দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনা রোগীদের উপরে প্লাজমা থেরাপি সন্তোষজনক ফল দিয়েছে বলেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, দিল্লির লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালে চারজন করোনা রোগীর চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি ব্যবহার করা হচ্ছিল গত কয়েকদিন ধরে। এখনও অবধি এই চিকিৎসায় ভাল কাজ হয়েছে। রোগীদের শারীরিক অবস্থাও স্থিতিশীল।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) অনুমোদনের পরেই দিল্লি, গুজরাত ও কেরলে প্লাজমা থেরাপির ট্রায়াল শুরু হয়। দিল্লিতে এই থেরাপির ট্রায়াল সফল বলে আজই দাবি করা হয়েছিল স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, যে রোগীদের উপরে প্লাজমা থেরাপির প্রয়োগ হয়েছে তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এখনও অবধি এই থেরাপির রেজাল্ট বেশ ভালোর দিকেই।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) জানিয়েছিল যতদিন না কোভিড ভ্যাকসিন ও কার্যকরী ড্রাগ বাজারে আসছে, বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা যেতেই পারে। এক্ষেত্রে প্লাজমা-থেরাপি (Convalescent Plasma Therapy) এবং প্লাজমা এক্সচেঞ্জ থেরাপি, দু’রকম পদ্ধতির ব্যবহার হতে পারে বলে জানিয়েছিল আইসিএমআর।
Initial trials of plasma therapy give hope… https://t.co/8ZQmeCWiPu
— Arvind Kejriwal (@ArvindKejriwal) April 24, 2020
পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির(এনআইভি) সহযোগিতায় প্লাজমা থেরাপি নিয়ে গবেষণা চলছে আইসিএমআরে। জানানো হয়েছে, এই থেরাপি কিছুদিনের ড্রাগ কন্ট্রোলের অনুমোদন চলে আসবে। এর পরেই মানুষের উপর ট্রায়ালের জন্য রেজিস্ট্রি করা হবে। তবে ইতিমধ্যেই কেরল ও গুজরাতের কয়েকটি হাসপাতালে এই থেরাপি শুরু করে দিয়েছেন ডাক্তাররা। কেরল সরকারের উদ্যোগে কয়েকটি হাসপাতালে ডাক্তার ও বিজ্ঞানীদের নিয়ে তৈরি হযেছে টাস্ক ফোর্স। প্লাজমা থেরাপির প্রয়োগ কীভাবে হবে সেই নিয়ে প্রোটোকল বানানো হয়েছে। অন্যদিকে, আহমেদাবাদের দু’টি হাসপাতালে প্লাজমা থেরাপি শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। গুজরাতের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের মুখ্যসচিব জয়ন্তী রবি বলেছেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানির। প্লাজমা থেরাপি শুরু করার ব্যাপারে কেন্দ্রের অনুমতি মিলেছে। মৌখিকভাবে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেলের অনুমতিও পাওয়া গেছে। রোগীদের উপরে এই থেরাপির প্রয়োগ করা হবে।
প্লাজমা থেরাপি হল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের শরীরের প্লাজমা বা রক্তরস নিয়ে করোনা আক্রান্তদের শরীরে তা প্রতিস্থাপন করা। তাহলে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির অ্যান্টিবডি আক্রান্তের শরীরে গিয়ে কোভিড ১৯ ভাইরাসকে হারিয়ে তাঁকে সুস্থ করে তুলতে পারবে বলেই বিজ্ঞানীদের ধারণা। যদিও এখনও এই টেস্ট করে দেখা হয়নি।
জানা গিয়েছে, কোনও ব্যক্তি করোনা সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পরে একাধিকবার তাঁর শরীরে পরীক্ষা করে দেখা হয়। একবার সুস্থ হওয়ার পর ১৪ দিন ধরে যদি তাঁর রিপোর্ট নেগেটিভ আসে, তখন তাঁকে পুরোপুরি সুস্থ বলা যায়। এরকম হলে তবেই তাঁর প্লাজমা এই থেরাপির জন্য নেওয়া হবে। করোনা চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি নিয়ে গবেষণা চলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন ও ব্রিটেনে।