দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দেওয়াল লিখন স্পষ্ট ছিল। হলও তাই। প্রবীণ বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে সর্বভারতীয় বিজেপির সহ সভাপতি পদে নিয়োগ করলেন বর্তমান বিজেপি সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা ,নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ।
অমিত শাহ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হওয়ার পর গত বছর বিজেপি সভাপতি পদের দায়িত্ব নিয়েছিলেন জে পি নাড্ডা। তার পর বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন হয়। কিন্তু নতুন কমিটি গঠন বকেয়া ছিল। দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে যাওয়ায় তা আরও পিছিয়ে যায়। অবশেষে সেই কমিটি এদিন ঘোষণা করেছেন বিজেপি সভাপতি।
নতুন কমিটিতে ছত্তীসগড় ও রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ ও বসুন্ধরা রাজে সহ মোট ১২ জন প্রবীণ নেতা নেত্রীকে সর্বভারতীয় বিজেপির সহ সভাপতি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন মুকুল রায়।
আবার তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেই সর্বভারতীয় কমিটি থেকে বাদ পড়েছে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি রাহুল সিনহা। এর আগে রাহুল সিনহা সর্বভারতীয় সম্পাদক ছিলেন। তাঁর পরিবর্তে বাংলা থেকে সর্বভারতীয় সম্পাদক হয়েছেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ট।
২০১৭ সালে দুর্গাপুজোর ঠিক আগে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন মুকুল বাবু। সেই সময়ে তিনি তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদও ছিলেন। কিন্তু তৃণমূল ছাড়ার পাশাপাশি রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। এর মাঝে তাঁকে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সভাপতি করা হয়েছে। লোকসভা ভোটে দলের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়কও করা হয়েছে। কিন্তু সংগঠনে কোনও পদ পাননি তিনি।
ফলে তৃণমূলের মধ্যে থেকে যেমন অনেকে তাঁর উদ্দেশে তীর্যক মন্তব্য করতে শুরু করেছিলেন, তেমনই রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীও তাঁকে কোণঠাসা করে রাখার চেষ্টা করে।
কিন্তু বর্তমান বাংলার রাজনীতিতে সম্ভবত মুকুল রায়ের মতো সহিষ্ণু নেতা কম রয়েছে। ধৈর্য্য দেখিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ-কৈলাস বিজয়বর্গীয়দের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করে গিয়েছেন। তিনি যে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আস্থা অর্জনে অনেকটাই সফল হয়েছেন তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল লোকসভা ভোটের কিছুদিন পর। শহিদ মিনারের সভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র অমিত শাহ স্পষ্ট বলেছিলেন, লোকসভা ভোটে বাংলায় বিজেপির ১৮টি আসন জেতার নেপথ্য কারিগর মুকুল রায়ই।
এদিন কমিটি ঘোষণার পর মুকুলবাবুকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাজি আমার উপর যে আস্থা রেখেছেন তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। তাঁদের আস্থার মর্যাদা দেওয়ার চেষ্টা করব। বাংলায় বিজেপির সামনে এখন একটাই চ্যালেঞ্জ—তা হল তৃণমূল সরকারকে উৎখাত করা। একুশের ভোট সেই লক্ষ্যেই কাজ করব। তা ছাড়া সর্বভারতীয় স্তরে দল যে দায়িত্ব দেবে তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার চেষ্টা করব।”
বিজেপির রাজ্য সবাপতি দিলীপ ঘোষ এ বিষয়ে বলেন, “আমি এখনও অফিসিয়ালি খবর পাইনি, তাছাড়া কোনও প্রেসমিট হয়েছে কিনা আমার ঠিক জানা নেই। তবে হ্যাঁ হলে ভালই হবে।”