মেদিনীপুরের সমাবেশ মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়: লাইভ হাইলাইটস:
দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সোমবার, মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে যে সভা করতে চলেছেন তৃণমূলনেত্রী তা যেন আক্ষরিক অর্থে ‘ঐতিহাসিক’। ৯৮ সালে তাঁর অনুগামীদের নিয়ে কংগ্রেস ভেঙে বেরিয়ে এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বাইশ বছরে তাঁর হাতে গড়া সেই দলের ওঠা পড়া যাই থাকুক, ভাঙনের সংশয় কখনও ছিল না। অথচ এখন, ভাঙনের সংশয় যেন গ্রাস করতে চাইছে। দিদির দল ভেঙে বেরিয়ে যেতে চাইছেন দাদার অনুগামীরা। এবং ক্রমশই সেই সংক্রমণ বাড়ছে। অর্থাৎ দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
কী কী বলছেন মুখ্যমন্ত্রী? দেখুন লাইভ।
ছত্রধর মাহাতোকে আমি আজ আসতে বলেছিলাম। আমরা অতীতকে ভুলি না। ওকে ২০০৮ সালে ওকে মাওবাদী তকমা দিয়ে ওকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। যখন ওকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তখনও তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য ছিল।
ছত্রধর মাহাতোকে আমি আজ আসতে বলেছিলাম। আমরা অতীতকে ভুলি না। ওকে ২০০৮ সালে ওকে মাওবাদী তকমা দিয়ে ওকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। যখন ওকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তখনও তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য ছিল।
ভারতবর্ষে কৃষকদের আন্দোলন হচ্ছে। আজ অনেক জেলায় নবান্ন আছে।নতুন ধান হাতে নিয়ে শপথ করে বলছি আমরা কৃষকদের সাথে আছি সাথে থাকবো, কৃষকদের আন্দোলনে আমরা ছিলাম, আমরা আছি।
আমরা ২০০৮ সাল থেকে বনধের বিরোধিতা করে আসছি, তবে বর্তমান পরিস্থিতে কৃষকদের স্বার্থে কালকের কৃষকদের আন্দোলনকে আমরা দল হিসেবে সমর্থন করছি।
আমি নন্দীগ্রাম ভুলিনি, সিঙ্গুর ভুলিনি, নেতাই ভুলিনি। কাল সারা বাংলায় ব্লকে ব্লকে ধর্না চলবে। আন্দোলনকে সমর্থন জানাচ্ছে আমাদের অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি।
সিপিএম আর বিজেপি ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছো। টাকা ছড়াচ্ছো। দাঙ্গা লাগাচ্ছো। কুতসা করছো। চক্রান্ত করছো। দল ভাঙছো। মানুষের ভালবাসা ভাঙছো। জেনে রেখে দাও, ভারতবর্ষের মাটি থেকে তোমাদের উতখাত হওয়ার সময় এসেছে।
কৃষিবিল বেআইনি। হয় প্রত্যাহার করো নয় বিজেপি সরকার ক্ষমতা ছাড়ো।
যে কোনও মুহূর্তে ভারতীয় রেল হয়ে যাবে সেল। আমরা রেলশ্রমিকদের পাশে আছি। আমরা রেলকে বেসরকারি করতে দেব না।
আমাদের জওয়ানরা দেশকে রক্ষা করতে লড়াই করে। আজ বলছে অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিও বেসরকারি হয়ে যাবে।
কোল মাইনে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক কাজ করে, বলছে বেসরকারি করে দেবে।
ব্যাঙ্কগুলো মার্জ করে দিচ্ছে। এয়ার ইন্ডিয়া বিক্রি। কয়লা বিক্রি। প্রতিরক্ষা বিক্রি। কৃষি বিক্রি। তাহলে থাকবেটা কী? জিজ্ঞেস করুন কমরেডদের।
বামপন্থীদের মধ্যে অনেকে বিজেপিকে সমর্থন করেন না, আমি তাঁদের স্যালুট জানাই। কিন্তু সিপিএম নামের যে দলটি একের পর এক সন্ত্রাস করেছিল, তারা হয়ে গেছে বিজেপির সবচেয়ে বড় রক্ষক। বিজেপি হয়েছে তাদের ভক্ষক। আর কংগ্রেস কখন কার গালে চুমু খেয়ে হয়েছে তক্ষক। অঙ্কা-বঙ্কা-সঙ্কা। এরা নাকি দেশ চালাবে!
বাংলা ভাল আছে, তাই তোমাদের এত হিংসা। বহিরাগতদের বাংলা দখল করতে আমরা দেব না, দেব না, দেব না।
মা-বোনেরা যেমন রাঁধে, চুলও বাঁধে। আপনারা সব পারেন। তেমন দিন এলে আপনারা হাতাখুন্তি নিয়ে রাস্তায় দাঁড়াবেন।
যখন তৃণমূল প্রথম তৈরি হয়েছিল, অনেকে বলেছিল ছাগলে খেয়ে নেবে, গরু মাড়িয়ে দেবে। মনে রাখবেন, মাটিতে পেরেক পুঁতলে মাটি গুঁড়িয়ে যায়। কিন্তু পাথরে পেরেক পুঁতলে পেরেকটাই ভেঙে যায়।
এখন তৃণমূল বটবৃক্ষ হয়ে গেছে। বিজেপি জেনে রেখো, তুমি যে কোনও দল কিনতে পারো, তৃণমূলকে পারবে না। চ্যালেঞ্জ রইল।
পিএম কেয়ারে কত টাকা জমা পড়েছে, শ্বেতপত্র বের করুক।
সংবাদমাধ্যমগুলোকে বলে দেওয়া হচ্ছে, এটা বলা যাবে ওটা বলা যাবে না। দরকারে গুলি করে মেরে দিয়ে বলবে কোভিডে মরে গেছে। এরকম একটা জঘন্য রাজনৈতিক দল। মিথ্যের ডাস্টবিন নিয়ে বসে আছে আর বড়বড় কথা বলছে।
মনে রাখবেন, ৩৪ বছর ধরে লড়ে এখানে এসেছি। কারও দয়ায় আসিনি। মনে নেই, কত হত্যা হয়েছে কেশপুরে, মনে নেই নন্দীগ্রামে কত মানুষকে খুন করেছেন। নেতাইয়ে কীভাবে মা-বোনদের উপর অত্যাচার করতেন! জঙ্গলমহলের ম্যাক্সিমাম জায়গা আপনারা অশান্ত করে দিয়েছিলেন।
সাধের ঝাড়গ্রামে লোকে যেতে পারত না। মেদিনীপুরের কত মহান জায়গা আছে, স্বাধীনতা আন্দোলনের রক্ত আছে, মানুষকে পছন্দ করে। দেশকে ভালবাসে। অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না।
রাফেল কেলেঙ্কারি দুর্নীতি হয় না। পিএম কেয়ারের টাকা মারলে দুর্নীতি হয় না। তোমার ইউপি, বিহার, দিল্লিতে কী চলছে?
আম্ফানে কত টাকা খরচ হয়েছে হিসেব দাও… আরে তুই টাকা দিয়েছিস? দিয়েছিস টাকা? তুই হিসেব চাইছিস! তুই আগে জনগণকে হিসেব দে। টাকা দেব আমরা, উনি আমার কাছে হিসেব চাইবেন!
সব দেব আমরা, আর হিসেব চাইবে ওরা! চ্যাংড়ামো হচ্ছে! বলছে ঘরে থাকো নয় জেলে থাকো। জেলেই থাকব। জেলে থেকে লড়ব। কিন্তু টাকার জন্য দোস্তি করব না তোমাদের সঙ্গে, গদ্দারি করব না।
এনআরসি নিয়ে কী করেছো? দাদুর বাবার নাম বলো, তবে নাগরিক হবে? কী না করেছো তোমরা! আমরা বাঙালি-অবাঙালি করি না। সবাই আমার ভাইবোন।
কিন্তু একটা কথা মনে রাখো বিজেপি, বাংলা গুজরাত হবে না।
বিজেপির হাতে টাকা আছে, তোমাদের অনেক গুন্ডা আছে, তোমার বহিরাগত গুন্ডা আছে। তোমাদের সব থাকলেও তোমাদের কাছে তৃণমূল কংগ্রেসের মত একটা কর্মী নেই।
জিজ্ঞেস করুন, গভীর সমুদ্র বন্দর করব বলে ৬ বছর ধরে লড়াই করেছি। করে তো দাওনি! এবার আমরা নিজেরা করব তাজপুরে। তার মেকানিজমের জন্য ২৫ হাজার লোকের কাজের সংস্থান হবে।
ডানকুনি থেকে বড়জোরা আইটি-র বিশাল কাজ চলছে। অনেক কাজ হবে।
আমরা ডিএ দিচ্ছি, কেন্দ্র দিচ্ছে না। আমরা তফসিলিদের জন্য জয়বাংলা প্রোজেক্ট করেছি। আমার ইমামরা যেমন ভাতা পান, তেমনই পুরোহিতদেরও দিতে শুরু করেছি।
অনেক সময় কৃষকদের জমি মিউটেশন না হওয়ায় টাকা পায় না। আমি বলেছি, সেল্ফ অ্যাটেস্টেশন দিলেই যেন তিনি টাকা পান। আরও যা সুবিধা তা যেন তাঁরা পান।
একজন টোটোচালক ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যসাথী পাবেন, দোকানদার পাবেন, গৃহপরিচারিকা পাবেন। আমরা ১০ কোটি মানুষকে এর আওতায় আনব। আমরা জুন পর্যন্ত বিনাপয়সায় খাবারও দিচ্ছি। আমরা চাই, মানুষের খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান নিশ্চিত করতে।
আমি চাই, আমার ছাত্রযুবকরা ফিরে আসুন বাংলায়। আমেরিকায়, রাশিয়ায় যাওয়ার দরকার নেই। অনেক কোম্পানি আসছে। কাজের অসুবিধা আপনাদের হবে না।
আমরা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ৩৫ কোটি টাকার ওপর ট্রেনভাড়া দিয়ে এনেছি। অনেককে ১০০ দিনের কাজে লাগিয়েছি। কেন্দ্র কোনও টাকা দেয়নি। এত বড়বড় কথা বলে।
কতগুলো কলেজ হয়েছে। যত অ্যাসেট আছে সব তৈরি করছি। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, রাস্তা, মেডিক্যাল কলেজ– কিছু বাকি নেই করতে।
যে কাজ আমরা করেছি, তার এক শতাংশ কাজ করে কেউ যদি বলে আপনারা এটা করতে পারেননি, আমি নিশ্চয় দেখব। কিন্তু যারা কাজ না করে বড়বড় কথা বলে, তাদের কথা আমি শুনতে অভ্যস্ত নেই।
চুরি করে টাকা রাখার ব্যাঙ্ক হচ্ছে বিজেপি। যে লুঠেরাদের অনেক টাকা হয়েছে, তারা টাকা রাখছে বিজেপিতে। এটা কেন হবে? এই করে একটার পর একটা দল ভাঙছে, সরকার ভাঙছে।
কিন্তু একটা কথা মনে রাখবেন, আমরা শপথ নিচ্ছি আজকের মিটিংয়ে, ২০২১ আমাদের। ২০২১ আমাদের। ২০২১ বাংলার। ২০২১ বাংলার। জনগণ আছে সঙ্গে, তাই তৃণমূল কংগ্রেস একুশে আসছে বঙ্গে।
আর এটা জেনে রাখবেন, গান্ধীজিকে যারা হত্যা করেছে, তাদের কাছে বাংলা মাথা নত করবে না, করবে না। বাংলার রবীন্দ্রনাথ আছে, নজরুল আছে, বীরসা-মুণ্ডা আছে। আমরা সকলকে নিয়েই চলতে চাই। এটুকু আমি বলতে চাই।
আপনারা অনেক দূর থেকে এসেছেন আজ। কোনও অত্যাচারের কাছে মাথা নত করবেন না। জোর কদমে এগিয়ে চলুন, তৃণমূলের পতাকা উঁচু করে ধরে। ঝান্ডা উঁচা রহে হামারা, সারে জাঁহাসে আচ্ছা।
২০২১-এ তৃণমূল আসবে, আর কেউ না, আর কেউ না, আর কেউ না। হার্মাদ সিপিএম আর না। সিপিএমের বন্ধু কংগ্রেস না না। বিজেপি একেবারেই না।
জয় বাংলা। বন্দে মাতরম। তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ। বিজেপি জেনে রেখো, তৃণমূলকে কিনে নেওয়া যাবে না যাবে না।
আমরা কারা! তৃণমূল। লড়ছে কারা! তৃণমূল। সারা বাংলায়! তৃণমূল। মা-বোনেরা.. শ্রমিক-কৃষক… আসছে কারা! তৃণমূল। জিতবে কারা! তৃণমূল।
সকলকে ধন্যবাদ, সাবধানে ফিরবেন। গাড়ি আস্তে চালাবেন। সংবাদমাধ্যম কষ্ট করে কভার করেছেন, ধন্যবাদ। জয় বাংলা।
https://fb.watch/2dC2fNhLlJ/