দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আয় থেকে কর্মসংস্থান, বিদ্যুৎ বিলে সাশ্রয় থেকে চা-বাগানে আবাসন রাজ্য বাজেট অনেক প্রাপ্তি। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র ঘোষণা করলেন ৬টি নতুন প্রকল্পের। পরে সেই সব প্রকল্পের বিস্তারিত বিবরণও দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কী কী প্রকল্প পেল রাজ্য।
বাংলাশ্রী
রাজ্য সরকার ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, এই ক্ষেত্র থেকেই সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়। তিনি বলেন, ক্ষুদ্ৰ, ছোট ও মাঝারি শিল্পের ক্ষেত্রে, আরও জোর দেওয়ার জন্য ১ এপ্রিল ২০২০ থেকে ‘বাংলাশ্রী’ নামে একটি নতুন উৎসাহ প্রকল্প চালু হচ্ছে। মন্ত্রী জানান, এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যে নতুন ক্ষুদ্রশিল্প স্থাপন ও কর্মসংস্থানের বিপুল সুযোগ সৃষ্টি হবে। এর জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দও করেন তিনি।
কর্মসাথী
এছাড়াও রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করে তুলতে ‘কর্মসাথী’ নামে আরও একটি প্রকল্প এদিন ঘোষণা করেন অমিত মিত্র। তিনি বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী ৩ বছরে প্রতি বছর ১ লাখ করে যুবক-যুবতীর নিয়মিত আয়ের ব্যবস্থা করা হবে। এই প্রকল্পে সহজ শর্তে ঋণ ও ভর্তুকি দেওয়া হবে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। এই টাকা নিয়ে ছোট শিল্প বা ব্যবসা শুরু করতে হবে। এর জন্য অর্থমন্ত্রী ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন।
চা সুন্দরী
চা-শ্রমিকদের পাকাপাকি মাথা গোঁজার ঠাঁই দিতে রাজ্য সরকারের নতুন প্রকল্প ‘চা-সুন্দরী।’ রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, রাজ্যে প্রায় ৩৭০টি চা বাগান আছে। সেখানে কাজ করেন তিন লক্ষাধির চা-শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে ৫০ শতাংশই মহিলা। এই চা-শ্রমিকদের সিংহভাগ আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন।
তাঁদের বেশিরভাগেরই মাথা গোঁজার জায়গা নেই। ‘চা-সুন্দরী’ প্রকল্পের আওতায় আগামী তিন বছর রাজ্য সরকার চা-বাগানে স্থায়ীভাবে কর্মরত গৃহহীন শ্রমিকদের আবাসনের ব্যবস্থা করবে। তারজন্য আগামী অর্থবর্ষে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
বন্ধু
এই প্রকল্পে বলা হয়েছে, রাজ্যের ৬০ বছরের বেশি বয়সের তফসিলি জাতির মানুষ, যাঁরা কোনও পেনশন পান না, এরকম ১০০ শতাংশ মানুষকে প্রতি মাসে হাজার টাকা করে বার্ধক্য ভাতা দেওয়া হবে। এর ফলে আনুমানিক ২১ লক্ষ তফসিলি জাতির মানুষ উপকৃত হবেন বলে দাবি করা হয়েছে বাজাটে। এই খাতে আগামী অর্থবর্ষে ২,৫০০ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়।
জয় জহার
রাজ্যের আদিবাসী সমাজের বয়স্ক মানুষদের কল্যাণে ‘জয় জহার’ নামের একটি নতুন প্রকল্প ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। এই প্রকল্পে ৬০ বছরের বেশি বয়সের আদিবাসী ও তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের ১০০ শতাংশ মানুষ, যাঁরা অন্য কোনও পেনশন পান না, তাঁদের প্রতি মাসে হাজার টাকা করে বার্ধক্য ভাতা দেওয়া হবে।
এই পরিকল্পনার মাধ্যমে আনুমানিক চার লক্ষ আদিবাসী ও তফসিলি উপজাতি সম্প্পদায়ের মানুষ উপকৃত হবেন। এই জন্য আগামী অর্থবর্ষে ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয় বাজেটে।
হাসির আলো
এই প্রকল্পের আওতায় বাংলার গরিব পরিবারকে বিনামূল্য বিদ্যুৎ দেওয়া হবে। এই সুবিধা পাবেন তারাই যাদের তিন মাসে সর্বাধিক ৭৫ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়। তাদের বিদ্যুতের জন্য কোনও খরচই দিতে হবে না।অমিত মিত্রের দাবি ৩৫ লক্ষ গরিব পরিবার এর সুযোগ পাবেন। এর জন্য বাজেটে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী।