

পোঁষালী কর , দেশের সময়
কলকাতা : লেক ইউথ কর্নার দুর্গাপুজো কমিটি এবছরের উৎসব যাত্রা শুরু করল শুভ খুঁটি পূজার মধ্য দিয়ে। উপস্থিত ছিলেন ৮৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শ্রীমতী মণিশা বসু এবং ৮৭ নং ওয়ার্ডের ব্লক প্রেসিডেন্ট শ্রী দেবাশিস বসু।

এবারের থিম “শিল্পের শক্তি: গ্রামীণ হস্তশিল্পের গৌরব”, যার ভাবনা কুনাল রায় চৌধুরী (আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত চিএ সাংবাদিক ও ক্লাবের সহযুগ্ম সম্পাদক)।

বাংলার গ্রামীণ কারুশিল্পীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই থিমের মাধ্যমে প্রকাশ করা হচ্ছে তাঁদের অপরিসীম অবদান, যাঁরা যুগ যুগ ধরে বাংলার সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।

থিম নিয়ে কুনাল রায় চৌধুরী বলেন: “গ্রামের মানুষ, তাঁদের শিল্প আর ঐতিহ্যই বাংলার প্রাণস্পন্দন। শিল্পের শক্তিই আমাদের শিকড়, আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়। এই পূজোর মাধ্যমে আমরা কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই সেই সব শিল্পীদের, যাঁরা হাতের কাজের মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতিকে জীবিত রেখেছেন। মা দুর্গা শক্তি ও সৃষ্টির প্রতীক – আর এই শিল্পকর্মে আমরা তাঁরই আশীর্বাদ অনুভব করি।”

এবারের প্রতিমা নির্মাণ করছেন দক্ষ শিল্পী শ্রীনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্যান্ডেল সাজাচ্ছেন কৃষ্ণনগরের বিশ্বাস ডেকোরেটরস। গ্রামীণ কুঁড়েঘরের আদলে নির্মিত এই মণ্ডপে ব্যবহৃত হয়েছে বাংলার সোনালি আঁশ, পাট। পাটের প্রতিটি তন্তু, প্রতিটি বাঁধনে ফুটে উঠছে সৃজনশীলতা আর ঐতিহ্যের ছাপ।
ক্লাবের সভাপতি কল্যাণ রায় চৌধুরী বলেন:“এই প্যান্ডেল কেবল সাজসজ্জা নয়; এটি আমাদের ঐতিহ্যের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা। প্রতিটি পাটের সুতোর মধ্যে, প্রতিটি গাঁটের ভাঁজে আমাদের শিকড়ের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। শিল্পই আমাদের আসল শক্তি।”“আমাদের পুজো শুধু উৎসব নয়, এটি বাংলার হস্তশিল্পকে প্রদর্শনের এক সাংস্কৃতিক মঞ্চ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই ঐতিহ্য পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।”

“শিল্পের শক্তি” থিমের মূল বার্তা – বাংলার হস্তশিল্পকে রক্ষা করা, মর্যাদা দেওয়া। প্রতিটি পাটের আঁশে লুকিয়ে আছে বাংলার আত্মা – দৃঢ়তা, বিনয় আর সৃষ্টিশীলতার প্রতীক। মা দুর্গা যেমন শক্তির দেবী, তেমনই সৃষ্টিরও দেবী। মানুষের হাতে গড়া শিল্পকর্মেই তাঁর প্রকৃত আশীর্বাদ প্রকাশ পায়।
লেক ইউথ কর্নারের দুর্গাপুজো ২০২৫ তাই শুধু উদযাপন নয়; এটি ঐতিহ্যের নবজীবন, গ্রামীণ শিল্পীদের অমোঘ স্পিরিটের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য।