দেশের সময়: বনগাঁ শহরে কন্টেনমেন্ট জ়োন এলাকায় থাকা ব্যাঙ্ক, ওষুধ পরিষেবা গত মঙ্গলবার ব্যাহত হয়েছিল,ফের বুধবার থেকে অবশ্য শর্ত সাপেক্ষে ওই সব পরিষেবা চালু হয়েছে। বনগাঁ পুলিশ প্রশাসনের সিদ্ধান্তে।
‘‘ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, ওষুধের দোকান, নার্সিংহোম বুধবার থেকে চালু ছিল। তবে ওই সব কর্তৃপক্ষকে থার্মাল গান দিয়ে মানুষের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। রেজিস্ট্রারও রাখতে হবে।’’ সংক্রমণ ঠেকাতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে হবে বলে বনগাঁ প্রশাসনের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যশোর রোড, চাকদারোড ও বাগদা রোড কন্টেনমেন্ট জোনের আওতায় ছিল। এর ফলে ট বাজার নিউমার্কেট, রেলবাজার, নেতাজি মার্কেট, চাঁপাবেড়িয়া বাজার বন্ধ ছিল সোমবার পর্যন্ত৷
বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ এবিষয়ে দেশের সময় কে বলেন, জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে দাবি জানিয়েছিলেন বনগাঁর ব্যাবসায়ীদের স্বার্থে। তাঁর কথায় , মানুষ কন্টেনমেন্ট জ়োন তৈরির সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। কিন্তু তার প্রয়োগ পদ্ধতি নিয়ে ক্ষুব্ধছিলেন এবং ব্যাপক ক্ষোভে ফুঁসছিলেন। জরুরি পরিষেবা চালু করতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব সমস্ত দোকান খুলে দিয়ে সাধারণ মানুষকে তাঁদের ব্যাবসার সুযোগ করে দিতে হবে। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়মল্লিক কে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে অনুরোধও করেন৷ আর হলোও তাই, সোমবার বনগাঁর সমস্ত ব্যাবসায়ী সংগঠন পুরপ্রধানের কাছে দোকান খোলার জন্য আবেদন করেন এবং পুরপ্রধান ও প্রশাসনের সহমতে মঙ্গল বার সকাল থেকে শহরের সমস্ত দোকান খোলার অনুমতি পান পাশাপাশি বনগাঁ বাগদা এবং চাকদা রুটের বাস চলাচলও শুরু করা হবে এদিন থেকেই।
একই দাবিতে গত সোমবার কংগ্রেস, বিজেপি ও বামদলগুলি মহকুমাশাসকের কাছে আলাদা করে স্মারকলিপিও জমা দিয়েছে। বামেদের দাবি, রাজনৈতিক কর্মীদের মানুষের কাছে যেতে দিতে হবে। দলীয় কার্যালয় খুলতে দিতে হবে। কেন কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হল, তার কারণও জানতে চাওয়া হয়। সোমবার সকালে বনগাঁ বাটামোড় এলাকায় বামেরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভও দেখায়।
বনগাঁ শহর তৃণমূল সভাপতি তথা পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত মতো সড়ক ও বাজার এলাকা কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষিত করা হয়েছিল । পুরসভা মানুষের জরুরি পরিষেবা পৌঁছে দিতে দিন রাত ছুটে কাজ করেছে।’’ মানুষের পাশে পুরসভা সবসময় আছে, তাই স্থানীয় ব্যাবসায়ীদের নৈতিক আবেদনকে সন্মান জানিয়ে এবং তাঁদের ব্যাবসাকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে মহকুমাশাসক এবং পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে জরুরী ভিত্তিতে বৈঠক করে ব্যাবসায়ীদের স্বার্থে বেশ কিছু নিয়ম ও মেনে মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৩টে পর্যন্ত সমস্ত দোকান খুলে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দূরত্ব বজায় রেখে সরকারী সমস্ত নিয়ম মেনে প্রত্যেক কে তাঁর ব্যাবসার প্রতিষ্ঠান চালু রাখতে বলা হয়েছে। এখন দেখা হবে ব্যাবসায়ীরা নিয়ম সঠিক নিয়ম মেনে চললে আগামী দিনে দোকান খোলা রাখার সময়সীমা আরও বাড়ানোর কথা ভাবা হবে৷
বনগাঁর দুটি ব্যাবসায়ী সমিতির কর্ণধার মন্টু সাহা এবং বিনয় সিংহ জানান মঙ্গলবার থেকে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করে নিয়ম মেনে প্রতিষ্ঠানের পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা হবে পুরসভার পুরপ্রধান এবং পুলিশ প্রশাসনকে আন্তরিক আভিনন্দন জানান তাঁদের আবেদনকে সন্মান জানানোর জন্য।’’
বনগাঁ শহরের দোকান খুলছে এবং বাগদা, চাকদা রুটের বাস চলবে শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা যেন ডুবন্ত জাহাজে অক্সিজেন পেল।