দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রয়াত বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী এসপি বালাসুব্রহ্মণ্যম। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। গতকাল থেকেই অত্যন্ত সংকটজনক অবস্থায় ছিলেন তিনি। রাখা হয়েছিল সর্বোচ্চ লাইফ সাপোর্টে। গত অগস্ট মাসে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন এই সঙ্গীতশিল্পী। তারপর থেকেই ক্রমশ শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছিল তাঁর। প্রায় ২ মাস ধরে চেন্নাইয়ের এমজিএম হেলথকেয়ারে ভর্তি ছিলেন তিনি। আজ সেখানেই মৃত্যু হয় সঙ্গীতশিল্পীর।
গতকাল হাসপাতালের বুলেটিনে বলা হয়েছিল, “এসপি বালাসুব্রহ্মণ্যমের শারীরিক অবস্থার গত ২৪ ঘন্টায় আরও অবনতি হয়েছে। তাঁকে ম্যাক্সিমাম লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। এমজিএম হেলোথকেয়ারের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি টিম সর্বক্ষণ পরিস্থিতির উপর নজর রেখে চলেছে।” গতকাল এসপি-র অবস্থা আশঙ্কাজনক শোনার পর আজ সকালে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন কমল হাসান। গায়কের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছিলেন সলোমন খানও।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর এসপি-র ছেলে চরণ একটি ভিডিও বার্তায় জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। সবরকম সূচক স্বাভাবিক। শরীরে আর কোনও সংক্রমণ নেই। চরণ আরও জানিয়েছিলেন, সুব্রহ্মণ্যমের ফুসফুস পুরোপুরি সেরে উঠতে অবশ্য আরও একটু সময় লাগবে। তিনি ফিজিও করছেন। উঠে বসতে পারছেন। এক দিন অন্তর ডাক্তাররা তাঁকে তুলে বসাচ্ছেন। ১৫ থেকে কুড়ি মিনিট তিনি একটানা বসে থাকতে পারছেন।
কিন্তু তার বাহাত্তর ঘন্টার পর থেকেই কিম্বদন্তী এই গায়কের শারীরিক অবস্থার ফের অবনতি হতে শুরু করে। গত মাসের ৫ তারিখ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এসপি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও পোস্ট করে জানিয়েছিলেন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে ভাল আছেন। সে সময় এসপি জানিয়েছেন যে তিনি আশা করছেন ২ দিনের মধ্যেই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন। তবে বাস্তবে তা হয়নি।
সংক্রমণ কমে গেলেও ভেন্টিলেশন থেকে বের করা যায়নি সঙ্গীতশিল্পীকে। ক্রমাগত তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে আইসিইউ-তে রাখা হয়। তখন থেকেই ইসিএমও এবং ভেন্টিলেটরের সাপোর্টে রয়েছেন তিনি।
অগস্টের ৫ তারিখ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ৭৪ বছর বয়সী এই প্রবাদপ্রতীম গায়ক একটি ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, তাঁর শরীরে সংক্রমণ মৃদু। ডাক্তাররা তাঁকে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি হাসপাতালে ভর্তি হওয়াটাই উচিত হলে মনে করেছেন। নইলে পরিবারের জন্য ঝুঁকি হতে পারে। ওই পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, আশা করছি দু দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরব। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হল না এসপি-র।
৬টি জাতীয় পুরস্কার জয়ী এসপি বালাসুব্রহ্মণ্যম প্রায় ১৬টি ভাষায় ৪০ হাজার গান গেয়েছে। ইলাইয়ারাজা, এ আর রহমানের পাশাপাশি কাজ করেছেন আরও অনেক প্রবাদপ্রতিম সঙ্গীত পরিচালকের সঙ্গে। দক্ষিণী ছবির জগতের পাশাপাশি বলিউডেও এসপি-র অবদান অনস্বীকার্য।
কেরিয়ারের শুরুর দিকে সলমন খানের অসংখ্যা ছবিতে পেল-ব্যাক করেছিলেন এই বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী। গায়কের পাশাপাশি এসপি ছিলেন অভিনেতা, প্রযোজক এবং ভয়েস অ্যাক্টর। পেয়েছিল পদ্মশ্রী এবং পদ্ম বিভূষণ সম্মানও।