‘মুখ্যমন্ত্রীকে এখানে আসতেই হবে…’,আরও চড়ল সুর! শুক্রবার রাজ্যজুড়ে ‘ধিক্কার দিবস’ পালনের ডাক চাকরিহারা শিক্ষকদের

0
6

বৃহস্পতিবার রাতের উত্তপ্ত পরিস্থিতির আঁচ গড়াল সকালেও। দিনের আলো ফুটতেই ফের বিকাশ ভবনের সামনে জমায়েত চাকরিহারা আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। ব্যারিকেড ঠেলে সরিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলেন চাকরিহারা আন্দোলনকারীরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আন্দোলনস্থলে আসতে হবে দাবি শিক্ষকদের। ঘটনাস্থলে মোতায়েন প্রচুর পুলিশবাহিনী ও র‌্যাফ।

বৃহস্পতিবার রাতে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সেই চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা রক্তাক্ত হন বলে অভিযোগ। তার প্রতিবাদে আজ শিক্ষকদের ধিক্কার দিবস পালনের ডাক।

বিকাশ ভবনের সামনে ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জ ও হেনস্থার প্রতিবাদে শুক্রবার রাজ্যজুড়ে ‘ধিক্কার দিবস’ পালনের ডাক চাকরিহারা শিক্ষকদের । নাগরিক সমাজকে এহেন পুলিশি অত্যাচারের প্রতিবাদে রাস্তায় নামতে বলে, রাজ্যের যাবতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাশ ভবনের সামনে চাকরি ফিরে পেতে অবস্থানে বসেছিলেন ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকারা। রাতে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে। অভিযোগ, আচমকা পুলিশকর্মীদের সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হয় বিকাশ ভবনের সামনে।

রাত ৮টা নাগাদ সাইরেন বাজিয়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে বলপ্রয়োগ করে পুলিশ। যার জেরে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। রাস্তার উপর শুয়ে পড়েন অনেকে। কিন্তু তাঁদেরও টেনেহিঁচড়ে সরিয়ে দেওয়া হয় এলাকা থেকে। একইসঙ্গে সকাল থেকে বিকাশ ভবনের যে কর্মীরা আটকে পড়েছিলেন, তাঁদের বার করে আনে পুলিশ। তাঁরাও অনেকে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।

যদিও পুলিশের বক্তব্য, প্রথম থেকেই আন্দোলনকারীদের সরে যাওয়ার ‘অনুরোধ’ করা হলেও তাঁরা অবস্থান ছেড়ে ওঠেননি। যাঁরা সরকারি ভবনে কাজ করেন তাঁদের বের করার চেষ্টা করলে চাকরিহারারা নিজেদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়েন। সেই ইট-পাটকেল থেকেই আন্দোলনকারীরা আহত হয়েছেন। পুলিশের বক্তব্য তারা কেবল লাঠি দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করেছেন।

চাকরিহারাদের একাংশের অভিযোগ, পুলিশের মারে তাঁদের অনেকেই গুরুতর জখম। কিন্তু মিলছে না অ্যাম্বুল্যান্স। এমন অবস্থায় ঘটনাস্থলে পৌঁছন আরজি কর হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো-সহ ডক্টরস ফ্রন্টের অন্যান্য চিকিৎসকরা। তাঁরাই প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করেন আহত শিক্ষকদের। অনিকেত জানান, অনেকের হাড় ভেঙেছে। মাথায় সেলাই পড়বে বহু শিক্ষকের। ইতিমধ্যেই বিধাননগর হাসপাতালে প্রায় ২০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ভর্তি রয়েছেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আহতের সংখ্যাও প্রায় ১০০। 

সাড়ে দশটা নাগাদ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে গোটা পরিস্থিতির বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে আন্দোলনকারী চিন্ময় মণ্ডল-সহ অন্যান্য আন্দোলনকারীরা জানান, পুলিশের এহেন পৈশাচিক অত্যাচারের প্রতিবাদে গোটা বাংলার মানুষ যেন পথে নামেন। শুক্রবার রাজ্যজুড়ে ধিক্কার দিবস পালন ও যাবতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন তাঁরা।

পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবারই চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা নতুন কর্মসূচির ঘোষণা করেছিলেন। জানানো হয়, পুলিশি অত্যাচারের বিরুদ্ধে শুক্রবার ধিক্কার দিবস পালন করবেন তাঁরা। রাজ্যজুড়ে স্কুল এবং কলেজগুলিতে এই কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান চাকরিহারারা। শুধু তা-ই নয়, বিকেলে বিকাশ ভবনের সামনে গন কনভেনশনের ডাক দেওয়া হয়েছে। সেই মঞ্চে বিশিষ্টজনদের উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা।

Previous articleSSC – Bikash BhawanSSC: বিকাশ ভবনে চাকরিহারাদের আন্দোলনে পুলিশের বলপ্রয়োগ, ঝরল ‘রক্ত’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here