দেশর সময় ওয়েবডেস্কঃ মঙ্গলবার সন্ধেয় দিল্লি পৌঁছিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মমতার বৈঠক। মঙ্গলবার দিল্লি রওনা হওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে মমতা সাংবাদিকদের কিছু প্রশ্নের উত্তর দেন। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের অনেক টাকা পাওনা আছে। আমি ৩৬৫ দিন কলকাতায় থাকি। কোথাও যাই না। যেহেতু এখানে দায়িত্বে আছি, তাই সব সময় পড়ে থাকতে হয়। সরকারি কাজে যেতে হয় দিল্লি।
ওখানেই তো পার্লামেন্ট, রাষ্ট্রপতি ভবন, বিভিন্ন মন্ত্রীদের দপ্তর রয়েছে, তাই রাজ্যের কাজে রাজধানীতে যেতে হয়। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা আছে, কেন্দ্রে যেমন নির্বাচিত সরকার, রাজ্যেও তেমনি নির্বাচিত সরকার রয়েছে। পরস্পরের মধ্যে আলোচনা হবে, দেখা হবে এটাই নিয়ম।
রাজ্যের নাম পরিবর্তন, রাজ্যকে আর্থিক প্যাকেজ, বিগত সরকারের আমলে বিপুল অঙ্কের ঋণের সুদ মকুব, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে আটকে থাকা বরাদ্দ, কোল ইন্ডিয়ার ১০০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগে ছাড়, ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ, বিএসএনএলের দুরবস্থা, একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বাণিজ্যকরণ এবং এনআরসি বিরোধিতা–সহ নানা বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রায় দেড় বছর পর দু’জনের বৈঠক হচ্ছে। যে বিষয়গুলি নিয়ে কথা হবে, তার মধ্যে এনআরসি, ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ ও রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলি বিলগ্নীকরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন মমতা। অসমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) হওয়ার পর তাঁর নেতৃত্বে তৃণমূল কলকাতায় বড় মিছিল করে। মিছিলের পর সভা থেকে মমতা সরাসরি জানিয়ে দেন, বাংলায় এনআরসি করতে দেওয়া হবে না।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলি বিলগ্নীকরণের প্রতিবাদে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন ময়দানের গান্ধীমূর্তির নিচে ২৫ দিন রিলে অনশন করে। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হলে, শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে লাগাতার আন্দোলন করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। রিলে অনশনে মুখ্যমন্ত্রী ও যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গিয়েছিলেন।
মমতা বলেন, বিপুল অঙ্কের ঋণের সুদ মকুব করতে রাজ্যের টাকা খরচ হয়ে যায়। তা সত্ত্বেও বাংলার উন্নয়নের রথ থেমে থাকেনি। সরকারি কর্মীরা মাসের ১ তারিখে বেতন পান। সম্প্রতি তিনি সরকারি কর্মীদের বেতন বাড়িয়ে দিয়েছেন। পে–কমিশনের সুপারিশ মেনেই তিনি এই কাজ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিএসএনএলের দুরবস্থা নিয়েও কথা বলবেন। এ ছাড়া এয়ার ইন্ডিয়া নিয়েও তাঁদের আলোচনা হবে। কলকাতায় মমতা বলেছেন, ‘বিএসএনএল ও এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মীরা খুব খারাপ অবস্থায় রয়েছেন। তাঁরা কোথাও যেতে পারেন না, তাই আমাকেই ওঁরা সব জানান।’ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের দুরবস্থা দেখে এবার তাঁদের পাশে দাঁড়াবেন মমতা।
২৩ সেপ্টেম্বর নেতাজি ইনডোরে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের নিয়ে তিনি সভা করবেন। প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থায় তৃণমূলের ইউনিয়ন আছে। সভার দায়িত্বে রয়েছেন সুব্রত মুখার্জি, শোভনদেব চ্যাটার্জি ও দোলা সেন। ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে রোজই বৈঠক করছেন নেতারা।
দোলা সেন জানান, ২৩ সেপ্টেম্বর ইনডোরে এত লোক আসবে যে, জায়গা দেওয়া মুশকিল হবে। ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের বিরোধিতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, কয়েকটি ব্যাঙ্কের সদর কার্যালয় কলকাতা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দেশের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। ব্যাঙ্কে যাঁরা টাকা রেখেছেন, তাঁরা আগামী দিনে সেই টাকা পাবেন কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন মমতা।
দিল্লি রওনা হওয়ার আগে মমতা বলে গেছেন, অনেক সমস্যা আছে। সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হবে।
Heartiest greetings to all on the occasion of Bishwakarma Pujo. Keeping with the tradition of Bangla, fly your kites high in the air, but with caution
সবাইকে বিশ্বকর্মা পুজোর শুভেচ্ছা। আনন্দে দিন কাটান, ঘুড়ি ওড়ান, কিন্তু সাবধানে pic.twitter.com/ybJctq2i5n
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) September 18, 2019
বিশ্বকর্মা পুজোর আগাম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। বলেন, ‘সব জায়গায় বিশ্বকর্মা পুজো হচ্ছে। নবান্নে পুলিসকর্মীরা পুজো করছেন। কালীঘাটে আমার অফিসেও পুজো হয়। কারখানায় হয়। বিশ্বকর্ম মানে বিশ্বকর্মা।’