দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ২০১৪ সালের টেটে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে স্থগিতাদেশ দিল হাইকোর্ট৷ ভোটের আগে আটকে গেল ১৬ হাজার ৫০০ জন শিক্ষক নিয়োগ। বড়সড় ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। আজ বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ সিংগেল বেঞ্চে নিয়োগে স্থগিতাদেশ দিলেন। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বজায় রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের। চার সপ্তাহ পর ফের শুনানি হবে।
২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় অস্বচ্ছ মেধাতালিকা প্রকাশের অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী। তাঁদের দায়ের করা সেই মামলার জেরেই এদিন কলকাতা হাইকোর্ট এই নির্দেশ করেছে।
২০১৪ সালে ১৬ হাজার ৫০০ শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য টেটের এই পরীক্ষা হয়েছিল। সেই পরীক্ষার পরে এতদিনে নিয়োগ প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এরইমধ্যে নিয়োগ তালিকা নিয়ে অস্বচ্ছতার অভিযোগ ওঠে। তার জেরে আদালতে দায়ের হয় মামলা। আজকের রায় বলছে, এই মামলার নিষ্পত্তি যতদিন না হচ্ছে ততদিন এই স্থগিতাদেশ থাকবে।
মামলাকারীদের মূল বক্তব্য ছিল, এমন অনেক প্রার্থীর কাছে নিয়োগপত্র গিয়েছে, যাদের নাম মেধাতালিকাতে ছিল না। এর বাইরেও একাধিক অস্বচ্ছতার অভিযোগ ওঠে এই তালিকা ঘিরে। এর পরই আদালত সবদিক খতিয়ে দেখে নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেয়। এর ফলে যাদের কাছে নিয়োগপত্র পৌঁছেছে, সেগুলিও এখন কার্যকর হবে না বলেই জানিয়েছে আদালত। মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ করতে পারবে পর্ষদ। অর্থাৎ চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্তে যেমন বড় ধাক্কা তেমনই ভোটের আগে মুখ পুড়ল রাজ্য সরকারেরও।
রাজ্য সরকার এই নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশনাল বেঞ্চে আবেদন করবে কিনা তা এখনও জানা যায়নি। যদিও সেই সম্ভাববনা বিধানসভা নির্বাচনের মুখে খুব কম বলেই জানা গিয়েছে। হাইকোর্টের এদিনের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলিও।
এর আগে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ভূরি ভূরি দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ চলছে বলে অভিযোগ জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁদের অভিযোগ ছিল,, ২০১৪-র টেট-এর ভিত্তিতে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তা ভুলে ভরা এবং দুর্নীতির অভিযোগ স্পষ্ট। খাদ্য দফতরের নিয়োগেও একই ছবি। আবার হেল্থ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের প্রকাশিত শিক্ষক-চিকিৎসক নিয়োগের তালিকায় এক মন্ত্রীর পরিবারের জন্য ‘বেনজির স্বজনপোষণ’ করা হয়েছে।
চিঠিতে মান্নান ও সুজনবাবু লেখেন, ‘নেতাদের ইচ্ছায় ও ঘনিষ্ঠতায় যে ভাবে মেধা তালিকাকে মূল্যহীন করার চেষ্টা চলছে, তার মধ্যে দিয়ে রাজ্যের সাধারণ কর্মপ্রার্থীদের অধিকার প্রতিদিন খর্ব হচ্ছে’।