দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বিদ্যুতের লাইনে হুকিং করা হয়েছিল। তার জেরেই এই দুর্ঘটনা। রাজভবনের সামনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় এমনটাই জানালেন নয়া কলকাতার পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম ৷ গোটা ঘটনায় এফআই আর-এর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, মৃতের পরিবারকে ২ লাখ টাকা আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন ফিরহাদ।
মঙ্গলবারের এই ঘটনায় ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘ওই লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ ছিল। বাতিস্তম্ভে আলো জ্বলছিল না। ওই লাইনে হুকিং করা হয়েছিল। আমি এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছি। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই মৃত্যু নাকি বাজ পড়ে, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর জানা যাবে।’ আলো বিভাগের ডিজি-কে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার পুর প্রশাসক।
জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম রিশভ মন্ডল। ফারাক্কার বাসিন্দা রিশভ ডালহৌসিতে একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। কর্মসূত্রে তিনি কলকাতায় থাকতেন বলেই খবর। তাঁর পকেট থেকে পাওয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখেই তাঁকে শনাক্ত করা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই তাঁর পরিবারকে যোগাযোগ করা হয়েছে।
একটানা বৃষ্টির জেরে রাজভবনের সামনে জমে থাকা জলের মধ্যে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে লুটিয়ে পড়লেন এক ব্যক্তি। কলকাতা পুলিশের অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছলেও উদ্ধারকার্য শুরু করতে দেরী হয়। এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করা পর্যন্ত ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করা যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি অফিস থেকে ফিরছিলেন। সেই সময় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে আচমকাই রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন তিনি।
সূত্রের খবর, রাজভবনের উত্তর দিকের গেটের সামনে ওই ব্যক্তির দেহ পড়ে ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, উত্তরের গেটের সামনে জল জমে ছিল। ওই ব্যক্তি আচমকাই জলে পড়ে যান। তারপর তার নিথর দেহ ভাসতে দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে খবর যায় হেয়ার স্ট্রিট থানায়। কলকাতার পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্সও ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। তবে দেহ উদ্ধারে কিছু দেরি হয় বলে জানা গিয়েছে।
এলাকাবাসীরা বলছেন, উদ্ধারকারীদের আশঙ্কা ছিল জমা জলে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে রয়েছে। সে কারণে গোটা এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করে তারপর দেহ উদ্ধার করা হয়। এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে ব্যক্তিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ডাক্তাররা।
এ ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হয় হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান জেলায়। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থানার পুঠিমারী মাঠে বাজ পড়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। মৃতের নাম নাজির হোসেন (৩৫)। মৃতের বাড়ি যান সামশেরগঞ্জের বিডিও কৃষ্ণচন্দ্র মুন্ডা এবং বিদায়ী বিধায়ক আমিরুল ইসলাম। এছাড়াও পূর্ব বর্ধমান জেলায় বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। মৃতদের নাম সঞ্জয় প্রামাণিক ও শরিফ মুন্সি। হাওড়াতেও বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। মৃতদের মধ্যে একজনের নাম অশোক বিশ্বাস। অন্যজনের পরিচয় জানা যায়নি।