দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মতুয়া ভোটকে মাথায় রেখে রাজ্যের আগামী বিধানসভা নির্বাচনে এগোচ্ছে সব রাজনৈতিক দলই। তৃণমূলও তার ব্যতিক্রম নয়। উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরে তৃণমূল নেত্রীর জনসভাতেই তার প্রভাব পরল। সেখানে মতুয়া সম্প্রদায়ের পতাকা লাগানো হলো। মতুয়াদের মন পেতেই এই উদ্যোগ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ গোপালনগর হাইস্কুলের যে মাঠে দিন কয়েক আগে সভা করে গিয়েছিলেন, সেই মাঠেই সভা করছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এটিকে পাল্টা সভা হিসেবে বলতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব।
উল্লেখ্য,গত রবিবার সকালে দলীয় গৃহসম্পর্ক অভিযান কর্মসূচিতে যোগ দিতে বনগাঁ শহরে আসেন কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত । তিনি এদিন দুপুরে এক মতুয়া ভক্ত বিবেকানন্দপল্লির বাসিন্দা অর্চনা বণিকের বাড়িতে খাওয়াদাওয়া করেন ৷ বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘ অর্চনা দেবী একজন মতুয়া ভক্ত। তাই মন্ত্রীর ইচ্ছা মতো মতুয়া বাড়িতে খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।’’ তাছাড়া মতুয়াদের জন্য কেন্দ্র সরকার আগামী দিনের পথ আরও প্রশস্ত করছে,পাশাপাশি তিনি বলেন তৃণমূলের প্রতি মোহ ভঙ্গ হয়েছে মতুয়াদের, তাই কোন প্রচারেই মতুয়াদের মন গলবে না৷তাঁরা ভারতীয় জনতা পার্টির সাথে মন বেঁধে ফেলেছেন ছবি টা একুশের ভোট চিত্রে পরিষ্কার হয়ে যাবে৷
জেলা তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর গোপাল শেঠ অবশ্য কটাক্ষ করে বলেন, বিজেপির ঘর জামাই হয়ে যারা থাকে তাঁদের কথা মানুষ বিশ্বাস করেনা, আগে নিজের ছবিটা পরিষ্কার করা উচিত, তারপর অন্য ছবির কথা বলা উচিত,‘‘মতুয়াবাড়িতে খেয়ে তাঁদের সাথে থেকেই মতুয়াদেরই ফের বাংলাদেশে পাঠানোর চক্রান্ত করছে বিজেপি। বনগাঁয় এসেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে স্থানীয় কোন বিজেপি নেতারা ইছামতী নদীর দিকে তাকিয়ে দেখলেন না। বনগাঁ নিয়ে কেন্দ্রের এই বঞ্চনার জবাব দেবে মানুষ।’’ আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মতুয়াদের পাশে ছিলেন আগামী দিনেও থাকবেন৷
বনগাঁ পুরসভার পুরপ্রশাসক শঙ্কর আঢ্য বলেন গোপাল নগর মাঠে হাজার হাজার মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ আসছেন দিদির জন্য, একুশের ছবিটা কী হবে তারই নমুনা দেখাবে বনগাঁ।
মতুয়াদের সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে জয়ী হয়ে আসা বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের জন্য দরজা খুলে রাখছে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার বাগদায় দলের কর্মিসভা থেকে এ কথা জানালেন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
উল্লেখ্য, মতুয়াদের সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে জয়ী হয়ে আসা বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের জন্য দরজা খুলে রাখছে তৃণমূল। কয়েকদিন আগেই বাগদায় দলের কর্মিসভা থেকে এ কথা জানিয়েছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি শান্তনুর উদ্দেশে বলেন, ‘‘মতুয়াদের জন্য আমরা কাজ করতে চাই। শান্তনু যদি মতুয়াদের জন্য কাজ করতে চান, তা হলে দু’টো হাত মেলাতে আমাদের কোনও ক্ষতি নেই। তবে আমাদের প্ল্যাটফর্মে এসে ওঁকে কাজ করতে হবে। বিজেপির প্ল্যাটফর্মে থেকে নয়। কারণ বিজেপি ধান্দাবাজ, মিথ্যাবাদী প্রবঞ্চকের দল।’’
বুধবার হেলিকপ্টারে করে গোপালনগরে আসবেন মমতা। মঞ্চে একাধিক নেতা, মন্ত্রীর থাকার কথা রয়েছে। এই সভায় লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটবে বলে দল মনে করছে। মঙ্গলবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেলো সভার প্রস্তুতি চলছে জোড় কদমে। ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। প্রচুর ফ্লেক্স, ব্যানার লাগানো হয়েছে। তৃণমূল যুব কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এদিন বনগাঁ থেকে গোপালনগর পর্যন্ত একটি মোটরসাইকেল রালিও করা হয়।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বনগাঁ মহকুমা মতুয়া অধ্যুষিত। ভোটে মতুয়াদের বড় ভূমিকা থাকে। সামনেই বিধানসভার ভোট। তার আগে মতুয়া বাড়িতে খেয়ে বিজেপি বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে, তারা মতুয়াদের পাশে আছে।আর তারই পাল্টা তৃণমূলের গোপাল নগরের জন সভা থেকে দল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বার্তা দেন মতুয়াদের জন্য তারই অপেক্ষায় সকলে৷