দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কাল রবিবার চতুর্থ পর্যায়ের লকডাউনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার প্রাক সন্ধ্যায় আজ শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিল, ৩০ জুন পর্যন্ত লকডাউন চলবে। কিন্তু সব বন্ধ থাকবে না। বরং এ বার ধাপে ধাপে তালা খুলবে। যাকে বলা হয়েছে, ‘আনলক ফেজ ১’।
প্রথম ধাপে সেই তালা খোলার পর্বে ৮ জুন থেকে সমস্ত রেস্তোরাঁ, শপিংমল, ধর্মস্থান খোলা যাবে। এ ব্যাপারে অবশ্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর তথা এসওপি ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, কন্টেইনমেন্ট এলাকার বাইরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ক্রমশ শুরু করে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কন্টেইনমেন্ট জোনের মধ্যে যে ধরনের নিষেধাজ্ঞা এখনও রয়েছে তা বজায় থাকবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের গাইডলাইনে বলা হয়েছে, হোটেল, রেস্তোরাঁ ও হসপিটালিটি সার্ভিস প্রথম ধাপে খুলে যাওয়ার পর, দ্বিতীয় ধাপে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যাপারে। এ বিষয়ে জুলাই মাসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তার আগে রাজ্য সরকারকে স্থানীয় সব স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এবং অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তাঁদের মতামত নিতে হবে। তার পর সেই আলোচনার ভিত্তিতেই দিনক্ষণ স্থির করা হবে।
তবে সে ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এসওপি ঘোষণা করবে। অর্থাৎ স্কুল, কলেজ- সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হলে কী ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করে চলতে হবে তা জানাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এদিন জানিয়েছে, হাতে গোনা কিছু পরিষেবাই কেবলমাত্র বন্ধ থাকবে। যেমন আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা, সিনেমা হল, মেট্রো রেল, জিমনাশিয়াম, সুইমিং পুল, বিনোদন পার্ক, থিয়েটার, বার, অডিটোরিয়াম বন্ধ রাখতে হবে। কোনও বড় জমায়েতও করা যাবে না।
কেন্দ্রের নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, কন্টেইনমেন্ট জোনের মধ্যে জরুরি পরিষেবা ছাড়া আর কিছু খোলা থাকবে না। কন্টেইনমেন্ট জোন কোনগুলি, তার পরিধি কতটা, তা রাজ্য সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনকে পরিষ্কার ভাবে চিহ্নিত করতে হবে। সেখানে কঠোরভাবে লকডাউন মানতে হবে।
তা ছাড়া নাইট কার্ফুও অব্যাহত থাকবে। তবে সে ক্ষেত্রে নিয়ম বর্তমানের তুলনায় কিছুটা শিথিল করা হচ্ছে লকডাউনের পঞ্চম দফায়। সন্ধ্যা ৭ টার পরিবর্তে রাত ৯ টা থেকে নাইট কার্ফু শুরু হবে। তা ভোর ৫ টা পর্যন্ত চলবে।
নির্দেশিকায় আরও জানানো হয়েছে, রাজ্যের মধ্যে ও আন্তঃরাজ্য যাতায়াতে কোনও বিধিনিষেধ থাকছে না। মালপত্র থেকে মানুষ, যাতায়াতের জন্য কাউকে আলাদা করে কোনও অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন নেই। তবে কোনও রাজ্য যদি সেখানকার বাসিন্দাদের কথা মাথায় রেখে এই নিয়মে কিছু কড়াকড়ি করতে যায়, তাহলে তারা তা করতে পারে। সেক্ষেত্রে কী নিয়ম মানতে হবে তা সবাইকে জানিয়ে দিতে হবে। কোনও রাজ্যই মালের যাতায়াতে বাধা দিতে পারবে না।
কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত এক নজরে:
১ জুন ২০২০ থেকে রাতের কার্ফু কমছে। সন্ধে ৭টার বদলে কার্ফু শুরু হবে রাত ৯টায়। চলবে ভোর ৫টা পর্যন্ত।
• প্রথম ধাপে, কনটেনমেন্ট জোনের বাইরে, ৮ জুন থেকে খোলা যাবে ধর্মীয় স্থান, বেসরকারি অফিস, হোটেল-রেস্তরাঁ, শপিং মল। তবে সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলতে হবে কঠোর ভাবে।
• দ্বিতীয় ধাপে খোলা যাবে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, কোচিং সেন্টার। তবে রাজ্য সরকারকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কর্তৃপক্ষ এবং অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে। তার পর জুলাই মাসে এই সব প্রতিষ্ঠান খোলা যেতে পারে।
• গোটা দেশেই কয়েকটি বিষয়ের উপর নিষেধজ্ঞা আপাতত জারিই থাকছে। এর মধ্যে থাকছে মেট্রো রেল, আন্তর্জাতিক যাত্রিবাহী বিমান, সিনেমা হল, বিনোদন পার্ক, থিয়েটার হল, বার, জিম, সুইমিং পুল-সহ সামাজিক-রাজনৈতিক-ক্রীড়া-বিনোদন-সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় সমস্ত ধরনের বড় অনুষ্ঠান ও জমায়েত। তৃতীয় দফায় গিয়ে এগুলো খোলার দিন ঘোষণা করা হবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে।