দেশের সময় , বনগাঁ: পুরসভার অস্থায়ী কর্মীদের আন্দোলনের জেরে গত চারদিন ধরে পরিষেবা ব্যাহত। আবর্জনা পরিষ্কার না হওয়ায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে গোটা বনগাঁ শহর জুড়ে। পুরসভার বিদ্রোহী কাউন্সিলরদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন উপপ্রধান। এই নিয়ে শুরু হয়েছে দু’পক্ষের তরজা।
পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গত চারদিন ধরে পৌরসভার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করে আন্দোলন চালাচ্ছেন পুরসভার বিভিন্ন বিভাগের অস্থায়ী কর্মীরা। এর মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল সাফাই বিভাগের অস্থায়ী কর্মীদের যোগদান। কারণ তাদের এই আন্দোলনের ফলে শহরের সমস্ত ওয়ার্ডে নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে । এর ফলে ময়লা আবর্জনা জমতে জমতে তা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে ।
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আর তাকে কেন্দ্র করেই ক্ষোভ বাড়ছে পুর নাগরিকদের ভেতরে । আন্দোলনকারীদের বক্তব্য দীর্ঘদিন ধরে তারা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বেতন বৃদ্ধি, পিএফ চালু করার দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কর্ণপাত না করায় তারা এবারে আন্দোলনে নেমেছেন ।
যতক্ষণ না তাদের এই দাবি পূরণ হবে ততক্ষণ তারা এইভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তাদের আরও অভিযোগ চারদিন আন্দোলন সত্ত্বেও পুরসভার কোন আধিকারিক তাদের সামনে এসে কোন কথা বলা বা তাদের দাবি মেনে আলোচনায় বসার কথা জানান নি। ফলে তারা আন্দোলন চালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন । এতে পুরসভার পরিষেবা বিঘ্নিত হলেও তাদের কিছু করার নেই।
বনগাঁর স্থানীয় বাসিন্দা বিনয় সিংহ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ট, বাজার সংলগ্ন থানা পাড়া এলাকাটা যেন আবর্জনার পাহাড় তৈরী হয়েছে, এখন সব চেয়ে ভয়ের কারণ এই আবর্জনার সাথে বৃষ্টির জল জমে সেখানে ডেঙ্গুর’ বাসা বাঁধবে মশা৷ সেই আতঙ্ক এখন তাড়া করে বেড়াচ্ছে এলাকার সমস্ত মানুষদেরকে৷
এই পরিস্থিতি তৈরীর পেছনে পুরসভার ১২ জন বিদ্রোহী কাউন্সিলরকে দায়ী করেছেন পৌরসভার উপ প্রধান কৃষ্ণা রায় । তার অভিযোগ পুর নাগরিকদের কথা না ভেবে শুধু নিজেদের স্বার্থে প্রথমে অনাস্থা এবং পরে দল ত্যাগ করার কারণে একটা অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে । এতদিন হয়ে গেলেও ওই ১২ কাউন্সিলর কোন আলোচনায় বসছেন না। ফলে নাগরিক পরিষেবা ব্যাপকহারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে । তিনি আরো জানান পয়লা জুলাই অস্থায়ী কর্মীদের নিয়ে একটি বৈঠক করার কথা আপাতত ঠিক হয়েছে । আশা করি সেই বৈঠকেই সব সুরাহা হয়ে যাবে।
বনগাঁ পুরসভার বিদ্রোহী কাউন্সিলর মনতোষ নাথ জানান,বিজেপি বোর্ড গঠন হ’লে এই সমস্ত সাফাই কর্মীদের দাবি গুলিকে সুবিবেচনা করে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে৷ সাফাই কর্মীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, কোন একজন বেক্তির বেক্তিগত স্বার্থের জন্য সমস্ত সাধারন মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে এবং মানুষ কষ্ট পাচ্ছে৷তাই বনগাঁ শহরের মানুষের কথা ভেবে কাজে যুক্ত হন৷
আরও এক কাউন্সিলর সোমাঞ্জনা মুখার্জি (মুন্সি) বলেন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যই পর্দার পিছনে থেকে এই সমস্ত সাফাই কর্মীদেরকে ভুল পথে পরি চালনা করছেন৷তার বিরুদ্ধে তো আমারা ১২ জন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাব এনেছি,তিনি কেন চেয়ার ছাড়ছেন না?তিনি চেয়ার টা ছেড়েদিক , তাহলেইতো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়৷ অনাস্থা প্রস্তাবের মিটিং তিনি কেন এড়িয়ে গেলেন ,এই বিষয়ে আমরা উপ-পুরপ্রধানকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি৷ আসলে এই সাফাই কর্মীদেরকে নিয়ে পুর প্রধান রাজ নীতি করছেন, আর সেই জন্যই বনগাঁর মানুষ এখনও ভূগছেন৷