এবার সাগরদ্বীপের কাছে মন্দিরতলা এলাকায় হুগলি নদীর উপর টর্নেডো

0
837

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনা, ঘূর্ণিঝড়ের পর এবার বাংলায় ভয় বৃদ্ধি করছে টর্নেডো।  বৃহস্পতিবার সকালে  টর্নেডো আছড়ে পড়ল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার গঙ্গাসাগরের মন্দিরতলার পাশে। ইয়াসের ক্ষত কাটতে না কাটতেই টর্নেডোর আতঙ্ক যেন ছাড়ছেই না বাংলাকে । 

নদীর ওপরই স্তম্ভ আকারে দেখা দিল ঘূর্ণাবর্ত।জল স্তম্ভ আকারে পাক খেয়ে উপরের দিকে উঠছিল। নদীর বুক থেকে ক্রমশ তীরের দিকে আসতে থাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। প্রায় আধঘণ্টা ধরে নদীর উপর ছিল ওই টর্নেডো। পরে নদীর উপরেই মিলিয়ে যায় তা।নদী থেকে স্থলভাগে না ঢোকায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন স্থানীয়রা।স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনা এর আগে কখনও দেখেননি তাঁরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে নদীর পাড়েই চলছিল ভাঙন রুখতে কাজ। সেই কর্মীরাই প্রথম দেখতে পান নদীর মাঝে তৈরি হয়েছে টর্নেডো। এলাকায় মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। নদীর পাড়ে জমা হয়ে যায় স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রায় আধঘণ্টা ধরে মাঝনদীতেই তাণ্ডব চালায় এই ঝড়। শেষে নদীর বুকেই মিলিয়ে যায় এই টর্নেডো।

নদীর জলস্তরের উপরেই অবস্থান করায় জনবসতির কোনও ক্ষতি হয়নি। নইলে আধঘণ্টার টর্নেডোর দাপটে গোটা এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে বারবার এরকম স্থানীয় টর্নেডোর দাপটে নতুন করে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক।

আজ থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে সতর্কতামূলক প্রচার শুরু করেছে প্রশাসন। এদিন নামখানা এলাকায় টোটোয় চড়ে মাইকে প্রচার করেন বিডিও।

আসছে অমাবস্যার কটাল। তার সঙ্গে নিম্নচাপের সতর্কতা। রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় প্রশাসনের তরফে প্রচার করা হচ্ছে। অমাবস্যার কটাল ও নিম্নচাপের জেরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দিঘায় সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা থাকায় মাইকে প্রচার করে উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে বলা হয়েছ। মত্স্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। পাশাপাশি, পর্যটকদের সমুদ্রের ধারেকাছে যেতে নিষেধ করেছে প্রশাসন।

গত ২৮ মে অশোকনগর পুরসভার ২২ নং ওয়ার্ডের শক্তিনগর এলাকায় আচমকা টর্নেডো হয়। কয়েক মিনিটের ঝড়ের তাণ্ডবে আট থেকে দশটি বাড়ি পুরো গুঁড়িয়ে যায়। তা আগেই অশোকনগরের পাশাপাশি নদিয়ার শান্তিপুরেও ভোর রাতে ঝড়ের তাণ্ডব চলে। কয়েক মিনিটের দমকা হাওয়া, তাতেই লন্ডভন্ড হয়ে যায় গোটা এলাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক ঘরবাড়ি। কয়েক হাজার মুরগির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। শান্তিপুর থানার বাগআঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় টর্নেডো হয়। ভেঙে পড়েছে একাধিক বিদ্যুৎখুঁটিও

২৬ মে আচমকাই বাংলায় শুরু স্থানীয় টর্নেডোর দাপট। প্রথম টর্নেডো হয় ব্যান্ডেল ও হালিশহরে। আকাশ কালো করে ধেয়ে আসতে দেখা যায় ঝড়।। মুহূর্তের তাণ্ডবে কার্যত ধ্বংসলীলা চলে ব্যান্ডেল চার্চ সংলগ্ন এই এলাকায়। ভেঙে পড়ে দোকানপাট-গাছপালা। একইভাবে কয়েক মুহূর্তের জন্য নৈহাটি সহ হালিশহরে একাধিক এলাকা তছনছ হয়। একাধিক বাড়ি ভেঙে পড়ায় আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। এই ঘটনায় দু’জনের মৃত্যুও হয়।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে যখন ঘূর্ণাবর্তের পরিস্থিতি তৈরি হয় তখন এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে অনেক সময় ছোটখাটো টর্নেডো তৈরি হয়ে থাকে সমুদ্র বা নদীর ওপর। আবহাওয়া মন্ডলের ওপরে ও নিচে তাপমাত্রার ফারাক থাকলে এমনটা হয়ে থাকে। ঘূর্ণাবর্তের অনুকূল পরিস্থিতি সময় এ ধরনের ছোটখাটো টর্নেডো সমুদ্র বা নদীতে তৈরি হয়ে থাকে।

Previous articleপ্রয়াত পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, বিনোদন দুনিয়ায় শোকের ছায়া
Next articlePHOTO FIGHT ফোটো ফাইট:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here