রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বড়মার শেষকৃত্যের কাজ সম্পন্ন হলেও ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত মতুয়া ভক্তরা!

0
1405

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুর নগর: বড়মার অবর্তমানে মতুয়া মহাসঙ্ঘের হাল ধরবে কে, মতুয়া ভক্তদের কাছে এই প্রশ্নই এখন সব থেকে বড় হয়ে উঠেছে।

বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের উদ্যোগে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্যের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলেও মতুয়া মহাসংঘের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। মঙ্গলবার থেকেই প্রথম আর শেষ পর্যন্ত নিজে দাঁড়িয়ে থেকে গোটা বিষয়টি তদারকি করেছেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

তার সঙ্গী ছিলেন বনগাঁ ও হাবড়ার চেয়ার ম্যান শঙ্কর আঢ্য এবং নীলিমেষ দাস সহ তৃণমূলের অন্যান্য মন্ত্রী নেতা-কর্মীরা। সকালে মরদেহ নিয়ে ঠাকুরনগরের বিভিন্ন এলাকা মৌন মিছিল করে দুপুরে ঠাকুর বাড়িতে এসে শেষ করা হয়৷

এরপর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রস্তুতি শুরু হয।় তার আগে রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে গান স্যালুট দেওয়া হয়। বড়মার এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া কে কেন্দ্র করে ঠাকুরবাড়ির পুরনো পারিবারিক দ্বন্দ ফের প্রকাশ্যে চলে আসে। যদিও শেষ পর্যন্ত তা বেশি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি।

এদিন ঠাকুরবাড়িতে সরকার এবং সরকারবিরোধী অনেক নেতাকর্মীকে হাজির থাকতে দেখা গেলেও বাগদার বিধায়ক দুলাল বর কে দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে দলীয় কর্মীদের কাছে খোঁজ খবর নেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

শেষ দিকে ঠাকুর বাড়িতে এসে হাজির হন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাশ বিজয় বর্গীয় ও মুকুল রায় এবং অন্যান্যরা। পরে তারা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এ ব্যাপারে অবশ্য অভিযোগ করেছেন, তৃণমূল বহুদিন ধরে ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত থাকলেও ঠাকুরবাড়িতে কখনো রাজনীতি ঢোকায়নি।

অথচ এখন শান্তনু ঠাকুরের হাত ধরে বিজেপি এখানে রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন করতে চাইছে। কিন্তু আমরা তা মেনে নেব না। আমরা বাধা দেব। এদিন ঠাকুর বাড়িতে আসা ভক্তদের জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলেন আমাদের মাথার উপর থেকে ছাদ চলে গেছে।

এখন যা ঠাকুর বাড়ির অবস্থা তার হাল কে ধরবে সেটা ভেবেই আমরা উদ্বিগ্ন ৷ জানিনা ঠাকুরবাড়ি তথা মতুয়া মহাসঙ্ঘের ভবিষ্যৎ কি হবে। এদিকে এদিন শেষকৃত্যের কাজ শেষ করতে প্রায় ছটা বেজে যায়। তখনও মতুয়া ভক্তরা ঠাকুর বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন।

ঠাকুরবাড়ির নিয়ম মেনে মুখাগ্নির বদলে বড়মার একমাত্র জীবিত পুত্র মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর বড়মার দেহের সামনে প্রদীপ দেখিয়ে চিতায় অগ্নি সংযোগ করেন ।চারিদিকে তখন মতুয়া ভক্তরা হরি ধ্বনি দিতে থাকেন ।

এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়৷ প্রমথ রঞ্জন ঠাকুরের হাত ধরে যে উদ্বাস্তু আন্দোলন, সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য আন্দোলনের কাজ বাংলাদেশ থেকে শুরু করে ঠাকুরনগর পর্যন্ত হয়ে এসেছে পরবর্তীতে তার হাল ধরেন বীণাপাণি ঠাকুর।

এবারে তার ফাঁকা জায়গায় সেই আন্দোলন, মতুয়াদের কথা ভাবার কেউ কি থাকবে ? সে প্রশ্নই এখন বড় করে দেখা দিয়েছে মতুয়া ভক্তদের মনে। ছবি- পার্থ সারথি নন্দী৷

Previous articleমা হারা-হলেন মতুয়া ভক্তরা
Next articleগণতন্ত্রে নাগরিকের জানার অধিকার স্বীকৃত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here