বাওবাব ট্রি`র পুনর্জন্ম দিলেন বিজ্ঞানীরা, স্বস্তি ফিরল শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনে

0
1460

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাওবাব ট্রি। শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনে অবশ্য সবাই কল্পতরু বৃক্ষ নামেই চেনে এই গাছকে। ভেষজ গুণে ভরপুর। তাই হয়তো এমন নাম।

২০ মে উমফানের তাণ্ডবে উদ্ভিদ উদ্যানে আরও অনেক গাছের মতো উপড়ে পড়েছিল এই শতাব্দী প্রাচীন কল্পতরু বৃক্ষও। প্রায় মৃত্যুর মুখ চলে যাওয়া সেই গাছকেই পুনর্জন্ম দিলেন বিজ্ঞানীরা। আপাতত পুরোপুরি সুস্থ আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ভারতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের অন্যতম গর্ব এই গাছটি।

কথিত আছে মুঘল যুগে সুদূর আফ্রিকা থেকে এই কল্পতরু বৃক্ষ নিয়ে আসা হয়েছিল ভারতে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় তা বসানো হয়েছিল। শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনে গাছটি বসানো হয়েছিল একশো বছর আগে। নানা ভেষজ গুণে সমৃদ্ধ এই গাছ। এর ফুল দিয়ে তৈরি হয় বন্ধ্যাত্ব দূর করার ওষুধ। আফ্রিকার উপজাতিরা যা খুবই ব্যবহার করে।

এর থেকেই বিশ্বাসের জন্ম। এই গাছ নাকি মানুষের ইচ্ছা পূরণ করে। তাই কল্পতরু বৃক্ষ হিসেবে এর পরিচিতি। পুজোও করেন অনেকে। বিশালাকার এই গাছের শরীরে জল ধারণের ক্ষমতা অপরিসীম। বর্ষার মরসুমে ধরে রাখা জল দিয়ে শুখা মরসুমে বেঁচে থাকার রসদ সংগ্রহ করে নেয় বাওবাব ট্রি। তাই ট্রি অফ লাইফ হিসেবেও উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা চেনেন এই গাছকে। প্রায় পাঁচ হাজার বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে বাওবাব ট্রি।

কিন্তু গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় উমফানের দাপটে মাটিতে পড়ে যায় প্রায় ষাট ফুট লম্বা এই গাছ। তারপরেই এই গাছকে বাঁচিয়ে তুলতে সংগ্রাম শুরু হয় উদ্যানের বিজ্ঞানীদের। কোনওভাবেই যাতে কোনও ইনফেকশন না হয় তার জন্য দেওয়া হতে থাকে ব্লাইটক্স নামের ওষুধ। জল যাতে শুকিয়ে না যায় তার জন্য গাছের শিকড় বিশেষ পদ্ধতিতে ভিজিয়ে রাখা হয়।

কিন্তু গাছটিকে আবার সোজা করে দাঁড় করানোর জন্য দরকার হয় ৪০ টনের ক্রেন, যা একমাত্র রয়েছে কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের। উদ্যানের অধিকর্তা ডঃ কনাদ দাস জানান, হাওড়া পুর নিগমের প্রাক্তন কমিশনার বিজিন কৃষ্ণর সাথে যোগাযোগ করেন তাঁরা। তিনি মেট্রো রেলের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। এরপর সেই ক্রেন নিয়ে এসে গাছটিকে দাঁড় করানো হয়। তিনি বলেন, ‘‘এই গাছ আমাদের অন্যতম সম্পদ। তাই একে বাঁচানো আমাদের কাছে একরকম চ্যালেঞ্জ ছিল। প্রায় দু’মাস পর ক্রেনের সাহায্যে গাছটি তুলে নতুনভাবে বসানো হল। তবে গাছের কুড়ি ফুট অংশ কেটে বাদ দিতে হয়েছে। এখন গাছটি পুরোপুরি সুস্থ আছে।’’

অসামান্য ভেষজ গুণের আধার এই বাওবাব ট্রি মানুষের সব ইচ্ছেপূরণ করে কি না সেটা অবশ্য জানা নেই বাগান কর্তৃপক্ষের। তবে গাছটিকে বাঁচিয়ে তোলার ইচ্ছে পূরণ হওয়ায় আপাতত দারুণ খুশি উদ্ভিদ উদ্যানের সমস্ত কর্মী আধিকারিকরা।

Previous articleকরোনায় ৫৬১ জনের মৃত্যুতে প্রায় ২৭ কোটি টাকার প্রাপ্য মেটানো হয়েছে বলে জনিয়েছে এলআইসি
Next articleকরোনায় আক্রান্ত শ্যামল চক্রবর্তী সহ তিন বাম নেতা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here