দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ : রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ইদানীং বেশ কয়েকটি গান রেকর্ড করেছেন। সেই সঙ্গে রাজনীতির বাজার ময় চাউর হয়েছে, রাজীব কোনও কারণে অসন্তুষ্ট। মানুষের জন্য যতটা কাজ করার দক্ষতা বা যোগ্যতা তাঁর রয়েছে, সেই তুলনায় তিনি বিশেষ কিছু পাননি।
রাজনীতিতে এ হেন প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির অভিমান বরাবরই ছিল, আছে, থাকবে। কিন্তু তার পরেও, একুশের ভোটের আগে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁকে ডেকে যদি কথা না বলতেন, তা হলে তো অভিমান বাড়তেই পারত। বিশেষ করে দলবদলের মরশুম এখন। রাজীব তখন এও গাইতে পারতেন, ‘আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল… শুধাইল না কেহ!’
তবে সেই পরিস্থিতি তৈরি হতে না দিয়ে রবিবাসরীয় সকালে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর নাকতলার বাড়িতে ডেকে পাঠিয়েছিলেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে সেখানে উপস্থিত ছিলেন ‘নান আদার দ্যান’ প্রশান্ত কিশোর!
এর পর শুরু বৈঠক, তারপর ক্ষোভ থাকতেই পারে। আলোচনার মাধ্যমে সেই সমস্যা মিটিয়ে নিতে হবে। ভবিষ্যতে আরও আলোচনা হবে। আবার ডাকা হলে আসব। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও দলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে বৈঠকের পর এ কথা বললেন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তাঁর সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর নামা না-জোড়ার অনুরোধ করেন রাজীব।
শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সমঝোতার প্রক্রিয়া আগেই ভেস্তে গিয়েছে। দলের আরও এক বিক্ষুব্ধ নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিরোধ মেটানোর চেষ্টায় তত্পর হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। রবিবার সকালে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে তাঁর সঙ্গে বৈঠকে বসেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে ছিলেন তৃণমূলের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরও।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে রাজীব বলেন, ‘দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ডেকেছিল, এলাম। আগামী দিনের একাধির রণনীতি নিয়ে বৈঠকে কথা হয়েছে। এর বেশি কিছু বলব না।’ এই বৈঠকে তিনি সন্তুষ্ট কি না, এই প্রশ্ন করা হলে রাজীব বলেন, ‘দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ ব্যাপারে সন্তুষ্ট-অসন্তুষ্ট হওয়ার কিছু নেই। আগামী দিনে আবার বৈঠক হবে।’ শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গ তোলা হলে রাজীব বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আমার নাম জড়াবেন না। শুভেন্দুর মত ব্যক্তিগত, আমারও তাই। পোস্টার কে লাগিয়েছে, তা আমি জানি না, সমর্থনও করি না। দলের ভিতরে ক্ষোভ আলোচনার মাধ্যমে মিটে যাবে।’ সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারীর মতোই কলকাতা ও হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় রাজীবের নামে পোস্টার পড়ে। তাতে লেখা ছিল, ‘আমরা দাদার অনুগামী’ বা ‘কাজের মানুষ কাছের মানুষ৷
কিছুদিন আগেই শুভেন্দু অধিকারীর পাশাপাশি দলে থেকে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন দলের আর এক সময়ের নির্ভরযোগ্য নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। দিনকয়েক আগেই কলকাতার একটি অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করার পরও পিছনের সারিতে ঠেলে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। দুর্নীতিগ্রস্ত, অস্বচ্ছ, কুচক্রীদের শুধু স্তাবক বলেই সামনের সারিতে আনা হচ্ছে। এখন স্তাবকতার যুগ। ওই মঞ্চে ক্ষোভ উগরে দিয়েই থেমে থাকেননি তিনি। দুর্নীতিগ্রস্ত, স্তাবকদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে একজোট হওয়ার ডাকও দেন রাজীব।
দক্ষিণ কলকাতায় একটি মঞ্চ থেকে রাজীব বলেন, ‘এখন সময় এসেছে যে মুখগুলোকে মানুষ পছন্দ করেন না, মানুষের কাছে যাঁদের গ্রহণযোগ্যতা নেই, তাঁদের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার। এঁদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আওয়াজ তুলতে হবে।