই নতুন অংক সাজাচ্ছেন মুকুল রায়,এমনটাই খবর।তৃণমূলের অন্দরে একটা ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করতে পেরেছেন মুকুলবাবু।শোনা যাচ্ছে অনেকদিন ধরে দলের মধ্যে একঘরে হয়ে থাকা সভ্যসাচীকে দিয়ে উত্তর চব্বিশ পরগণা জুরে তৃণমূলের অন্দরে একটা ব্যাপক ভাঙন ধরাতে চেষ্টা করছে বিজেপি,সেই অপারেশন নাকি কিছু দিনের মধ্যেই বাস্তবায়িত হতে চলেছে।সিন্ডিকেটের একটা বড় অংশ নাকি ক্ষদ্ধ রাজ্যের শাসক দলের উপর সেটাও নাকি বিজেপির দিকে যাচ্ছে।
তবে এই ভাঙনের বিষয়টা তখনই বোঝা যাবে যখন বিজেপি দিল্লিতে আবার ক্ষমতায় ফিরবে,ও এ রাজ্যে তৃণমূলের ক্ষমতার রাশ আলগা হওয়ার ইঙ্গিত মিলতে শুরু করবে।তবে তৃণমূল শিবিরে যে একটা পালাবদলের ধ্বণি ষোনা যাচ্ছে তা পরিষ্কার,এখন দেখার সেটা মমতা কতটা সামাল দিতে পারেন।
সভ্যসাচী দত্তের ঘুরি যে তৃৃণমূল থেকে কেটে গেছে তা নিশ্তিত করে বলে দেওয়া যায়,সেই কাটা ঘুরি তৃণমূলকে কতটা বেগ দেয় সেটাই এখন দেখার,সভ্যসাচীর দাবি একাধিক কাউন্সিলার ও বিধায়ক তাঁর সঙ্গে দল বদল করবেন,সেই দাবির সত্যতা বুঝতেও আমাদের কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।