দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃমাঘের শীতে কাঁপছে বাংলা। কনকনে ঠান্ডার কাঁপুনি কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বহাল। রবিবারের থেকে আজ আরও পারদ নামল কলকাতায়। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, সপ্তাহের শুরুতে শহরে পারদ নামল ১১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা স্বাভাবিকের থেকে ৫ ডিগ্রি কম। উল্লেখ্য, রবিবার শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাস দিয়েছিল, আগামী বুধবার পর্যন্ত বাড়বে ঠান্ডা। সেইমতো রবিবারের তুলনায় সোমবার আরও নামল তাপমাত্রা। ১১ ডিগ্রিতে পৌঁছে গিয়েছে কলকাতার তাপমাত্রা। জেলার তাপমাত্রা আরও কম। সেইসঙ্গে ভোরের দিকে রয়েছে কুয়াশার দাপট। জানুয়ারির শেষ থেকে ফের দাপুটে ব্যাটিং শুরু করেছে শীত। আরও ৪৮ ঘণ্টা শীতের এই মেজাজ চলবে বলেই জানা গিয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, সোমবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ৫ ডিগ্রি কম। গতকাল শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ৫ ডিগ্রি কম। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার সর্বনিম্ন পরিমাণ ৪৬ শতাংশ ও সর্বোচ্চ পরিমাণ ৯৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়নি।
ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সকালের দিকে রয়েছে কুয়াশার দাপট। জেলা তো বটেই কলকাতাতেও সকালের দিকে ভাল কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। বেলা বাড়লে অবশ্য আকাশ পরিষ্কার হবে বলেই পূর্বাভাস। আর তাই তাপের বিকিরণ হবে ভাল। এই বিকিরণের ফলেই সন্ধ্যার পর থেকে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা, অর্থাৎ বুধবার পর্যন্ত পারদ পতন বজায় থাকবে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তারপর থেকে আবার ধীরে ধীরে বাড়বে তাপমাত্রা। ততদিন লেপ-কম্বল মুড়ি দিয়েই কাটাতে হবে রাজ্যবাসীকে।
তবে বিহারে ঘন কুয়াশা থাকায় বিহার সংলগ্ন উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি যেমন মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে ঘন কুয়াশা দেখা যাবে। এছাড়া দার্জিলিং, কালিম্পং ও আলিপুরদুয়ারেও ভাল কুয়াশার প্রভাব থাকবে বলেই জানিয়েছে আলিপুর। রবিবারের পরে আগামী মঙ্গলবারও জম্মু-কাশ্মীরে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঢুকবে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। ক্রমেই তা উত্তর ভারতের দিকে অগ্রসর হবে। বুধবারের পর থেকে এ রাজ্যেও তার প্রভাব পড়তে পারে বলেই জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, আগামী কয়েকদিনে এমনই দাপট দেখাবে শীত। গত কয়েকদিন আগে ঘন কুয়াশার জেরে তাপমাত্রার পারদ খানিকটা বেড়েছিল। তবে, জাঁকিয়ে শীতের খামখেয়ালিপনা বহাল ছিল। কিন্তু, ফেব্রুয়ারির শুরুতেই ফের ঝোড়ো ইনিংস খেলতে একেবারে স্বমহিমায় শীত।
এদিন কলকাতায় আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ সর্বাধিক ৯৭ শতাংশ, সর্বনিম্ন ৪৬ শতাংশ। একনজরে দেখে নেওয়া যাক এদিন কোথায় কত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা? আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, আসানসোলে পারদ নেমেছে ৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাঁকুড়ায় পারদ ছুঁয়েছে ৮.৬ ডিগ্রিতে, ব্যারাকপুরে তাপমাত্রা নেমেছে ৯.১ ডিগ্রিতে,বহরমপুরে পারদ নেমেছে ১৩ ডিগ্রিতে, বর্ধমানের তাপমাত্রা ছুঁয়েছে ৮.৮ ডিগ্রিতে, ক্যানিংয়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি, কাঁথির পারদ নেমেছে ৭ ডিগ্রিতে, কোচবিহারে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫.১ ডিগ্রি, দার্জিলিং কাঁপছে ২.৪ ডিগ্রিতে, ডায়মন্ডহারবারে পারদ নেমেছে ১১.৪ ডিগ্রিতে, দিঘায় তাপমাত্রা ছুঁয়েছে ১২.৬ ডিগ্রি, দমদমের তাপমাত্রা ১১.৩ ডিগ্রি, হলদিয়ার তাপমাত্রা ১২.৯ ডিগ্রি, জলপাইগুড়িতে পারদ ছুঁয়েছে ৭.৭ ডিগ্রি, কালিম্পঙে ৬ ডিগ্রি, কৃষ্ণনগরের ১২.৪ ডিগ্রি, মালদায় ৮.২ ডিগ্রি, মেদিনীপুরে তাপমাত্রা ছুঁয়েছে ১১.৫ ডিগ্রিতে, পানাগড়ে ৬.২ ডিগ্রি, পুরুলিয়ায় ৬.৭ ডিগ্রি, সল্টলেকে ১১.৩ ডিগ্রি, শিলিগুড়ি ৭.৫, শ্রীনিকেতনে ৭.২ ডিগ্রি।
উল্লেখ্য, নতুন বছরের শুরুতে ঠান্ডা দাপট দেখালেও, কয়েকদিন বাদেই তা ফিকে হয়ে যায়। এমনকী, জানুয়ারির মাঝ সপ্তাহে একেবারে উবে গিয়েছিল শীতের আমেজ। এরপর,খানিকটা কামব্যাকের চেষ্টা করলেও আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় হাড়কাঁপানো ঠান্ডার আমেজ ব্রাত্যই থেকে গিয়েছে শীতপ্রেমীদের কাছে। ফলে শেষবেলায় যেভাবে দাপট দেখাচ্ছে ঠান্ডা, তাতে স্বস্তিতে শীতপ্রেমীরা।