বিশ্বকর্মা পুজো মানেই আকাশের রং বদল, বর্ধমানের ঘুড়িতে রঙিন হবে কলকাতা সহ জেলার আকাশ

0
575

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বিশ্বকর্মা পুজো মানেই আকাশের রং বদল। বাহারি ঘুড়িতে আকাশও রঙিন। এই করোনা আবহে সব উৎসব ফিকে হয়ে গেলেও ঘুড়ির উৎসবে কিন্তু তেমন প্রভাব ফেলতে পারে‌নি এই মারণ ব্যাধি। এমনই মত বর্ধমানের ঘুড়ি ব্যবসায়ীদের। কলকাতার আকাশের দখল নিতে বর্ধমান শহর থেকে লাখ লাখ ঘুড়ি পাড়ি দিয়েছে এ বছরও। তাই বর্ধমানের ঘুড়ি তৈরির কারখানাগুলোতে এ বছরও ব্যস্ততাও ছিল তুঙ্গে।

অন্যান্য জায়গায় বিশ্বকর্মা পুজোয় ঘুড়ি ওড়ানোর চল থাকলেও শহর বর্ধমানে বিশ্বকর্মা পুজোয় ঘুড়ি ওড়ে না। পৌষ মাসের সংক্রান্তি ও মাঘ মাসের প্রথম দিন বর্ধমান শহরের বিভিন্ন জায়গায় হয় ঘুড়ি উৎসব বা ঘুড়ির মেলা। রাজার আমল থেকেই এই রেওয়াজ চলে আসছে। সারা রাজ্যে যখন বিশ্বকর্মা পুজোয় ঘুড়ি ওড়ান মানুষ তখন বর্ধমান ঘুড়ি নিয়ে মেতে ওঠে মকর সংক্রান্তিতে।

কথিত আছে, রাজ আমলে বর্ধমান রাজবাড়িতেও ঘুড়ি ওড়ানোর চল ছিল। রাজা মহতাবচাঁদ নাকি নিজেই ঘুড়ি ওড়াতেন। বর্ধমানের রাজারা এসেছিলেন পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে। সেখানে ঘুড়ি উৎসব বেশ জনপ্রিয়। বর্ধমানের রাজাদের হাত ধরেই বর্ধমানে ঘুড়ি উৎসবের চল বলে মনে করা হয়। বর্ধমানে বিশ্বকর্মা পুজোর চল থাকলেও ঘুড়ি দেখা যায় না আকাশে। তবুও গত তিন মাস ধরে বর্ধমান শহরের ঘুড়ি তৈরির কারখানা গুলিতে ব্যস্ততা ছিল চোখেপড়ার মতো। 

কারণ বিশ্বকর্মা পুজোয় হাওড়া, সহ দুই চব্বিশ পরগনা বা কলকাতার ঘুড়ির একটা বড় অংশ যায় বর্ধমান থেকে। শহরের বড়বাজার, বিসি রোড, পার্কাস রোড থেকে ইতিমধ্যেই ঘুড়ির পসরা পাড়ি দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন ঘুড়ির দোকানে ছড়িয়ে গেছে বর্ধমানের তৈরি ঘুড়ি।

বর্ধমানের পার্কাস রোড এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী তন্ময় দত্ত বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই পাঁচ গাড়ি ঘুড়ি তিনি দমদমে পাঠিয়েছেন। এক একটি গাড়িতে ৫০ হাজার করে ঘুড়ি যায়।’’ রাত পেড়লেই বিশ্বকর্মা পুজো।

বড়বাজারের ব্যবসায়ী আতীয়ার শেখ, আকবর আলিরা বলেন, ‘‘লকডাউন বা করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও আমাদের ঘুড়ির বাজার মোটের ওপর ঠিক ছিল। গতবারের থেকে এবার ব্যবসা ৪০ শতাংশ মতো কম। একেবারে খারাপ কোনওভাবেই বলা যাবে না।’’ বিসি রোডের ব্যবসায়ী সইদুল শেখ বলেন, ‘‘এবারের ঘুড়ির দাম মোটামুটি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে৷ ছোট ঘুড়ি তিন টাকা, মাঝারি ঘুড়ি সাড়ে চার টাকা এবং বড় ঘুড়ি ৮ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত তিন মাস ধরে ঘুরি তৈরি করেছি আমরা।’’

তাই বলা যায়, বিশ্বকর্মার কৃপায় বর্ধমান শহরের ঘুড়ি ব্যবসায়ীরা লকডাউনের মধ্যেও কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখেছেন এবারও। তাদের ব্যবসা একেবারে ভোকাট্টা হয়ে যায়নি।

বনগাঁ, বারাসত ,দমদম সর্বত্র দোকানে আগের দিনই বেশির ভাগ ঘুড়ি বিক্রি হয়েগেছে বলে জনিয়েছেন বিক্রেতারা।বনগাঁর এক যুবক সবুজ চক্রবর্তী বলেন বনগাঁ রেল স্টেশন লাগোয়া ঢাকা পাড়ায় অন্যবারের মতো এবারও ঘুড়ি উড়বে বরং এবার বাড়ির ছাঁদ থেকেই বেশি ঘুড়ি উড়বে বলে বন্ধুরা ঠিক করেছে৷ সবুজের কথায় সে এবার ২৫টি ঘুড়ি কিনেছে আকাশ রঙিন করতে।

Previous articleজামনগরের বিশ্ববিদ্যালয়কেই জাতীয় স্বীকৃতি,রাজ্যসভায় পাশ আয়ুর্বেদ বিল
Next articleপুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠক করবে স্থানীয় থানা, পুজো নিয়ে তৎপরতা শুরু করে দিল নবান্ন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here