দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পুজোর ঠিক আগে বাংলায় এসে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে গেলেন বিজেপি সভাপতি জগৎ প্রকাশ নাড্ডা।
সোমবার উত্তরবঙ্গের একাধিক সামাজিক গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন নাড্ডা। সেখানেই তিনি বলেন, “কোভিড পরিস্থিতির জন্যই সিএএ লাগু হতে দেরি হচ্ছে। তবে এখন পরিস্থিতি ধীরে ধীরে হলেও স্বাভাবিকের দিকে যাচ্ছে। খুব শিগগিরই তা বলবৎ হবে।সংসদে আইন পাশ হয়ে গিয়েছে। কেউ এ নিয়ে সংকীর্ণ রাজনীতি করতে পারেন কিন্তু তার জন্য আইন প্রয়োগ আটকে থাকবে না।”
বিজেপির বক্তব্য, উত্তরবঙ্গের একাধিক সামাজিক গোষ্ঠী চায় নয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর হোক। কবে তা হবে এ নিয়ে তাঁরাও সর্বভারতীয় সভাপতির কাছে বক্তব্য শুনতে চেয়েছিলেন। তিনি এদিন তা স্পষ্ট করে বলেছেন।
এদিন নাড্ডা বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় বিভাজনের রাজনীতি করছেন।এতদিন হিন্দুদের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন আর আজকে হঠাত্ তাঁর হিন্দুদের প্রতি দরদ উথলে উঠছে। এসবই আসলে ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি। ক্ষমতায় টিকে থাকার কৌশল।” তিনি আরও বলেন, “সিএএ একটা রাজ্যের ব্যাপার নয়।এই আইন সারা দেশের। কোনও একটি রাজ্য বলতে পারে না যে তারা আইন মানবে না। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, এই আইন শিগগির বলবৎ হবে।”
প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় উদ্বাস্তু মানুষের বসবাস রয়েছে। পর্যবেক্ষক দের মতে বিধানসভা আসন ধরে বিচার করলে দেখা যাবে, অন্তত ৩০ থেকে ৩৫টি আসনে দেশ ভাগের সময়ে ওপার বাংলা থেকে আসা মানুষে নির্ণায়ক শক্তি।
তা ছাড়া লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে তৃণমূল শূন্য পেয়েছে।আটটি আসনের মধ্যে সাতটি জিতেছে বিজেপি এবং একটি কংগ্রেস। আট জেলার মোট বিধানসভা আসন সংখ্যা ৫৪টি। একুশের ভোটে যা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর বলে মনে করছে বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব। শিলিগুড়ির সভায় কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাংলায় কার্যকর করতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলে মমতার বিরুদ্ধে সরব হন নাড্ডা ।
এদিন তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার যা প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে যায় তখনই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন হবে না, হবে না। আর আমরা বলতে পছন্দ করি হবে, হবে।” আয়ুষ্মান ভারত থেকে প্রধানমন্ত্রী কৃষক কল্যাণ যোজনার কথা উল্লেখ করে মমতার বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান নাড্ডা। তিনি বলেন, “এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। বিধানসভা মিটবে আর বাংলার নতুন সরকার রাজ্যের মানুষের জন্য সমস্ত কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা শুরু করবে।”
নাড্ডার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তৃণমলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন বলেন, বাংলায় বিভাজনের রাজনীতি করছে বিজেপি। এই রাজ্যের সংস্কৃতি হচ্ছে সম্প্রীতি ও সৌভ্রাতৃত্বের। সেখানে বিজেপি ধর্মের নামে বিভাজনের রাজনীতি করতে চাইছে।