ইন্দ্রজিৎ রায়, শান্তিনিকেতন
শান্তিনিকেতনের স্টেট ব্যাংক সংলগ্ন জমি দখলমুক্ত করতে পৌষ মেলা মাঠের প্রধান ফটকের সামনে তৈরি হওয়া মঞ্চে ১২ ঘণ্টার প্রতীকী অনশনে বসলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী; অনশন সভায় যোগ দিয়েছেন বিশ্বভারতীর বিভিন্ন বিভাগের অধ্যক্ষ, অধ্যাপক ও অধ্যাপিকা ও কর্মীরাও। এর পাল্টা হিসাবে কবিগুরু হস্ত শিল্প উন্নয়ন সমিতির দোকানদাররাও প্রতিবাদ মঞ্চ তৈরি করে অবস্থানে বসেছেন।
সোমবার সকালে অনশন মঞ্চে যোগ দেওয়ার আগে বিশ্বভারতীর উপাচার্য সহ অন্যান্য আধিকারিকরা প্রথমে শান্তিনিকেতনের ছাতিমতলা ও পরে উপাসনা গৃহের গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ কে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানান। পরে মৌন মিছিল এর মাধ্যমে সকাল ৪ টায় অনশন মঞ্চে যোগদান করেন। উপাচার্য ছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের অধ্যক্ষ অধ্যাপক অধ্যাপিকা ও কর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
উল্লেখ্য, এই বিতর্কিত জমি নিজেদের দাবি করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ প্রথমে নোটিশ দিয়ে জবর দখল মুক্ত করতে একটি নির্দেশিকা জারি করেন দোকানদারদের, বেঁধে দেওয়া হয় সময়সীমাও। কিন্তু সময় পেড়িয়ে গেলেও দোকানদাররা তাদের অবস্থানে অনড় থাকায় গত ১৩ ই জুলাই পড়ুয়াদের নিয়ে একটি মিছিল বের করেন কর্তৃপক্ষ “বিশ্বভারতীর জমি ফিরিয়ে দাও” এই মর্মে। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ না হওয়ায় শেষমেষ প্রতীকী অনশন এর মাধ্যমেই দখলমুক্ত করতে চাইছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য- বলে ধারণা ঘনিষ্ঠ মহলে।
সূত্রের খবর আগামী ১৬ ই আগস্ট শান্তিনিকেতন রবীন্দ্র ভবনের পুনর্নিমিত শ্যামলী গৃহের উদ্বোধনে আসছেন ভারতের উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু, এছাড়াও ২০২o সালে বিশ্বভারতী মূল্যায়নের জন্য ন্যাকের প্রতিনিধিদলের আসার কথা। তাই ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যায়নের কথা মাথায় রেখে বিশ্বভারতী কতৃপক্ষ এবার বিশেষ সচেতন,
কেননা গতবারের ন্যাকের মূল্যায়নে ক্যাম্পাস সৌন্দর্যায়নে শূন্য পেয়েছিল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়।
তাই এবারে কোন খামতি রাখতে চাইছেন না উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তবে কঠোর ভাবে না আলোচনার মাধ্যমে বার করতে চাইছেন সুরাহার পথ- জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, কবিগুরু হস্ত শিল্প উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক আমিনুল হুদা জানান এই হস্তশিল্পের বাজার প্রায় ৪০ বছর ধরে কবিগুরুর আদর্শ মেনে ব্যবসা চালিয়ে আসছে। এই ব্যবসার সাথে যুক্ত প্রায় ১৪০ টি হস্তশিল্প পরিবার এবং ব্যবসার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে আছেন প্রায় ২000 জন।
এতগুলো পরিবার তাদের রুজি রুটি রোজগারের জন্য এই হস্তশিল্প বাজারের উপর প্রত্যক্ষভাবে নির্ভরশীল। তাই বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের ব্যবসা চালিয়ে যাব। আন্দোলন গণতান্ত্রিক মাধ্যম হলেও উভয় পক্ষের শান্তিপূর্ণ সহবস্থান এক অনন্য নজির গড়েছে শান্তিনিকেতনে। সিদ্ধান্ত কি হবে তা বলবে সময়।