পৃথিবীর টানে ছুটে এসেছে ‘পারসেড’আলোর ফুলকি ছড়াবে,আজ রাতের আকাশে উল্কাবৃষ্টি

0
593

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ নিওওয়াইস ধূমকেতু ফিরে যাচ্ছে। পৃথিবীর নতুন অতিথি হয়ে এসেছে পারসেড।

আজ রাতের আকাশ সাজবে আলোর মালায়। উত্তর মেরুজুড়ে আলোর ফুলফুরি ঝরে পড়বে আকাশ থেকে। ফুলকি ছড়াতে ছড়াতে আকাশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ছুটে বেড়াবে পারসেড। ২০১৬ সালে শেষ দেখা গিয়েছিল। আলোর ঝর্না নিয়ে আবার ফিরে এসেছে ‘পারসেড মেটিওর সাওয়ার।’

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, আজ ১১ অগস্ট মঙ্গলবার থেকে রাতের আকাশে বৃষ্টির মতো আলো ঝরাবে উল্কাখণ্ড। ১৩ অগস্ট অবধি পৃথিবীর আকাশেই ঘোরাফেরা করতে দেখা যাবে। আগামীকাল বুধবার অধিকাংশ দেশ থেকেই দেখা যাবে ‘পারসেড মেটিওর সাওয়ার’। ভারতের আকাশ থেকেও উল্কাবৃষ্টি দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।  রাত ২ টোর পর থেকে আলোর ঝলকানি বাড়বে। সূর্যোদয়ের আগে ভোররাত অবধি আকাশ দীপাবলির মতো আলোর মালায় সেজে থাকবে। ১৩ অগস্টের পর থেকে ধীরে ধীরে ফিকে হতে থাকবে।

নাসা জানিয়েছে,  খালি চোখেই দেখা যাবে পারসেড সাওয়ার। রাত ১০টার পর থেকেই আকাশে আলোর ফুলকি ছড়িয়ে পড়বে।

উল্কা হল মহাকাশে ভেসে বেড়ানো নানারকম পাথরখণ্ড যারা পৃথিবীর অভিকর্ষজ বলের টানে ছুটে আসে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ধাক্কাধাক্কি হলে বায়ুর কণার সঙ্গে ওইসব মহাজাগতিক পাথর খণ্ডের ঘষা লেগে আগুন জ্বলে ওঠে। তাই মনে হয় আলোর ফুলকি ছড়াচ্ছে। একেই বলে উল্কাবৃষ্টি (Meteor Shower) । তবে পৃথিবীর পিঠে ঝরে পড়ার আগেই বায়ুর সঙ্গে ঘর্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে যায় উল্কা খণ্ডেরা।

এইসব মহাজাগতিক পাথর খণ্ডেরা এমনি ভেসে বেড়ায় না, হয় কোনও গ্রহ বা নক্ষত্র থেকে খসে পড়ে, না হলে ধূমকেতুর অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে মহাকাশে ভাসতে থাকে। এরাই পরবর্তীকালে উল্কা হয়ে পৃথিবীর আকাশে আলো ছড়ায়। এই পারসেড উল্কার উৎস হল ‘সুইফ্‌ট টার্টল’ ধূমকেতু। এই ধূমকেতু আবার বহুদূরের কুইপার বেল্টের বাসিন্দা। ১৩৩ বছর অন্তর একবার করে পৃথিবীর সৌরমণ্ডলে ঢুকে পড়ে। সূর্যকে পাক খেয়ে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসে। এই ধূমকেতুরই অংশ হল পারসেড।

নিওওয়াইস ধূমকেতুও ছুটে এসেছিল ব্রহ্মাণ্ডের সেই গহীন এলাকা কুইপার বেল্ট বা ওরট ক্লাউড থেকে। মহাকাশবিজ্ঞানীরা বলেন, মহাশূন্যে এক শীতলতম জায়গা আছে। এর দূরত্ব পৃথিবী থেকে প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি কিলোমিটার। সৌরমণ্ডলের বাইরে বলয়ের মতো সেই জায়গা প্রায়ে সাড়ে ৩০০ কোটি কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এখানে ধুলো আর গ্যাসের ঘনত্ব খুব কম। পাথর আর বরফের টুকরোয় ভরা। বলা হয় প্লুটো আসলে এই কুইপার বেল্টের মধ্যেই রয়েছে।

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘সুইফ্‌ট টার্টল’ ধূমকেতু থেকে খসে যাওয়া অংশগুলো সৌরমণ্ডলে ঢুকে পড়ে ১৭ জুলাই। সূর্যের চারপাশে পাক খেয়ে পৃথিবীর টানে ছুটে এসেছে। এই উল্কাখণ্ড গুলোই পারসেড। এদের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার মাইল। পৃথিবীর উপর বিছানো বায়ুমণ্ডলের চাদরে সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়ে তাপ বেড়ে গেছে।  পৃথিবীর পিঠে ঝরে পড়ার আগে বায়ুর কণার সঙ্গে সংঘর্ষে এরা জ্বলে উঠবে। আলোর ফুলকি হয়ে ছড়িয়ে পড়বে রাতের আকাশে।

Previous articleপ্রথম কোভিড ভ্যাকসিন আবিষ্কার রাশিয়ার!ঘোষণা পুতিনের
Next articleলাল-হলুদের  নতুন কো-স্পনসর নিয়ে জল্পনা অব্যহত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here