দেশের সময়,ওয়েবডেস্কঃ করোনা নিয়ে বিশ্ব জুড়ে হইচই শুরু হতেই ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই পেট্রাপোল সীমান্তে করোনা হেল্পডেস্ক চালু করে স্বাস্থ্য দপ্তর। আকাশপথের পাশাপাশি সড়কপথেও যাতে করোনায় আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি ভারতে প্রবেশ করতে না পারেন, তার জন্যই এই হেল্পডেস্ক চালু করা হয়। অভিবাসন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করেছেন ৩৬৬৫ জন। শনিবার ছিল ৩৯০০ জন। অন্যান্য স্বাভাবিক সময় এই সংখ্যাটি থাকে গড়ে প্রায় ৮০০০। সোমবার সকালেও একই চিত্র পেট্রাপোল সীমান্তে।
দীর্ঘ লাইন যাত্রীদের –ছবি-পার্থ সারথি নন্দী৷
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করা পাসপোর্টধারী যাত্রীদের শরীরে জ্বর আছে কি না, তা জানার জন্য রেডিয়েন্ট থার্মোমিটার ব্যবহার শুরু হয়। ওই ব্যক্তি জ্বরে আক্রান্ত কিনা, তা বোঝা যায়। এর সঙ্গে সর্দি, কাশি বা শ্বাসকষ্ট আছে কিনা তা জেনে নেওয়া হচ্ছে।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এন্ড স্টাফ ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ থেকে যেসমস্ত ট্রাক চালক ও খালাসি এ দেশে ঢুকছে এবং এপার বাংলা থেকে ওপার বাংলায় যাচ্ছে
তাঁদেরকে সঠিক ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছেনা৷ প্রায় এক হাজারেরও বেশি ট্রাক চালকও খালাসি এপথে যাতায়াত করেছেন প্রতিদিন৷
উত্তরবঙ্গে সতর্কতা আরও বেশি। নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ–এই তিন দেশের সীমান্ত রয়েছে উত্তরবঙ্গে। তিন দেশ থেকেই আসা–যাওয়া চলে। ভারত–নেপাল সীমান্তের পানিট্যাঙ্কিতে শুরু হয়েছে কড়া সতর্কতা। প্রতিদিনই সীমান্তে সমস্ত গাড়ির চালক ও যাত্রীদের থার্মাল স্ক্যানিং চলছে।
পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হলে ভারত–নেপাল সীমান্ত সিল হতে পারে বলেও গুঞ্জন ছড়িয়েছে সীমান্তে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত জানুয়ারি থেকেই ভারত–নেপাল সীমান্তে পশুপতি, পানিট্যাঙ্কি, সীমানা এবং ওকাইটি এলাকায় শিবির করে স্বাস্থ্য দপ্তর নজরদারি চালাচ্ছে। রোহিণীর কাছে শিমুলবাড়িতেও গত তিনদিন ধরে স্ক্রিনিং ক্যাম্প শুরু হয়েছে।
ভারত–ভুটান আন্তর্জাতিক সীমান্তে অবস্থিত চামুর্চি–সামসি চেকপোস্টেও বিশেষ নজরদারি শুরু হয়েছে। শিবিরটি সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি) এবং বানারহাট থানার পুলিশ আধিকারিকদের সহায়তায়, বানারহাট হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের নজরদারিতে চলছে। স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়ার পরই ভারতে ঢোকার অনুমতি মিলছে।
একইভাবে জয়গাঁ সীমান্তেও যাত্রীদের থার্মাল স্ক্যানিং করা হচ্ছে। পাঁচদিন ধরে এই ক্যাম্প চলছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তেও একটি অস্থায়ী স্বাস্থ্য শিবির খোলা হয়েছে। গত ৩ দিন ধরে চলছে এই শিবির। সেখানেও মাস্ক ব্যবহার করছেন সেনা জওয়ানরা। মালদার মহদিপুরে ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তে পর্যটকদের শারীরিক পরীক্ষার ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। অসুস্থ রোগীদের শারীরিক পরীক্ষার যাবতীয় তথ্য কলকাতায় পাঠানো হচ্ছে।