অটো সংগঠনের নেতা নারায়ণ ঘোষ টেলিফোনে দেশের সময় কে বলেন, “রক্ত সঙ্কটের কথা জানতে পেরেই আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে, হাসপাতালে গিয়েই রক্তদান করব। এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত এবং মানুষ হিসাবে সব থেকে বড় কর্তব্য।”
শুক্রবার সিপিএমের ছাত্র ও যুব সংগঠনের ৩০জন হাসপাতালে গিয়ে রক্ত দান করেন। বিজেপির বনগাঁ উত্তর পৌর মণ্ডলের পক্ষ থেকে এ দিন ১৮ জন হাসপাতালে গিয়ে রক্তদান করেছেন।
ব্যারাকপুরের বিএন বসু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও তাঁদের ব্লাডব্যাঙ্কেই রক্ত সংগ্রহ করছে। হাসপাতালের সুপার সুদীপ্ত ভট্টাচার্য জানান, স্থানীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করে ছোট ছোট করে শিবির করা হচ্ছে। কেউ নিজের উদ্যোগে রক্ত দিতে চাইলেও তা নেওয়া হচ্ছে। এই হাসপাতাল থেকে প্রতি মাসে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ৬-৭ জনকে রক্ত দেওয়া হয়। সেই রক্ত তাঁদের কাছে রয়েছে৷
রক্ত সঙ্কট দেখা দিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালেও। রক্তের জোগান স্বাভাবিক রাখতে হাসপাতালের তরফে রোগীকেই ডোনার নিয়ে আসার অনুরোধ করা হচ্ছে। পাশাপাশি ব্লাড ব্যাঙ্কেই রক্ত নেওয়ার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে ব্লাড ব্যাঙ্কে ৮০-৯০ ইউনিট রক্ত মজুত রয়েছে, যা চাহিদার তুলনায় খুবই কম।
এই পরিস্থিতিতে রক্তের প্রয়োজনে যে সমস্ত রোগীরা আসছেন, তাঁদের পরিবার বা পরিচিত কাউকে রক্ত দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। পাশাপাশি সকলের কাছে এই সঙ্কটের সময় ব্লাড ব্যাঙ্কে এসে রক্ত দিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে৷
তবে ক্যানিং মহকুমায় এখনও পর্যন্ত রক্তের সঙ্কট তৈরি হয়নি। ব্লাড ব্যাঙ্ক ও ব্লাড স্টোরেজ ইউনিটগুলিতে পর্যাপ্ত রক্ত রয়েছে বলেই মহকুমা হাসপাতাল জানিয়েছে।
হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ, বসিরহাট, রক্তের শিবির হচ্ছে না। তাই মজুত রক্ত ক্রমশ কমছে বসিরহাট জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। রক্তের প্রয়োজন মেটাতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যাঁদের রক্তের প্রয়োজন হচ্ছে, তাঁদের দাতাকে আনতে অনুরোধ করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বসিরহাট জেলা হাসপাতালের সুপার শ্যামল হালদার জানান, এই মুহূর্তে তাঁদের ভাঁড়ারে বিভিন্ন গ্রুপে ১৪০ ইউনিট রক্ত রয়েছে। রোজ গড়ে ২৫ ইউনিট রক্ত লাগে। বর্তমানে রোগীর চাপ কম থাকায় গড়ে ১২ ইউনিট মতো রক্ত লাগছে। ফলে নতুন করে শিবির না হলে সপ্তাহখানেক পরেই রক্তের সঙ্কট দেখা দেবে। থ্যালাসেমিয়া রোগীদেরও এই সঙ্কটকালে দাতাকে আনার অনুরোধ করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, রোগীর আত্মীয়-পরিজন ছাড়াও রোজ ১০-১২ জন রক্ত দিচ্ছেন। তবে তাতেও জোগান স্বাভাবিক করা যায়নি বলেই জানান হাসপাতালের আধিকারিকেরা।
ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার অধীনে রয়েছেন ১৪০০ থ্যালাসেমিয়া রোগী। এঁদের নিয়মিত রক্ত লাগে। তা ছাড়া জেলা হাসপাতালে অস্ত্রোপচার-সহ অন্য নানা কারণে রক্তের প্রয়োজন হয়। সমস্যা মেটাতে তাই রোগীর পরিবারের উপরে ভরসা করতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। থ্যালাসেমিয়া রোগীদের ক্ষেত্রেও বাড়ি থেকে ডোনার আনার জন্য বলা হয়েছে।