দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কুটির শিল্পীদের অগ্রাধিকার দিতে এবার পৌষমেলায় পটচিত্র শিল্পী ও ডোকরা শিল্পীদের জন্য ৮৪টা প্লট বিনামূল্যে দেবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই প্রথম সম্পূর্ণ অনলাইন সিস্টেমে পৌষমেলার স্টল বুকিং এর উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্বভারতী। সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা জানান বিশ্বভারতী জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার। আজ ৪ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় প্লট বুকিং শুরু হয়েছে poushmela.in সাইটের মাধ্যমে।
এবার ৭ পৌষ অর্থাৎ ইংরেজির ২৪ ডিসেম্বর পৌষমেলা শুরু করছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, চলবে চার দিন। সাধারণত ২৩ ডিসেম্বর তারিখেই পৌষমেলা শুরু হয়।
পৌষমেলায় স্টল নিয়ে বহুবার অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তাই এ বছর অনলাইন বুকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সূত্রের খবর, মেলার স্টল বুকিং পুরোপুরি অনলাইন নির্ভর করতে হস্তক্ষেপ করে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। এই দায়িত্ব দেওয়া হয় আইআইটি খড়্গপুরকে। তারা বিশ্বভারতীর জন্য এটি করে দিয়েছে সম্পূর্ণ নিখরচায়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেন বিশ্বভারতীর আচার্য।
পৌষমেলা কেমন হবে, মহর্ষির শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ডিডে তার বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। এখানে কুটির শিল্পের কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা রয়েছে। গ্রামীণ লোকশিল্পীদের তৈরি শিল্পদ্রব্য বিক্রি করার ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা রয়েছে। অনলাইন বুকিংয়ের কথা শুনে অনেক শিল্পীই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন।
স্থানীয় শিল্পীরা অনলাইন বুকিংয়ের ব্যাপারে বিশ্বভারতীকে একটি স্মারক লিপি দেন। তবে মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এ বছর পৌষমেলায় ডোকরা শিল্পীদের জন্য ৬২টি ও পটচিত্র শিল্পীদের জন্য ২২টি অর্থাৎ দু’টি মিলিয়ে মোট ৮৪ টি প্লট বিনামূল্যে দেবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
এ বার মেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ১৫৪২টি স্টল থাকছে। জায়গা অনুযায়ী প্রতি বর্গফুটের ভাড়া ৫টাকা থেকে ১২০ টাকা। বিশ্বভারতীর বিভিন্ন ভবন ও পড়ুয়াদের জন্য ১৯টি প্লট সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।
মেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও দীর্ঘ দিন ধরে চলা ভাঙা মেলা তোলার জন্য এবার প্লট বুকিংয়ের সময় “সিকিউরিটি মানি” নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে কর্তৃপক্ষ। প্লটের মাপ অনুযায়ী এই টাকা ধার্য করা হয়েছে। চারদিন পরেও কেউ যদি মেলাপ্রাঙ্গন খালি করে না দেন, তা হলে সেই অর্থ ফেরত দেওয়া হবে না।
এক ব্যক্তি ভিন্ন নামে যাতে একাধিক প্লট বুক না করতে পারে, সে জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটি এ ব্যাপারে নজরদারি করবে। একটি আধার কার্ডের মাধ্যমে একটি মাত্র বুকিং করা যাবে।
পৌষমেলার দূষণ অবশ্য এখনও রুখতে পারেননি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে পরিবেশ আদালতের একটি মামলা চলছে, ১১ ডিসেম্বর পরিবেশ আদালতে যার শুনানি রয়েছে। সেদিকে ও তাকিয়ে সব মহল।
১৯২১ সাল থেকে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট এই মেলা পরিচালনার জন্য বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব দেয়, কিন্তু দূষণ নিয়ে একের পর এক মামলা হওয়ায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ গত এপ্রিল মাসে ঘোষণা করে দেয় পৌষমেলা করবে না বলে। এ নিয়ে দেশ জুড়ে হইচই শুরু হয়। আচার্যর দফতর পাশে থাকার বার্তা দেয়।
শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সাম্মানিক সম্পাদক অনিল কোঙার বলেন, বুধবার সকাল থেকে সম্পূর্ণ অনলাইনে স্টল বুকিং শুরু হয়েছে। মেলাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে শতাধিক শৌচাগার তৈরির করা হচ্ছে।