দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাংলা বিজেপির অন্দরে যে সব কিছু ভাল নেই, সে খবর প্রায়ই কোনও না কোনও ভাবে বেরিয়ে পড়ে! দলের মধ্যে এই আলোচনাও রয়েছে যে উপর উপর যাই দেখা যাক না কেন, বিজেপির রাজ্য সংগঠনের মধ্যে এখন একাধিক গোষ্ঠী। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও তাঁর অনুগামী কয়েক জন রাজ্য নেতা রক্ষণশীল। মুকুল রায়, স্বপন দাশগুপ্তদের তাঁর বিশেষ জায়গা দিতে রাজি নন। তার বহিঃপ্রকাশও ইদানীং আকছার দেখা যায়।
কিন্তু রবিবাসরীয় দুপুরে শহিদ মিনার মঞ্চে দাঁড়িয়ে দলের প্রবীণ নেতা মুকুল রায় সম্পর্কে বড় কথা বলে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তথা সর্বভারতীয় বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি অমিত শাহ।
এদিন মঞ্চে বক্তৃতা দিতে উঠে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে জননায়ক বলে সম্মোধন করেন অমিত শাহ। সেই সঙ্গে রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, কেন্দ্রীয় দুই মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, দেবশ্রী চৌধুরী প্রমুখের নাম নেন। তার পর মুকুল রায় প্রসঙ্গে বলেন, “লোকসভা ভোটের সময় যে মানুষটি আহ্বায়ক পদে থাকায় ভারতীয় জনতা পার্টি ৪২ টির মধ্যে ১৮টি আসন জিতে নিয়েছে, সেই মানুষটি—আমাদের মুকুল রায়..( জিনকে কনভেনার রহেতে ভারতীয় জনতা পার্টি ৪২ মে সে ১৮ সিট প্রাপ্ত করা, অ্যায়সে হামারে মুকুল রায় জি)।”
মুকুলবাবু বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন প্রায় আড়াই বছর হয়ে গেল, এখনও কোনও বড় পদ পাননি তিনি। তাঁকে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য করার পর গত লোকসভা ভোটের আগে নির্বাচন কমিটির আহ্বায়ক করা হয়। বিজেপিতে বা রাজ্য রাজনীতিতে অনেকেই মনে করেন, কোচবিহার, উত্তর মালদহ, বনগাঁ, বিষ্ণুপুর এবংপশ্চিমাঞ্চলে আসন জেতানোর নেপথ্যে মুকুলবাবুর অন্যতম ভূমিকা রয়েছে।
কিন্তু দিলীপবাবুরা তা মানতে চান না। এমনকি একটি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাতকারে দিলীপবাবু এও বলে দিয়েছিলেন যে, মুকুলবাবুর তুলনায় কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের এলেম রয়েছে।
রাজ্য নেতাদের সবার মুকুলবাবু সম্পর্কে ধারণা যে এমন তা নয়। দলের সংগঠন ও আরএসএসের অনেক নেতা রয়েছেন, যাঁরা মুকুলের অবদান স্বীকার করেন। এ হেন পরিস্থিতিতে রবিবার অমিত শাহ যেভাবে মুকুল রায়কে সম্মোধন করেছেন তা রাজ্য বিজেপির অন্দরের রসায়নের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
এদিন রাতে নিউটাউনের এক অভিজাত হোটেলে অমিত শাহ ও বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার উপস্থিতিতে গভীর রাত পর্যন্ত বৈঠক চলে। সেখানেও কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষদের সঙ্গে মুকুল রায় উপস্থিত ছিলেন। এখন দেখার একুশের ভোটের আগে বিজেপির রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সংগঠনে প্রাক্তন রেলমন্ত্রী কোনও পদ পান কিনা!