সভাপতি পদ থেকে সরছেন দিলীপ? কী বলছেন মুকুল রায়,স্বপন দাশগুপ্ত,কী জানালেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়!

0
715

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দরজায় কড়া নাড়ছে বিধানসভা নির্বাচন। দলের সাংগঠনিক ক্ষমতা যাচাই করতে শীঘ্রই বাংলায় আসছেন বিজেপির ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ অমিত শাহ। তার আগেই রাজ্য বিজেপিতে বড়সড় পরিবর্তন। রাজ্যে দলের সাধারণ সম্পাদকের জায়গায় সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে আনা হয়েছে অমিতাভ চক্রবর্তীকে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। দিলীপ ঘনিষ্ঠ সুব্রতবাবুর সরতেই প্রশ্ন উঠেছে, এবার কি তবে দিলীপ ঘোষের পালা ? যদিও এই জল্পনায় জল ঢেলেছেন খোদ মুকুল রায়। 

মুরলীধর লেনে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে,লোকসভা নির্বাচনে সভাপতির সঙ্গে সাধারণ সম্পাদকের জুটিতেই ২ থেকে ১৮ আসন পেয়েছে বিজেপি। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরেই দলে দিলীপ ঘোষের আলটপকা মন্তব্য নিয়ে বিব্রত হতে হচ্ছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। দলীয় সূত্রে খবর, দলে নতুন বনাম পুরোনোর গোষ্ঠী কোন্দল সামাল দিতে সেভাবে সক্রিয় ছিলেন না দিলীপবাবু। তাই বার বার তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের সঙ্গে পুরোনো বিজেপি নেতাদের সংঘাত বাঁধছিল। যা ভালো চোখে দেখেনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

কিছু ক্ষেত্রে রাজনীতিতে দিলীপের একরোখা মনোভাবও চিন্তা বাড়িয়েছে গেরুয়া শিবিরের। অনেকের মতে, সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে তাই দিলীপকে বার্তা দিতে চেয়েছে ‘সেন্ট্রাল লিডারশিপ’।

যদিও এই খবরকে নেহাতই ‘অলীক কল্পনা’ বলে মনে করছেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম কান্ডারি মুকুল রায়। এ বিষয়ে মুকুল রায় বলেন, ‘একদমই বাজে খবর। যারা এই বিষয়টি ছড়াচ্ছেন, তারাও ঠিক কাজ করছেন না। দিলীপবাবু আছেন ও থাকবেন।’ একই কথা বলেছেন বিজেপির রাজ্য সভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘এটা আমার কাছে একটা অস্বাভাবিক খবর। যাকে বলে ফেক নিউজ।’

রাজ্য রাজনীতির সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে এলেও এখন দলে দর বেড়েছে মুকুলদের। সেটা ভালো ভাবেই বুঝেছেন দিলীপপন্থীরা। যদিও ২১ শের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে সম্প্রতি প্রকাশ্য সংঘাতে জড়াতে দেখা যায়নি তাদের। যদিও ছোবল না দিলেও ফোঁস করেছেন কেউ কেউ। সম্প্রতি দলের যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁয়ের সঙ্গেই একচোট লেগে যায় রাজ্য সভাপতির। যদিও প্রকাশ্যে দিলীপের নাম উল্লেখ করেননি বিষ্ণুপুরের সাংসদ। সকালে যুব মোর্চার পদ ছাড়ার কথা বলে দুপুরেই ফিরে আসেন তিনি। পরে অবশ্য দিলীপ ঘোষের কাছে বিজয়ার প্রণাম নিতে যান সৌমিত্র।

এদিকে মুকুলপন্থীরা যাই বলুন না কেন, দিলীপের রাজ্য সভাপতি পদ নিয়ে মুখ খুলেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। তিনি বলেন, ‘এটা কোনও অন্য দল নয়। বিজেপিতে সবকিছু নির্বাচিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়। তিন বছর দিলীপবাবু রাজ্য সভাপতি পদে ছিলেন। ফের তিনি রাজ্য সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তাই এই ধরনের জল্পনার কোনও ভিত্তি নেই।’

কী জানালেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়:

দিলীপ ঘোষকে সভাপতি পদ থেকে সরানো হতে পারে কিংবা দিলীপ ঘোষ নিজেই পদত্যাগ করতে পারেন। সম্প্রতি এমন খবরে তোলপাড় হয়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। এবার সেই বিতর্কে জল ঢাললেন কৈলাশ বিজবর্গীয়। সংবাদসংস্থা পিটিআইকে তিনি জানালেন, ২০২১ সালে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে দিলীপ ঘোষই থাকবেন দলের সভাপতি পদে। সেইসঙ্গে দিলীপকে সরানোর খবরটি ভুয়ো ও রাজনৈতিক মদতপুষ্ট বলেও দাবিও করেন তিনি। সবশেষে কৈলাশ বিজয়বর্গীয় সাফ জানিয়ে দেন, দিলীপ ঘোষকে সরানোর কোনও প্রশ্নই নেই এখন। 

উল্লেখ্য,কয়েকদিন আগেই রাজ্য বিজেপির দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) পদে বড়সড় রদবদল হয়। সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে নিয়ে আসা হয় অমিতাভ চক্রবর্তী। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপেই পুরো বিষয়টি হয়। সুব্রত চট্টোপাধ্যায় দিলীপ ঘোষের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। এহেন নেতা সরে যাওয়ার পরেই প্রশ্ন উঠতে থাকে এবার কি দিলীপ ঘোষের পালা ? তবে কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র দাবি অনুযায়ী বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা এখন সেই রাস্তায় যাচ্ছেন না। 

যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি আবার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ফিরে আসেন, সঙ্গে জানিয়ে দেন তিনি পদত্যাগ করবেন না। বিজয় দশমীর দিন দিলীপ ঘোষের কাছে গিয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎও সারেন তিনি।

অন্যদিকে জেপি নাড্ডার সফর বাতিল করে এরাজ্যে আসছেন অমিত শাহ। বেশ কয়েকটি বৈঠক করবেন তিনি। সংগঠনের হাল কেমন তা তিনি খতিয়ে দেখবেন। মূলত দক্ষিণবঙ্গেই থাকবেন তিনি। কয়েকদিন আগে জেপি নাড্ডা উত্তরবঙ্গে দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে গিয়েছেন। এবার ২দিনের শাহের এই সফরের দিকে তাকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহল। 

Previous articleফের বিস্ফোরক মন্তব্য শুভেন্দুর,বললেন “প্যারাসুটেও নামিনি, লিফটেও উঠিনি, সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে উঠেছি”!
Next articleদেশের সময় ই পেপার// Desher Samay e paper

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here