দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ নির্বাচন কমিশন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর চব্বিশ ঘণ্টা প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সোমবার সন্ধ্যায়। সোমবার রাত ৮টা থেকে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত মমতা কোনও প্রচার করতে পারবেন। তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেন তাঁর জেদ দেখাতে চাইলেন। মমতার মঙ্গলবারের সূচি বদল করল তৃণমূল। রাত আটটার পর উত্তর চব্বিশ পরগনায় দুটি জনসভা করবেন দিদি।
পরিবর্তিত সূচিতে বলা হয়েছে, রাত সওয়া আটটায় বারাসতে সভা করবেন মমতা। রাত নটায় সল্টলেলের বিএফ ব্লকে তিন প্রার্থীর সমর্থনে সভা করবেন তৃণমূল নেত্রী। তার আগে দুপুর বারোটায় কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কমিশনের নিষেধাজ্ঞা জারির আগে পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, মঙ্গলবার চারটি জনসভা ছিল মমতার। নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ, কল্যাণী এবং উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত ও সল্টলেকে সভা করার কথা ছিল তৃণমূলনেত্রীর। প্রথম দুটি সভা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। পরের দুটি সভার সময় বদল করলেন দিদি।
কিন্তু নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় সমস্ত কর্মসূচিই বাতিল হয়ে যাবে বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সোমবার বেশি রাতে ঘোষিত তৃণমূলের নয়া কর্মসূচি অনুযায়ী, হরিণঘাটা ও কৃষ্ণগঞ্জের সভা বাতিল হলেও বারাসত এবং বিধানগরের জনসভা করবেন মমতা।
এর আগে গত শনিবার রাজ্যে চতুর্থ দফার ভোটের দিন কোচবিহারের শীতলখুচিতে নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীন ৫ জনের মৃত্যু হয়। তার মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে নিহত হন ৪ জন। মমতা সে দিন উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় জনসভা করছিলেন। সেখান থেকেই তিনি জানিয়ে দেন, পর দিন শীতলখুচিতে নিহতদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন। সেই মতো তিনি ওই দিন বিকেলের বিমানে শিলিগুড়ি পৌঁছে যান। কিন্তু ওই দিন সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন এক নির্দেশিকা জারি করে। সেখানে বলা হয়, ওই সন্ধ্যার পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোচবিহার জেলার ভৌগলিক সীমানার মধ্যে কোনও জাতীয় বা রাজ্যস্তরের রাজনৈতিক দলের নেতা প্রবেশ করতে পারবেন না। ফলে মমতার যাওয়া আটকে যায়।
তৃণমূলের তরফে তখনও অভিযোগ তোলা হয়, মমতাকে আটকাতেই কমিশন বিজেপি-র কথায় ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সোমবার তাঁর নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় একই অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। বিজেপি যদিও কমিশনের নির্দেশকে সমর্থন করেছে। বাম-কংগ্রেস মমতার উপর নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন করলেও বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কমিশন ‘নীরব’ বলে পাল্টা অভিযোগ তুলেছে। সেই আবহেই মমতা তাঁর মঙ্গলবার রাতের কর্মসূচি জানিয়েছেন। তৃণমূলের এক শীর্ষ স্তরের নেতা সোমবার রাতে বলেন, ‘‘আমাদের নেত্রীকে এ ভাবে আটকে রাখা যাবে না।’’
এমনিতেই পঞ্চম দফার ভোটের প্রচার একদিন কমিয়ে দিয়েছে কমিশন। ১৭ এপ্রিল ভোটগ্রহণ হবে পঞ্চম দফায়। নিয়মানুযায়ী ১৫ তারিখ বিকেল পাঁচটায় প্রচার শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কমিশন ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে পঞ্চম দফার আসনগুলির জন্য শেষ প্রচার করা যাবে ১৪ এপ্রিল বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত।
যদিও পঞ্চম দফার জন্য পরশু বুধবার দিদির হাতে সময় রয়েছে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। এখন দেখার কী ভাবে কর্মসূচি সাজান তিনি।